স্পেনের ফেডারেল সরকার ও সাংবিধানিক আদালতের বিরোধিতার তোয়াক্কা না করে স্বাধীনতার প্রশ্নে কাটালুনিয়া রাজ্যে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিলেও বিতর্ক শেষ হচ্ছে না৷
বিজ্ঞাপন
গত সপ্তাহে ইরাকি কুর্দিস্তানের মতো সপ্তাহান্তে স্পেনের কাটালুনিয়া রাজ্যেও স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হলো৷ মাদ্রিদের ফেডারেল সরকার এই উদ্যোগকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বল প্রয়োগ করেও গণভোট বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়েছে৷ ফেডারেল পুলিশ বাহিনীর বাধা সত্ত্বেও বিশাল সংখ্যক মানুষ এই গণভোটে অংশ নিয়েছেন৷ এমনকি রাবার বুলেটও ব্যবহার করা হয়েছে৷ কাটালুনিয়ার কর্মকর্তাদের সূত্র অনুযায়ী, প্রায় ৮৪৪ জন সাধারণ মানুষ ও ১২ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছে৷
রাজ্য সরকারের দাবি, প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার কাটালুনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিয়েছেন৷ ২২ লক্ষ ৬০ হাজার ভোটার, অর্থাৎ ৪২ শতাংশ গণভোটে অংশ নিয়েছেন৷ এ দিনের হিংসাত্মক পরিবেশ সম্পর্কে কাটালুনিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কারলেস পুজেমন এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, আশা ও কষ্টের এমন দিনে কাটালুনিয়ার নাগরিকরা প্রজাতন্ত্রের রূপে এক স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকার অর্জন করেছেন৷ তিনি আরও বলেন, তাঁর সরকার আগামী কয়েক দিনের মধ্যে গণভোটের ফলাফল কাটালুনিয়ার সংসদের কাছে পাঠিয়ে দেবে৷ জাতির সার্বভৌমত্ব সংসদে থাকায় সংসদই গণভোটের আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে৷ উল্লেখ্য, এর আগে তিনি গণভোটের রায়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছিলেন৷
মাদ্রিদে ফেডারেল সরকার শুরু থেকেই এই গণভোটের উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে৷ এমন একতরফা পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে গণভোট বা তার রায়কে স্বীকৃতি দেয় নি সরকার৷ স্পেনের সাংবিধানিক আদালতও এই গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা করেছে৷ বিশেষ করে কাটালুনিয়ার গণভোট আইনে ন্যূনতম ভোটের হারের কোনো উল্লেখ না থাকায় অনেক মহল থেকে সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ সমালোচকদের মতে, এর ফলে যারা স্পেনের ঐক্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাঁরা গণভোট বর্জন করে বঞ্চিত হবেন৷
কাটালুনিয়ার স্বাধীনতার এই একতরফা উদ্যোগ নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন অংশে চরম অস্বস্তি দেখা যাচ্ছে৷ এমন দৃষ্টান্ত বিচ্ছিন্নতাকামী গোষ্ঠীদের উৎসাহ দিতে পারে বলে কিছু দেশের সরকার আশঙ্কা করছে৷ স্কটল্যান্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বার্সোলোনায় হিংসা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেও মাদ্রিদে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাকামী নেতা নিকোলা স্টার্জেন ভোটারদের বিরুদ্ধে স্পেনের পুলিশের কড়া পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)
বার্সেলোনা: ভূ-মধ্যসাগরের অপূর্ব শহর
এই নামটা শুনে সবাই সেখানে যেতে চায়, হ্যাঁ জায়গাটা বার্সেলোনা৷ স্পেনের এই শহরটি গত তিন দশক ধরে পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র৷ বার্সেলোনায় গেলে যে ১০টি স্থানে আপনার অবশ্যই যাওয়া উচিত – সেগুলো দেখে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
সমুদ্র বন্দর
১৯৯২ সালে অলিম্পিক গেমস উপলক্ষ্যে এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল৷ এর কারণে বন্দরটি অবশ্য লাভবানই হয়েছে৷ ঐ অলিম্পিকের পর থেকে এখানকার বার, রেস্তোরাঁগুলো পর্যটকের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে৷ ১৯৯২ সালের অলিম্পিকের জন্য বিশাল আকৃতির এই ‘স্বর্ণ মৎসটির’ নকশা করেছিলেন বিখ্যাত স্থপতি ফ্রাংক গেহরি৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images/J. de Cuveland
সমুদ্র সৈকত
নাগরিক জীবন থেকে ছুটি চান বা কয়েকটা দিন সৈকতে কাটাতে চান? এ দু’টোর দারুণ সংমিশ্রণ হলো বার্সেলোনা৷ শহরে থেকেও এক পা বাড়ালেই সমুদ্র, তাই নাগরিক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য করা ভীষণ সুবিধা৷ বার্সেলোনাকে ঘিরে আছে সাতটি সমুদ্র সৈকত, যেখান থেকে আপনি ভূ-মধ্যসাগরে সূর্যস্নানের সুযোগ পাবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Jensen
রাম্বলা
শহরের অদূরে যে সমুদ্র সৈকতটি, তার থেকে খুব কাছেই বার্সেলোনার ঐতিহাসিক এই কেন্দ্রস্থলটি৷ এর আয়তন এক কিলোমিটার৷ ফুটপাতের পাশে ক্যাফেগুলো ফ্রেশ হওয়ার জন্য যেন আপনাকে হাতছানি দিতে থাকে৷ শেরি ওয়াইন, তাপাস, মানে বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাক্স’সহ নানারকম সুস্বাদু খাবার পাবেন এখানে৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
পুরোনো শহর
লা রাম্বলার উত্তরে বারি গোতিক, পুরোনো শহরের গথিক কোয়ার্টার৷ এখানকার বেশিরভাগ ঐতিহাসিক ভবন ১৪ বা ১৫ শতকে তৈরি৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
স্কয়ার
অনেক জায়গায় পুরোনো শহরের রাস্তাগুলো ছোট বা বড় স্কয়ার বা চত্বরে গিয়ে মিলেছে৷ প্লাকা রিয়াল সিটি সেন্টার রাতের পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
সাগ্রাদা ফামেলিয়া
আধুনিক বার্সেলোনার গুরুত্বপূর্ণ নজির সৃষ্টি করেছেন আন্তোনি গাউডি৷ তাঁর নকশায় বানানো সাগ্রাদা ফামেলিয়া চার্চ বার্সেলোনার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান৷ বিশ্বের বিখ্যাত ভবনগুলোর অন্যতম এটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
গাউডি-র বিশ্ব
আলো আর রঙের এমন অপূর্ব সংমিশ্রণ বিশ্বের আর কোনো চার্চের ভেতরে হয়ত দেখতে পাবেন না৷ গাউডি তাঁর স্থাপত্যে প্রকৃতি থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন৷ ছাদটা এমনভাবে নির্মিত যে, মনে হবে এর কলামগুলো গাছের মতো আকাশের দিকে মুখ করে আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Goldmann
ফুন্দাসিও জোয়ান মিরো
বার্সেলোনা এমন একটা শহর, যে শহর আপনাকে অনেক কাজে উৎসাহ দেবে৷ মন্টউইক পাহাড়ের উপর জাদুঘরটি জোয়ান মিরোর স্মরণে তৈরি৷ এই শিল্পীর কাজে কাতালান ফোক আর্টের বিষয় ও রং চোখে পড়ে৷ তাঁর তৈরি বর্নিল ভাস্কর্য এবং সেরামিকের কাজ বার্সেলোনা জুড়ে চোখে পড়বে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Read
ফন্ত মাগিকা
বার্সেলোনার সবচেয়ে রোম্যান্টিক জায়গা ফন্ত মাগিকা৷ ১৯২৯ সালে নির্মিত এই ঝর্ণাটিতে আলোর ৫০ট রকমের বর্ণচ্ছটা আপনাকে অভিভূত করবে৷ শহরের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা এটি৷
ছবি: picture-alliance/Eibner
তিবিদাবো
বার্সেলোনা দু’টো পাহাড় দিয়ে ঘেরা৷ এর একটি মন্টউইক (১৭৩ মিটার) আর অন্যটি তিবিদাবো (৫২০ মিটার)৷ তিবিদাবো থেকে আপনি শহরের বেশিরভাগ অংশটা দেখতে পাবেন৷ বার্সেলোনার একমাত্র ঐতিহাসিক ট্রামলাইন দ্য ট্রামভিয়া ব্লাও-এর সাহায্যে আপনি পাহাড়ের উপরে উঠতে পারবেন৷