1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কুয়াশা থেকে পানি

১ মার্চ ২০১৭

মরক্কোর একটি এনজিও ও জার্মান ওয়াটার ফাউন্ডেশন মিলে সাহারা মরুভূমির প্রান্তে বুৎমেজগিদা পাহাড়ের ঢালে জাল দিয়ে কুয়াশা ধরে তা থেকে পানি তৈরি করেছেন!

Umweltprojekt-Trinkwasser aus Nebel in Marokko
এই জালগুলোতেই পানি ধরা হয়ছবি: Darsihmad Assiciation

কুয়াশা ধরে যেভাবে পানি তৈরি হচ্ছে

05:21

This browser does not support the video element.

রাস্তাটা সরু আর এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানোও সহজ নয়৷ কিন্তু দার সি হমাদ এনজিও-র জামিলা বারগাশ বুৎমেজগিদা পাহাড়ে ওঠার পথ চেনেন৷ ১,২০০ মিটার উচ্চতায় দার সি হমাদ এনজিও একটি বিশেষ প্রকল্প শুরু করেছে৷

লক্ষ্য হলো: পানীয় জল সংগ্রহ করা৷ তাই এ-ধরনের জাল টাঙানো হয়েছে৷ এই জালে কুয়াশা ধরা পড়ে; জাল বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি চুঁইয়ে নীচে গিয়ে জমা হয়৷ আজ রোদ ঝকঝক করছে৷ কিন্তু প্রায়ই পুরো এলাকাটা কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে৷

এনজিও দার সি হমাদ-এর জামিলা বারগাশ বললেন, ‘‘কুয়াশা আসে এদিক থেকে৷ দেখা যায়, কীভাবে তা ক্রমেই আরো ওপরে উঠছে৷ অথচ কোথায় পা ফেলছি, তা দেখা যায় না...৷’’

দক্ষিণ-পশ্চিম মরক্কোর এই এলাকাটি সাহারা মরুভূমির প্রান্তে৷ এখানে কখনো-সখনো বৃষ্টি হয়, তাও অত্যন্ত কম৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রায়ই খরা হয়৷ পানি আনার জন্য মানুষজনকে কখনো-সখনো দু’তিন ঘণ্টা হাঁটতে হয়৷ এখানকার মানুষ চাষবাস করে বাঁচেন৷ কৃষি আর পশুপালন, দু'টি কাজের জন্যেই লাগে পানি৷ কুয়াশা ধরার প্রকল্প পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে পারে৷

কুয়াশা ধরার জাল

তিন বছর আগে দার সি হমাদ এনজিও জার্মান ওয়াটার ফাউন্ডেশন বা পানি নিধির সঙ্গে ‘ফগ নেট প্রোজেক্ট’, অর্থাৎ কুয়াশা ধরার জাল প্রকল্প শুরু করে৷ ইনডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার পেটার ট্রাউটভাইন সেজন্য নানা ধরনের ফাইবার পরীক্ষা করেছেন৷ জাল বাতাসে ছিঁড়ে গেলে চলবে না, তা-তে পর্যাপ্ত পানি ধরা চাই, এছাড়া জালগুলো টাঙানো সহজ হওয়া চাই৷

জার্মান ওয়াটার ফাউন্ডেশন-এর পেটার ট্রাউটভাইন বললেন, ‘‘একটা রাবারের এক্সপ্যান্ডার নিয়ে, সেটাকে তলায় এখানে আটকে, একটু টেনে ওপরে লাগিয়ে খানিকটা অ্যাডজাস্ট করে নিতে হয়৷ এবার পুরো কাঠামোটাই শক্ত৷ পরিষ্কার দেখা যায়, জালটা বাতাসে কীভাবে নড়তে-চড়তে পারবে৷’’

নতুন কুয়াশা ধরার জালগুলো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে ভালোই কাজ করেছে৷ আগামী বছর বুৎমেজগিদা পাহাড়ের চারপাশে ৩১টি ফগ নেটের একটি বড় গ্রিড বসানো হবে৷ 

জামিলা বারগাশ ও তাঁর এনজিও-র প্রকল্পটি মারাকেশের জলবায়ু সম্মেলনে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে৷ বারগাশ বললেন, ‘‘আমি পরিবেশকে একটি জীবন্ত সত্তা হিসেবে দেখতে ভালোবাসি, শুধু আবর্জনা কিংবা আবর্জনা ফেলার জায়গা বা আমাদের নিজেদের প্রগতির জন্য সম্পদ আহরণের স্থান হিসেবে নয়৷ সেই প্রগতি নিজেই আজ সংকটে, যা আমরা প্রতিদিন জলবায়ু পরিবর্তনের ধরন থেকে দেখতে পাই৷’’

প্রকল্পে পাহাড় থেকে গ্রামের বাড়িগুলো অবধি জলের পাইপ বসানোর ব্যবস্থা হয়েছে, যা সুসানে পরিবারের কাজে লাগছে৷ এক বছর হলো কল খুললেই জল পড়ে৷

কুয়াশার ‘ফসল’

অথচ পরের দিনই আবার....কুয়াশা! শুধু গাছপালাতেই নয়....পানির ফোঁটা পাহাড়ের ওপর ফ্রেমে বাঁধা জালগুলোতেও লেগে থাকে৷ প্রতি বর্গমিটার জাল থেকে ২২ লিটার পানি৷ খুব খারাপ ‘ফসল’ নয়৷ নতুন গ্রিড থেকে কুয়াশার দিনে গ্রামের মানুষরা ৩৭,০০০ লিটার পানি পাবেন৷

মোহামেদ হামুয়ালির কাছে তার অর্থ: এখনও অনেকদিন কাজ পাওয়া যাবে৷ তিনি প্রথম পরীক্ষামূলক জালগুলো বসানোতেও সাহায্য করেছিলেন৷ কুয়াশার যে একটা ভালো দিক আছে, গ্রামবাসীদের সেটা বোঝাতে গোড়ায় তাঁকে বেগ পেতে হয়েছিল৷ সকলেরই সন্দেহ ছিল৷ মোহামেদ হামুয়ালি বললেন, ‘‘গোড়ায় আমি ভেবেছি, ও-তে কাজ হবে না৷ ভেবেছি, কুয়াশা থেকে পানি তৈরি করা কি সত্যিই সম্ভব? জন্মে কোনোদিন শুনিনি, কল্পনা পর্যন্ত করতে পারিনি৷’’

মোহামেদ জলকষ্টেই বড় হয়েছেন৷ অথচ তাঁর ভাইবোনেদের জন্যে কল থেকে জল পড়াটাই স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াবে৷ কুয়াশাও আসবে আবার – তবে এবার হয়ত বুৎমেজগিদা পাহাড়ের অধিবাসীরা কুয়াশা দেখে শুধু ভয় পাবেন না, কিছুটা আনন্দও পাবেন৷

মাবেল গুন্ডলাখ/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ