২০২২ সালে বেজিংয়ে উইন্টার অলিম্পিকে অ্যামেরিকার কোনো কূটনীতিক যাবেন না বলে জানিয়ে দিলেন জো বাইডেন।
বিজ্ঞাপন
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরো খারাপ হলো অ্যামেরিকার। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়ে দিলেন, বেজিংয়ে আয়োজিত উইন্টার অলিম্পিকে অ্যামেরিকার কোনো কূটনীতিক বা কর্মকর্তা যাবেন না। তবে খেলোয়াড়রা যাবেন।
মেক্সিকোর রাষ্ট্রপ্রধান এবং ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন বৈঠক করেছেন বাইডেন। তার আগেই চীন বিষয়ে কথা বলার সময় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
সম্প্রতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে বাইডেনের। চীনের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গেও মার্কিন কর্মকর্তাদের লম্বা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সেখানে বেজিং অলিম্পিক নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চীনে যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে, তার জেরেই অ্যামেরিকা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বস্তুত, এর আগে শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর চীন অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিল অ্যামেরিকা। বিষয়টিকে গণহত্যার সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছিল। যা নিয়ে কড়া জবাব দিয়েছিল চীন। বাইডেন না বললেও হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সে বিষয়টিকেই ফের সামনে নিয়ে এসেছেন।
তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, খেলোয়াড়দের বেজিং অলিম্পিকে যোগ দিতে কোনো বাধা থাকবে না। কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা বা কূটনীতিক যাবেন না।
সম্প্রতি হংকং এবং তাইওয়ান নিয়েও চীনের সঙ্গে বিতর্ক হয়েছে অ্যামেরিকার। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্ষমতাবৃদ্ধি নিয়েও মন্তব্য করেছেন বাইডেন। তবে উইন্টার অলিম্পিক নিয়ে তার সিদ্ধান্ত দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে বিপুল প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।