ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী। সমালোচনা ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রণালয়ের।
বিজ্ঞাপন
ভারতের কৃষক বিক্ষোভ আর কেবল দেশের ভিতর সীমাবদ্ধ রইল না। ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও মন্তব্য করলেন ভারতের কৃষকদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে। কড়া প্রত্যুত্তর দিয়েছে ভারত। বলা হয়েছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার অধিকার নেই ট্রুডোর।
গত দুই মাস ধরেই সলতে পাকানো চলছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি নতুন তিনটি কৃষক আইন এবং সংশোধনীর বিরুদ্ধে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকদের বড় অংশ আন্দোলন করছিলেন। গত এক সপ্তাহে তা অন্য মাত্রা পেয়েছে। ট্রলি-ট্রাক্র নিয়ে হাজার হাজার কৃষক দিল্লি কার্যত ঘিরে ফেলেছেন। পাঞ্জাব থেকে দিল্লির সীমান্তে আসার পথে তাঁদের পার হতে হয়েছে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা। সেখানে কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কৃষকরা যত এগিয়েছেন, ততই তাঁদের উপর লাঠিচার্জ বেড়েছে। চালানো হচ্ছে কাঁদানে গ্যাস। রাতের অন্ধকারে ক্লান্ত কৃষকদের উপর জলকামান চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আকর্ষণীয় কয়েকজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান
শুধু সৌন্দর্য্য নয়, আচরণ এবং ব্যক্তিত্বও মানুষের চেহারায় ফুটিয়ে তোলে আকর্ষণের ছাপ৷ নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান জায়গা করে নিচ্ছেন বিশ্ববাসীর মনে৷ এমন কয়েকজনকে নিয়েই আজকের ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
কোলিন্ডা গ্রাবার-কিটারোভিচ
বিশ্বকাপ ফুটবলে গ্যালারিতে সবার নজর কেড়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার সুন্দরী প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা গ্রাবার-কিটারোভিচ৷ ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তবে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্য৷ প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে কাজ করেছেন ইউরোপ বিষয়কমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে৷ ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে ক্রোয়েশিয়ার দূত ছিলেন কোলিন্ডা৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
ভ্লাদিমির পুটিন
১৯ বছর ধরে কখনও সরকারপ্রধান, কখনও রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক এই রুশ গোয়েন্দা৷ ১৯৯৯ থেকে ২০০০ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী, ২০০০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি, ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আবার প্রধানমন্ত্রী, এবং এরপর থেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পুটিন৷ ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর বিশ্ব রাজনীতিতে রাশিয়া যে অবস্থান খুইয়েছিল, তার অনেকটাই পুনরুদ্ধার করেছেন পুটিন৷
ছবি: Reuters/G. Dukor
এমানুয়েল মাক্রোঁ
ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ৷ ২০১৭ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি৷ তরুণ রাজনীতিবিদ হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা প্রশংসা পেয়েছে বিশ্বনেতাদের কাছে৷ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের খেলা চলাকালীন সময়ে ভিআইপি গ্যালারিতে মাক্রোঁ’র উত্তেজনা নজর কেড়েছে অনেকের৷
ছবি: Reuters/C. Platiau
জাস্টিন ট্রুডো
৪৪ বছর বয়সে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে সাড়া ফেলেছিলেন ট্রুডো৷ সুদর্শন এই তরুণের মন্ত্রিসভাকে বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় মন্ত্রিসভা হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়৷ তাঁর মন্ত্রিসভায় আদিবাসী ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের ক্যানাডিয়ান পেয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব৷ এছাড়াও বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর প্রগতিশীল চিন্তাভাবনাও তাঁকে তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় করে তুলেছে৷
ছবি: picture-alliance/empics/A. Wyld
বরুট পাহো
২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর ২০১২ থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট পাহো৷ অনেকটা আনুষ্ঠানিক পদ হলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাহো বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখার চেষ্টা করে চলেছেন৷ ইউক্রেন সংকট নিরসন এবং ট্রাম্প-পুটিন বৈঠকে তাঁর আন্তরিক চেষ্টা ইউরোপের রাজনীতিতে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল৷
ছবি: Reuters/S. Zivulovic
এনরিকে পেনিয়া নিয়েটো
২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন সুদর্শন এই মেক্সিকান৷ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙা, জ্বালানি খাত আধুনিকায়ন, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থার অর্থায়নসহ নানা উদ্যোগে মেক্সিকোর তরুণদের মধ্যে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress
6 ছবি1 | 6
কৃষকদের সঙ্গে প্রথমে হরিয়ানা এবং পরে দিল্লি পুলিশ যে আচরণ করেছে, তার প্রতিবাদ হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এ বার প্রতিবাদ হলো সুদূর ক্যানাডা থেকে। উল্লেখ্য, ক্যানাডায় বিপুল পরিমাণ পাঞ্জাবি থাকেন। ক্যানাডার রাজনীতিতেও পাঞ্জাবিদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ রয়েছে। ফলে পাঞ্জাবের বিষয় সে দেশের সমাজ-রাজনীতিতে আলোচনার বিষয়। গত ৩০ নভেম্বর শিখ ধর্মগুরু গুরু নানকের জন্মতিথি ছিল। ক্যানাডার সংসদেও সে বিষয়ে আলোচনা হয়। গুরু নানককে সম্মান জানাতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ভারতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, ভারতের পুলিশ কৃষকদের সঙ্গে যে ব্যবহার করছে, তা অন্যায়। যে কোনো গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলনের অধিকার রয়েছে। তা খর্ব করা উচিত নয়। শুধু ট্রুডো নন, কনজারভেটিভ দলের নেতারাও একই কথা বলেছেন।
ট্রুডোই প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যক্তি, যিনি ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন। ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের এক দিন পরে জবাব দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বিবৃতি দিয়ে জানান, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলার অধিকার কারো নেই। ট্রুডো যে মন্তব্য করেছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ভারত একটি গণতান্ত্রিক সার্বভৌম দেশ। এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার কারো নেই।