মিউনিখের এস-বান বা কমিউটার ট্রেন থেকে এক টিকিটবিহীন কৃষ্ণাঙ্গ যাত্রীকে জোর করে নামিয়ে দেওয়ার দৃশ্য ধারণ করেন সাংবাদিকা নাটালিয়া মিলেটিচ৷ ভিডিওটি ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি৷
বিজ্ঞাপন
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দু'জন রেলকর্মী কিভাবে একজন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষকে টেনে-হিঁচড়ে ট্রেন থেকে নামাচ্ছেন৷ দৃশ্যত সংশ্লিষ্ট যাত্রীর কোনো টিকিট ছিল না৷ কৃষ্ণাঙ্গ সেই যাত্রী সর্বশক্তি প্রয়োগ করে, ট্রেনের রড আঁকড়ে ধরে কামরার ভিতরে থাকার চেষ্টা করছেন; রেলকর্মীদের একজন রড থেকে তাঁর আঙুল খুলে দিচ্ছেন৷ শেষমেশ দুই রেলকর্মী মিলে কৃষ্ণাঙ্গ যাত্রীটিকে প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে, তাঁকে মাটির উপর চেপে ধরেছেন৷
সাংবাদিকা নাটালিয়া মিলেটিচ গোড়া থেকে টিকিট চেকারদের জোর-জবরদস্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন৷ তিনি ইংরেজিতে একাধিকবার বলেছেন, ‘‘আপনারা যা করছেন, তা ঠিক নয়৷ আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ৷ আপনারা যা করছেন, তা জাতিবাদ৷ উনি শুধু কৃষ্ণাঙ্গ বলেই আপনারা এমন করছেন৷’’
সম্ভবত তৃতীয় কোনো রেলকর্মী নাটালিয়াকে তাঁর মোবাইল দিয়ে ভিডিও তোলা বন্ধ করতে বলছেন৷ নাটালিয়া জবাব দিচ্ছেন, তিনি সাংবাদিক এবং তাঁর যে কী অধিকার আছে বা নেই, তা তিনি ভালো করে জানেন৷ এবার জার্মানেই কথা বলছেন নাটালিয়া৷
ক্যোলনার স্টাট-আনৎসাইগার পত্রিকা তাদের ওয়েবসাইটে এই ভিডিও প্রকাশ করার সময় উল্লেখ করেছে যে, ‘ডয়চে বান’ বা জার্মান রেলওয়ের হোমপেজে লেখা আছে, ‘‘জার্মান রেলওয়ের কর্মীদের পুলিশি কার্যকলাপের অধিকার নেই; রেলকর্মীদের শুধু তা করার অধিকার আছে, যা সাধারণ নাগরিকরাও করতে পারেন – অর্থাৎ পুলিশ আসা পর্যন্ত অপরাধীকে শুধু তাঁরা ধরে রাখতে পারেন৷’’
মিউনিখ এস-বানের ঘটনা এর আওতায় পড়বে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে৷
এসি/এসিবি
বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন
চলুন জেনে নেয়া যাক নতুন এবং পুরোনো সব ঝোড়োগতির ট্রেনের কথা৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ভাসমান রাজা’
জাপানের সেন্ট্রাল রেলের ‘ম্যাগলেভ ট্রেন’ নতুন রেকর্ড গড়ে বিশ্বের দ্রুততম হবার গৌরব অর্জন করেছে৷ জাপানের এই ট্রেনই প্রথম ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার, অর্থাৎ ৩৭৩ মাইল বেগে ছুটে দেখালো৷ ম্যাগলেভ নামটা এসেছে ‘ম্যাগনেটিক’ শব্দের ‘ম্যাগ’ এবং ‘লেভিটেশন’ শব্দের ‘লেভ’ নিয়ে৷ ম্যাগনেটিক লেভিটেশনের জাদুতেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সামলে রেল লাইনের ওপরে অনেকটা ভেসে চলে ম্যাগলেভ ট্রেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ট্রেন নয়, যেন প্লেনে চড়েছি’
জাপানের ম্যাগলেভ ট্রেনটি এখনো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে৷ টেস্ট সেন্টারের প্রধান ইয়াসুকাজু এন্ডো জানালেন, এ পর্যন্ত হাতে গোনা যে ক’জন ট্রেনটিতে চড়ার সুযোগ পেয়েছেন তাঁদের সবাই ফিরেছেন মুগ্ধ হয়ে৷ তাঁর ধারণা প্রশ্ন করলে সবাই বলতেন, ‘‘কী গতি! মনে হলো ট্রেনে নয় যেন প্লেনে চড়েছি৷’’ জাপানের এই ট্রেন সাধারণ জনগণের জন্য পুরোদমে চলতে শুরু করবে ২০২৭ সালে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এখনো সেরা.....
৬০০ কিলোমিটার বেগে চালালেও পুরোদমে যখন যাত্রীসেবায় নামবে তখন ৫০০ কিলোমিটার বেগে চলবে জাপানের ম্যাগলেভ৷ তার আগ পর্যন্ত হয়তো যাত্রীসেবায় নিয়োজিত ট্রেনগুলোর মধ্যে দ্রুততম থাকবে চীনের শাংহাই শহরে জার্মান প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তোলা ট্রেন ট্রান্সরাপিড৷ শাংহাই কেন্দ্রীয় রেল স্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৪৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটে যায় ট্রেনটি, সাড়ে ৩০ কিলোমিটার দূরত্ব যেতে লাগে মাত্র ৮ মিনিট!
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রান্সের গর্ব
জাপান আর চীনের ট্রেন দুটো আসলে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযু্ক্তির উজ্জ্বলতম নিদর্শন৷ এই দুটোর বাইরে প্রথাগত চাকার ট্রেনগুলির মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ফ্রান্সের ‘ত্র্যাঁন-আ-গ্রঁ-ভিতেস’ (টিজিভি)৷ ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫৭৪ কিলোমিটার৷ তবে ব্যয় কম রাখতে টিজিভির গতিবেগ ৩২০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়৷
ছবি: Sebastien Bozon/AFP/Getty Images
বেইজিং থেকে শাংহাইয়ের পথে গতির ঝড়
হারমোনি সিআরএইচ ৩৮০এ পুরোপুরি বিদ্যুৎ চালিত৷ ২০১০ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখার সময় এটি ঘণ্টায় ৪৮৬ কিলোমিটার বেগে ছুটেছিল৷ তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বেইজিং-শাংহাই রুটে ৩৮০ কিলোমিটার বেগে চলে ট্রেনটি৷
ছবি: imago/UPI Photo
জার্মানিও আছে...
হাই-স্পিড ট্রেনের জগতে সেই ১৯৮৮ সালে সাড়া জাগিয়েছিল জার্মানি৷ সেবার আইসিই ট্রেন হ্যানোফার থেকে ভ্যুরৎসবুর্গের পথে ৪০৬ দশমিক ৯ কিলোমিটার গতি তুলে তাক লাগিয়েছিল৷ পরে ব্যয় কমানোর জন্য অবশ্য সর্বোচ্চ গতি ২৫০ কিলোমিটারে বেঁধে দেয়া হয়৷