কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারি সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র অভিযোগ, সত্যেন্দ্র জৈন কলকাতার একটি সংস্থার মাধ্যমে হাওয়ালার টাকা পাচার করেছেন। ২০১৫-১৬ সালে সত্যেন্দ্র জৈন এই কাণ্ড করেছিলেন বলে ইডি জানিয়েছে।
২০১৭ সালের অগাস্টে সিবিআই সত্যেন্দ্র ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থ নয়ছয় করার অভিযোগে মামলা দায়ের করে। তাদের অভিযোগ ছিল, সত্যেন্দ্র ও তার পরিবারের চারটি শেল কোম্পানি ছিল। কোম্পানিগুলির কোনো ব্যবসা ছিল না। তা সত্ত্বেও তারা কোটি কোটি টাকা শেল কোম্পানির মাধ্যমে নয়ছয় করেছে। এরপর ইডি তদন্ত শুরু করে।
কিছুদিন আগেই পাঞ্জাবে এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেসময় অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মান এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু দিল্লির ক্ষেত্রে ইডি সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেপ্তার করার পরেও তিনি মন্ত্রী থেকে গেছেন। কেজরিওয়াল তাকে সরাননি। বিজেপি ও কংগ্রেস অবিলম্বে সত্যেন্দ্র জৈনের অপসারণ দাবি করেছে।
আপ নেতা ও দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া অভিযোগ করেছেন, সত্যেন্দ্র জৈন হিমাচল প্রদেশে আপের দায়িত্বে ছিলেন। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। গত আট বছর ধরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ইডি বারবার তাকে ডেকেছে। মাঝখানে ইডি তাকে ডাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ, তারা তদন্ত করে কিছুই পায়নি। কিন্তু হিমাচলের দায়িত্ব পাওয়ার পর আবার তারা সত্যেন্দ্রর পিছনে লেগেছে।
সিসোদিয়ার দাবি, বিজেপি হিমাচলে খুব খারাপভাবে হারবে। তাই সত্যেন্দ্র যাতে হিমাচলে যেতে না পারেন, সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি মুক্তি পাবেন বলে সিসোদিয়ার দাবি।
লম্বা রেসের ঘোড়া কেজরিওয়াল
খড়গপুর আইআইটি-র ছাত্র অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক দৌড় পুরোপুরি স্বপ্নের মতোই।
ছবি: DW/S. Kumar
বিজেপি এবং কেজরি
গোটা দেশ জুড়ে যখন বিজেপির গাড়ি পাঁচ নম্বর গিয়ারে চলছে, তখন নরমে-গরমে বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন কেজরিওয়াল। পাঞ্জাব আরো একবার তা প্রমাণ করে দিল।
ছবি: Narinder Nanu/AFP/Getty Images
পাঞ্জাবে কেজরি
২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবে বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে কেজরিওয়ালের দল। বাকি সমস্ত রাজ্যে যখন বিজেপি কার্যত বুলডোজার চালিয়েছে, পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির জয় নিঃসন্দেহে অর্থবহ।
ছবি: DW/S. Kumar
রাজনৈতিক অঙ্ক
কংগ্রেস এবং বিজেপি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাই কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক অঙ্ক। যে কারণে বিরোধী শক্তিগুলিকে নিয়ে তৈরি বিজেপি-বিরোধী জোটেও সেভাবে যোগ দিতে চাননি কেজরিওয়াল। নিজের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ধরে রাখতে চেয়েছেন।
ছবি: DW/S. Kumar
দিল্লি থেকে উত্থান
দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। সেখানে বিধানসভা থাকলেও রাজ্য সরকারের হাতে তত বেশি ক্ষমতা নেই। এই প্রথম পূর্ণ রাজ্যে শাসন করবে আপ।
ছবি: DW/S. Kumar
উন্নয়নই ভরসা
গোটা দেশ যখন ধর্মীয় মেরুকরণের অঙ্কে চলছে, কেজরিওয়াল তখন উন্নয়নকেই হাতিয়ার করে লড়াইয়ে নেমেছেন। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য তার প্রথম লক্ষ্য। দিল্লিতে সেই মডেল তিনি তৈরি করতে পেরেছেন। পাঞ্জাবে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার।
ছবি: Getty Images/AFP/N. Nau
'পানি মাফ, বিজলি হাফ'
দিল্লিতে কেজরিওয়ালের স্লোগান ছিল 'পানি মাফ, বিজলি হাফ', অর্থাৎ, জল ব্যবহারের জন্য কোনো পয়সা লাগবে না, বিদ্যুতের বিল অর্ধেক করা হবে। কম নবিদ্যুৎ ব্যবহার করলে কোনো পয়সাই দিতে হবে না। তার সেই প্রতিশ্রুতি রূপায়ণ করেছেন কেজরিওয়াল।
ছবি: Reuters/A. Fadnavis
অন্য রাজ্যে নজর
কেজরিওয়ালের দল গোয়াতেও দুইটি আসনে জিতেছে। কেজরিওয়ালের লক্ষ্য এবার অন্য রাজ্যেও আপকে ছড়িয়ে দেয়া। কংগ্রেস ক্রমশ হীনবল হচ্ছে। সেই জায়গাটা দখল করা। ফলে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাটের মতো রাজ্যগুলিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন কেজরিওয়াল।
ছবি: Reuters/A. Fadnavis
রাস্তা সহজ নয়
জাতীয় রাজনীতিতে কেজরিওয়াল কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপি এবং কংগ্রেসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই কেজরিওয়ালের এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।