ছিল বেড়াল, হয়ে গেল রুমাল৷ তেমনই ফেলে দেয়া চুল থেকে ক্যানভ্যাসে ছবি৷ বব-মাশরুম, স্টেপস কিংবা লেয়ারস-নানা কায়দায় কেটে ফেলার পর ফেলে দেয়া চুল থেকে শিল্পকর্ম বানিয়ে ফেললেন ফিলিপাইন্সের এক সেলুনের মালিক৷
বিজ্ঞাপন
ফিলিপাইন্সের সান খুয়ান শহরের একটি সেলুনের মালিক জেস্টনি গার্সিয়া৷ চুল কাটার জন্য যখনই কারো মাথায় ক্লিপার লাগান, তখনই নতুন কোনো শিল্পের ভাবনা তার মাথায় চলে আসে৷ একটা পাতলা তুলি এবং আঁঠার সাহায্যে সেলুনের মেঝেতে পড়ে থাকা চুল দিয়ে সাদা-কালো ক্যানভ্যাসে তিনি ফুটিয়ে তোলেন ছবি৷ দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে প্রিয় কোনো সংগীত শিল্পী অথবা অভিনেতার প্রতিকৃতি ফুটে ওঠে তার ক্যানভাসে৷
বছর বত্রিশের এই ব্যক্তি বছরের আট মাস নাবিক হিসেবে কাজ করেন৷ ভেসে বেড়ান জাহাজে, তাই প্রয়োজনমতো তুলি কিংবা রং পান না৷ তাতে কী? শিল্পের ইচ্ছাটাই তো আসল৷ কেটে ফেলে দেয়া চুল দিয়ে দিব্যি ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন ছবি৷ প্রথমে আয়না দেখে নিজেকেই আঁকতে শুরু করেছিলেন৷ পরে তারকাদের ছবি আঁকা শুরু করেন তিনি৷
নিজের সেলুনের থেকে সমুদ্রেই বেশি সময় কাটাতে হয় তাকে৷ তাই নিজের চুল কিংবা দাড়িই বেশি ব্যবহার করেন ছবি আঁকার জন্য৷ অনেক সময় মাথার পাশ থেকে অতিরিক্ত চুলও কেটে ফেলেন তিনি কিংবা হয়তো জুলপির অংশ৷ ছবি যে তাকে আঁকতেই হবে৷
তিনি বলেন, ‘‘আমার জন্য হতাশা থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় শিল্প৷’’ এই শিল্পের কিন্তু কদরও রয়েছে৷ তার আঁকা ছবি কিন্তু বিক্রিও হয়৷ এই জন্যই হয়ত বলে, জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা৷
আরকেসি/এসিবি (রয়টার্স)
তারা মাথায় ‘আঁকেন’ ছবি
দুই ভাই মাথায় ছবি ‘আঁকায়’ দক্ষ হতে রাত জেগে জেগে কাজ করতেন৷ এভাবে প্র্যাকটিস করায় দক্ষ হয়ে শহর-গ্রামে নাম ছড়িয়ে দিতে সময় লাগেনি৷ এখন মাথায় ছবি ‘আঁকার’ দক্ষতাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত তারা৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Sunil Kataria/REUTERS
দুই ভাইয়ের সেলুন
ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের ছোট্ট শহর দাবওয়ালির সেলুনটা ভালো চলছিল না৷ সেলুনের মালিক রাজিন্দর সিং সিধু আর গুরবিন্দর সিং সিধু ব্যতিক্রমী কিছু করে সফল হওয়ার কথা ভাবছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Das
মাথায় ট্যাটু!
কিন্তু দুই ভাই চুল কাটা ছাড়া অন্য কোনো কাজ তো জানেন না, ব্যতিক্রমী কিছু করবেন কী করে ! শেষ পর্যন্ত তাই মাথায় এলো অন্যের মাথায় ছবি আঁকার ভাবনা৷ বিশ্বের সব জনপ্রিয় মানুষ কিংবা দর্শনীয় স্থান, এমনকি প্রাণীর ছবি যদি মানুষের মাথায় এঁকে দেয়া যায়- তাহলে নিশ্চয়ই প্রচুর মানুষ আসবেন তাদের সেলুনে?
ছবি: Sunil Kataria/REUTERS
বুদ্ধির জয়
দুই ভাই ভাবলেন, মাথায় দীর্ঘস্থায়ী ছবি আঁকা ঠিক হবে না৷ প্রথমত, ট্যাটুর মতো কিছু হলে একবার কাজ করিয়ে কেউ আর কোনো দিন আসবে না৷ তাছাড়া অনেক ক্রেতা তো কিছুদিন পরপর নতুন ছবিও চাইতে পারেন, ট্যাটু হলে তো তা সম্ভব নয়! তাই কাঁচি, পেন্সিল আর ট্রিমার নিয়ে কাজে নেমে পড়লেন দুই ভাই৷ একসময় দেখলেন মাথায় বিভিন্ন ব্যক্তি, স্থান বা প্রাণীর ছবি ফুটিয়ে তোলা অসম্ভব কোনো ব্যাপার না৷
ছবি: Sunil Kataria/REUTERS
রাত জেগে প্র্যাকটিস
প্রথমে বেশ কিছুদিন রাত জেগে বহু মানুষের মাথায় এমন ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন তারা৷ কাজ ভালো না হলে তো কারো কাছে টাকা চাওয়া যায় না৷ তাই একটা সময় পর্যন্ত নানা জনের মাথায় বিনে পয়সায় বিশ্বসেরা তারকাদের চেহারা ভাসিয়ে তুলেছেন তারা৷ সারা দিন অন্ন সংস্থানের জন্য টাকার বিনিময়ে চুল কাটা আর রাতে বিনে পয়সায় মাথায় ছবি আঁকায় হাত পাকানো- ভীষণ কষ্টের ছিল সেই দিনগুলো৷
ছবি: REUTERS
দেশের বাইরে সেলুন খোলার স্বপ্ন
দাবওয়ালিতে এখন তাদের রমরমা ব্যবসা৷ বলিউড; হলিউডের যে কোনো তারকা, এমনকি তাজমহল থেকে শুরু করে বিশ্বের যে কোনো বিখ্যাত স্থান বা যে কোনো প্রাণীর ছবিও মাথায় এঁকে দিতে পারেন তারা৷ প্রতিটি ছবির জন্য দিতে হয় ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকা৷ ভারতের বিভিন্ন শহরের মানুষ মনমতো ছবি আঁকাতে যান তাদের কাছে৷ এখন তাই দেশের বাইরেও সেলুন খোলার কথা ভাবছেন রাজিন্দর সিং সিধু আর গুরবিন্দর সিং সিধু৷