গাড়িটি কেনার কথা বলে মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি৷ সাক্ষাতের পর প্রায় ১৯ কোটি টাকা মূল্যের ফেরারি গাড়িটি চালাতে চাইলেন৷ আর পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর নাম করে দুর্লভ গাড়িটি নিয়ে চম্পটই দিলেন ওই ব্যক্তি৷
বিজ্ঞাপন
অভিনব এমন চুরির ঘটনা ঘটেছে জার্মানির ডুসেলডর্ফ শহরে৷ কোনো ধরনের চিহ্ন রেখে না যাওয়া ওই চোরকে এখন হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ৷
১৯৮৫ সালের মডেলের দুর্লভ ওই ফেরারি গাড়িটি এক সময় ব্রিটিশ রেস ড্রাইভার এডি ইরভিনের মালিকানায় ছিল৷ গাড়িটির বর্তমান মূল্য ২ মিলিয়ন ইউরো, অর্থাৎ প্রায় ১৯ কোটি টাকা৷
বিজ্ঞাপন দেখে ওই গাড়িটি কেনার ‘আগ্রহ' প্রকাশ করে সেই ব্যক্তি৷ এরপর মালিকের সঙ্গে দেখার করে পরীক্ষামূলকভাবে চালাতে চান তিনি৷
গাড়ি পরখ করে তিনি যখন চালকের আসন ঠিক করছিলেন, তখন বাইরেই দাঁড়ানো ছিলেন মালিক৷ এক পর্যায়ে হুট করে গাড়ি চালিয়ে উধাও হয়ে যায় সেই লোক৷ হতভম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না গাড়ির মালিকের৷
জার্মান পুরুষদের কেন চকচকে গাড়ি পছন্দ ?
লম্বা শীতের পর বসন্তের শুরুতেই জার্মানদের মধ্যে বাড়িঘর পরিষ্কার করার ধুম পড়ে যায়৷ তবে পুরুষদের আগ্রহ কিন্তু গাড়ি পরিষ্কারের দিকেই বেশি৷ কেন জানেন?
ছবি: DW
পুরুষদের পছন্দ
ফ্রুইয়ারসপুট্স বা বসন্তকালীন ধোয়া-মোছা? অবশ্যই, তবে তা কেবল গাড়ির ক্ষেত্রে৷ প্রতি তিনজনের একজন জার্মান পুরুষ বাড়িঘর পরিষ্কার করার চেয়ে নিজের গাড়ি ধু’তেই বেশি ভালোবাসেন৷
ছবি: Autowäsche Kalender
নারীদের আগ্রহ কম
প্রতি দুইজনের একজন জার্মান পুরুষ মাসে অন্তত একবার নিজের গাড়িটি ধুয়েমুছে তকতকে করে রাখেন৷ আর নারীদের বছরে মাত্র চারবার গাড়ি পরিস্কার করতে দেখা যায়৷ এক সমীক্ষায় এই তথ্য জানা যায়৷
প্রতি পাঁচজনের একজন জার্মান পুরুষ ‘কারওয়াশ’ -এ গিয়ে গাড়ি পরিস্কার করেন৷ আর সেসময় নাকি তাঁরা ‘রিল্যাক্সড’ বোধ করেন৷ অথচ বাসার কাজ, অর্থাৎ ঘরের ধুলোবালি পরিষ্কার কিংবা আবর্জনা বাইরে ফেলতে কিন্তু তাঁদের অনেক কষ্ট হয় বা আপত্তি থাকে.. ৷
ছবি: Fotolia/Halfpoint
গাড়ি স্ট্যাটাসের প্রতীক
পুরুষদের কাছে গাড়ি স্ট্যাটাসের প্রতীক৷ চকচকে একটি গাড়ি স্বীকৃতি এনে দেয় বলে বেশিরভাগ পুরুষ মনে করেন৷ এ কথা জানায়, মনোবিজ্ঞানী স্ভেনিয়া ল্যুটগে৷ আর তাই তাঁরা গাড়িকে বেশি যত্ন করেন এবং অন্যদের তা দেখাতে পছন্দ করেন৷ বাড়ি তো আর হিংসুটে সহকর্মী বা উৎসুক প্রতিবেশীদের দেখানো যায় না!
ছবি: Animals Lebanon/Maglebanon
নারীরা যদি অন্যরকম চায়?
জার্মান পুরুষরা গাড়ির যত্ন বেশি করে, ভালো কথা, কিন্তু নারীরা চায় পুরুষরাও ঘরের কাজে সাহায্য করুক৷ সেক্ষেত্রে কাজ ভাগ করে নেওয়াই ভালো৷ তাছাড়া সকলকেই সব কাজের সমান মূল্য দিতে হবে৷
ছবি: Imago/O. Döring
5 ছবি1 | 5
এখন পর্যন্ত গাড়ি কিংবা চোরের কোনো হদিস পায়নি পুলিশ৷ কারণ, গাড়ি নিয়ে পালানোর সময় কোনো চিহ্ন পর্যন্ত রেখে যায়নি ওই ব্যক্তি৷ শুধু প্রথম সাক্ষাতে মালিকের সঙ্গে তোলা তার একটি ছবি নিয়েই চলছে সন্ধান৷
‘ফেরারি ৩০৮ জিটিএস' মডেলের গাড়িটি দেখতে আশির দশকের টিভি ধারাবাহিক ম্যাগনাম পিআই-এ প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর থমাস ম্যাগনামের ব্যবহৃত গাড়ির মতো৷ এছাড়া অন্য কয়েকটি টিভি সিরিজেও সেরকম গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে৷
এমবি/এসিবি (এপি, ডিপিএ)
পুরনো মার্কিন গাড়ি তো চেনেন, পুরনো রুশি গাড়ি চেনেন কি?
সোভিয়েত আমলের সব পুরনো রুশি গাড়ি দেখার ও চেনার একটা ভালো সুযোগ পাওয়া যায় জুলাই মাসে মস্কোর ওল্ডটাইমার ব়্যালিতে৷
ছবি: C. Braemer
চাইকা
দেখলে মনে হবে যেন পুরনো মার্কিন গাড়ি! সোভিয়েত ইউনিয়নে ষাটের দশকে এই চাইকা ছিল যাকে বলে কিনা চরম বিলাসিতা৷ কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি নিকিতা ক্রুশ্চেভের প্রিয় গাড়ি ছিল এই চাইকা; পার্টির হোমরা-চোমরারা সবাই এই গাড়ি চড়তেন৷
ছবি: C. Braemer
লাডা শিগুলি
প্রখ্যাত ভল্গা অটোমোবাইল কারখানার এই প্রথম মডেলটি তৈরি হয়েছিল ইটালির ফিয়াট ১২৪-এর অনুকরণে৷ গাড়ি বলতে সোভিয়েত ইউনিয়নের খেটে খাওয়া মানুষ এই লাডাই বুঝতেন৷
ছবি: C. Braemer
‘গাজিক’
আসল নাম পিটন গাজ-এ; লোকে ভালোবেসে গাজিক বলত৷ সোভিয়েত ইউনিয়নে এই গাড়িটিই প্রথম অ্যাসেম্বলি লাইনে ‘মাস প্রোডাকশান’ পদ্ধতিতে – অর্থাৎ কারখানায় একসঙ্গে অনেকগুলো করে তৈরি হয়৷ দেখেই বুঝতে পারছেন, গাজিক হলো যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি স্বরূপ ফোর্ড টি-র সোভিয়েত যমজ৷
ছবি: C. Braemer
পোবেদা
পোবেদা নামটির মানে হলো বিজয় – এক্ষেত্রে বিজয় বলতে বোঝাচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের জয়৷ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৪৬ সাল থেকে তৈরি হচ্ছে সে আমলের গোর্কি ও হালের নিজনি নভগরোদ শহরে৷
ছবি: C. Braemer
মস্কভিচ
মস্কভিচ গাড়িটি নাকি জার্মানির ওপেল কাডেট-এর অনুকরণে তৈরি হয়েছিল৷ সোভিয়েত ইউনিয়নে যতো মস্কভিচ গাড়ি তৈরি হতো, তার ৪০ শতাংশ রপ্তানি করা হতো৷ সেই ৪০ শতাংশের অর্ধেক আবার যেতো পশ্চিমে, অর্থাৎ লৌহ যবনিকার অপর পারে৷
ছবি: C. Braemer
ভল্গা
ভল্গা গাড়িটির উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৭ সালে – লোকমুখে এর নাম ছিল ‘পুবের মার্সিডিজ’৷ ইয়ুরি গাগারিনের মতো নভশ্চর আর সরকারি আমলারা এই গাড়ি চড়তেন৷ ১৯৬১ সালে প্রথম মানুষ হিসেবে গাগারিন যখন মহাকাশযাত্রা করেন, তখন সরকারের তরফ থেকে তাঁকে একটি ভল্গা গাড়ি উপহার দেওয়া হয়েছিল৷ গাড়ির ভেতরটা ছিল আকাশের মতো নীল...
ছবি: C. Braemer
জাপোরোশ বা জাপো
পুরো নাম জাপোরোশেজ ৯৬৫ – সস্তার গাড়ি বলে বাজারে নাম খারাপ ছিল৷ কারখানাটি আজ দক্ষিণ ইউক্রেনে৷ ১৯৬০ থেকে ১৯৯৪ সাল অবধি এই ‘জাপোরোশ’ বা ‘জাপো’ গাড়ি তৈরি হয়৷ ১৯৬৭ সাল থেকে প্রচুর জাপো গাড়ি রপ্তানি হয়েছে সাবেক পূর্ব জার্মানিতে৷