মিলেনিয়াম প্রকল্পের প্রভাব
৭ ডিসেম্বর ২০১৩এ মরসুমে কলার চাষ ভালোই হয়েছে৷ কিছুদিন ধরে পিটার ওতিয়েনো ওয়াকোই আখ আর ভুট্টার পাশাপাশি সয়াবিন ও কলা চাষও শুরু করেছেন৷ পিটার ও তাঁর স্ত্রী এর জন্য প্রয়োজনীয় বীজ ও সার বিনামূল্যেই পেয়েছেন মিলেনিয়াম প্রকল্পের কল্যাণে৷ তবে উৎসাহের আসল কারণ হিসেবে তিনি বললেন, ‘‘মিলেনিয়াম প্রকল্পের কথা যখন জানতে পারলাম, তখন নিশ্চিত হলাম যে প্রশিক্ষণ থেকে কিছু শিখতে পারবো, ফলনও বাড়াতে পারবো৷''
গত ৭ বছর ধরে গ্রামে মিলেনিয়াম প্রকল্পে অংশ নিয়ে পিটার সেটা করে দেখিয়েছেন৷ প্রথমদিকে সবারই লাভ হয়েছে৷ গ্রামবাসীরা পেয়েছেন বিশুদ্ধ পানীয় জল৷ রাস্তার মেরামতি হয়েছে অথবা নতুন করে তৈরি হয়েছে, বিদ্যুতের লাইন বসেছে৷ অবকাঠামোর কাজ শেষ হবার পর থেকে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণের ব্যয় বহন করা হবে৷ বছর দুয়েক ধরে চাষীরা আর বিনামূল্যে সার ও বীজ পাচ্ছেন না, নিজেদেরই তা কিনতে হচ্ছে৷
সমস্যা ও সমালোচনা
কিন্তু সমস্যা রয়ে গেছে৷ প্রথমে আয় বেড়েছিল বটে, কিন্তু তারপর কমে গেছে৷ মিল মালিকও টের পাচ্ছেন, যে শস্য ভাঙানোর কাজ কমে গেছে৷ ফলে এই প্রকল্প সম্পর্কে তিনি সন্দিহান৷ পিটার বলেন, ‘‘প্রকল্প শেষ হলে মানুষ আবার গরিব হয়ে যাবে, কারণ তাদের আয় কমে যাবে৷''
গ্রামে শস্যের গুদাম তৈরি করে প্রকল্পের আওতায় এই প্রবণতা রোখার চেষ্টা চলছে৷ প্রথমদিকে যে চাষীরা বিনামূল্যে সার ও বীজ পেয়েছিলেন, ফসল তোলার পর তাঁরা দুই-এক বস্তা ভুট্টার দানা গুদামে রাখতে পারবেন৷ প্রকল্পের প্রধান জানালেন, ‘‘এবারের মরসুমে আমরা প্রায় ১,৬০০ বস্তা জমা রেখেছি, যার দাম প্রায় ৬০ হাজার ডলার৷ বিক্রির টাকায় আমরা সার ও বীজ কিনবো৷''
এভাবে চাষীদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে৷ তবে এই প্রকল্পের সমালোচকেরও অভাব নেই৷ ইরেনকেনিয়া নামের থিংক ট্যাংকের জেমস শিকাওয়াতি বলেন, ‘‘মানুষের জীবিকার পথ আরও সহজ না করার কারণ হিসেবে কেনিয়া বা আফ্রিকার অন্যান্য দেশের সরকার যে সব অজুহাত দেখায়, সেটা হতে দেয়া উচিত নয়৷ কারণ এই সব ‘মিলেনিয়াম ভিলেজ' আসলে সরকারের ভূমিকা পালনের পথ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে৷''
মানুষের মনোভাব
কে অর্থ দিচ্ছে, তা নিয়ে অবশ্য পিটারের কোনো মাথাব্যথা নেই৷ দু-বেলা পেট ভরে খাওয়া যাচ্ছে, এটাই বড় কথা৷ নিজে যেটুকু শিখেছেন, তা তিনি সন্তান-সন্ততিদের দিয়ে যেতে চান, যাতে তারা আরও আগে থেকেই সেই বিদ্যা কাজে লাগাতে পারে৷