1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেনিয়ায় যৌন নির্যাতন

ইসাবেলা বাউয়ার/আরবি২ এপ্রিল ২০১৪

কেনিয়ায় যৌন নির্যাতন নিত্যদিনের ব্যাপার৷ ২০০৭ সালে নির্বাচনের পর এই ধরনের হামলা তুঙ্গে ওঠে৷ অপরাধীদের কখনও বিচারের সম্মুখীন করা হয়নি৷ নির্যাতনের শিকার কিছু নারী মামলা দায়ের করেছেন সরকার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে৷

Südafrika Johannesburg Demonstration Vergewaltigung
ছবি: picture-alliance/dpa

২০০৭ সালে ৩০শে ডিসেম্বর কেনিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন মোয়াই কিবাকি৷ বিরোধীদল নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগের এনে সহিংস আন্দোলন গড়ে তোলে৷ সরকার সমর্থিত ও বিরোধী দুই দলই ছুরি, চাপাতি, লোহার রড নিয়ে অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হানাহানিতে লিপ্ত হয়৷ বাড়িঘর পোড়ানো হয়, মানুষকে হতাহত করা হয়, কেটে টুকরো টুকরো করা হয়৷ হামলার সহজ শিকার ছিল নারী ও শিশুরা৷ এমনকি নিরাপত্তারক্ষা বাহিনী তথা পুলিশের লোকজনও হামলা করা থেকে বিরত থাকেনি৷ যোগ দিয়েছে নিপীড়ন, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ভয়ানক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে৷

নির্যাতনের শিকার আটজন নারী মামলা দায়ের করেছেনছবি: picture-alliance/dpa

ভুক্তভোগীরা ক্ষতিপূরণ পাননি

আজ পর্যন্ত এদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি৷ ভুক্তভোগীরা কোনো স্বীকৃতি বা ক্ষতিপূরণ পাননি৷ অনেকেই শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন৷ আক্রান্ত হয়েছেন এইডস-এর ভাইরাসে৷

‘কোলাবোরাটিভ সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট'-এর পরিচালক মাশেটি মাসেনিলা বলেন, ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে বহু মেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে চান৷ কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই তাঁদের আমল দেওয়া হয় না৷ ধর্ষণকে গুরুতর অপরাধ বলেও গণ্য করা হয় না৷

থানায় জিজ্ঞস করা হয়, ‘‘কেউ কি মারা গিয়েছে? কাউকে কি পেটানো হয়েছে?'' উত্তরটি না সূচক হলে পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়, ‘‘তাহলে আমাদের সময় নেই৷ আরো গুরুতর বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় আমাদের৷''

এখন নির্যাতনের শিকার আটজন নারী মামলা দায়ের করেছেন কেনিয়া প্রজাতন্ত্রের অ্যাটর্নি জেনারেল, পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল, জাতীয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রলায়ের বিরুদ্ধে৷ এইসব নারীকে সহায়তা করছে বেশ কিছু মানবাধিকাররক্ষা সংস্থা৷

বাদিপক্ষের প্রধান অভিযোগ: পুলিশ বেসামরিক লোকজনকে যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ আজ পর্যন্ত এই অপরাধের তদন্ত করতে রাজি হয়নি৷

নাম প্রকাশ করেননি

অভিযোগকারীরা তাঁদের নাম প্রকাশ করেননি৷ কেনিয়ার মানবাধিকার সংস্থা ‘কোয়ালিশন অন ভায়োলেন্স এগেইন্সট উইমেন'-এর উপপরিচালক লুডিয়া মিথিয়ানি তাদের বিবৃতি নথিভুক্ত করেছেন৷ দক্ষিণ নাইরোবির বস্তিবাসী এক নারীর লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেন তিনি৷ মেয়েটি প্রথমে পুলিশবাহিনীর সদস্য ও একদল দুষ্কৃতিকারীর দ্বারা ধর্ষিত হন৷ তারা মেয়েটির পা এমনভাব মুচড়ে দেয়, যাতে তা ভেঙে যায়৷ তারা সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর আরো একদল তাঁর বাসায় আসে লুটপাট করার জন্য৷ মেয়েটিকে আহত ও নগ্ন অবস্থায় দেখতে পেয়ে উল্লাস প্রকাশ করে তারা৷

অভিযোগপত্রটি ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্থাপন করা হয়৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি৷ এই বছর জানুয়ারি মাসে মামলার প্রথম তারিখেও সংশ্লিষ্টদের সকল প্রতিনিধে উপস্থিত হননি৷ পরে ২৫শে মার্চে আবার আদালতের তারিখ ধার্য করা হয়৷

এই মামলা আদালতে আসার আগেই ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে৷ শুধু সরকারের বিরুদ্ধে বলেই নয়৷ সামাজিক এক ট্যাবুও ভেঙেছে এটি৷ ‘‘আমরা কেনিয়ানরা এই ধরনের ঘটনা সনাতন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি৷ কোনো তরুণীকে কলুষিত করা হলে বা কোনো নারী ধর্ষিত হলে তা অভিশাপ হিসাবে দেখা হয়৷'' বলেন কেনিয়ার জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ফাইথ ওখিয়েং৷ এ কারণে তিনি মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন৷ এই ধরনের ঘটনা আদালতে উপস্থাপন করতে চান তিনি৷ যাতে বিষয়টি সম্পর্কে মানুষের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসে৷

ভুক্তভোগীদেরই দোষ দেওয়া হয়

প্রায় ক্ষেত্রেই এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় না৷ আর হলেও ভুক্তভোগীদেরই দোষ দেওয়া হয়৷ এমনকি পরিবারের তরফ থেকেও পরিত্যাজ্য হতে হয় তাদের৷ কেননা মনে করা হয় ধর্ষিত মেয়েটি গোটা পরিবারে জন্য লজ্জা, বলেন ওখিয়েং৷

নারী ও শিশুরক্ষা সংস্থাগুলি আশা করছে এই মামলা কেনিয়ার মানুষদের এক্ষেত্রে জাগিয়ে তুলবে৷ এখনও ধর্ষণের মতো অপরাধকে লঘু অপরাধ বলে মনে করা হয়৷ অ্যাক্টিভিস্টরা পুলিশ, চিকিত্সক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীদের আরো ভালো প্রশিক্ষণ দেওয়ার দাবি করেন৷ এক্ষেত্রে মামলাটি একটি ভূমিকা রাখতে পারবে৷ রায় যাই হোক না কেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ