কেন্দ্র দখল ও সহিংসতা
৩১ মার্চ ২০১৪ তবে নির্বাচন কমিশনের দাবি, নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ৷ কেন্দ্র দখল, বিরোধীদের ওপর হামলা এবং প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ১৪টি উপজেলায় ভোট বর্জনের ঘোষণা করেছে বিএনপি৷ নির্বাচন বর্জন করা উপজেলাগুলো হলো: সাতক্ষীরা সদর, তালা ও দেবহাটা, বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা ও আমতলী, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, চুয়াডাঙ্গার সদর ও আলমডাঙ্গা, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, জামালপুরের মাদারগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আড়াইহাজার এবং কুমিল্লার চান্দিনা৷
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনকারী প্রার্থীদের সমর্থকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন৷ এ সময় ক্ষুব্ধ সমর্থকদের সরিয়ে দিতে পুলিশ গুলি ছুড়লে মোট পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন৷ মৌলভীবাজারের রাজনগরে সোনাদীঘি ভোটকেন্দ্রের বাইরে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন৷ এদিকে ভোট শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যে বরগুনার আমতলী উপজেলায় কেন্দ্র দখল ও অনিয়মের অভিযোগে ১২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়৷ এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ আর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ভোট শুরুর ৫ ঘণ্টা আগে কেন্দ্রের সামনে খুন হয়েছেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা৷
পঞ্চম দফা উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্র দখলের মহোত্সব চলেছে বলে দাবি করে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা, মাইক ভাঙচুর, কেন্দ্র দখল ও আগের রাতে ভুয়া ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরা, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বিরোধী এজেন্টদের বিতাড়িত করার মহাযজ্ঞ চালিয়েছে৷ ভোট নয়, হয়েছে ভোটকেন্দ্র দখলের মহোত্সব৷''
গত ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হলেও তৃতীয় ধাপ থেকে সহিংসতা, অনিয়ম এবং কেন্দ্র দখলের ঘটনা শুরু হয়৷ আর সোমবার পঞ্চম ধাপের নির্বাচনেও তা অব্যাহত থাকে৷ সোমবারের নির্বাচন নিয়ে ৫ দফায় ৪৮৭টি উপজেলার মধ্যে ৪৫৬টি উপজেলার নির্বাচন শেষ হলো৷ বাকি ৩১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হবে এপ্রিল মাসে৷ তবে এর জন্য তফসিল এখানো ঘোষণা করা হয়নি৷ চার ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মোট ১৭১, বিএনপি ১৪০ জামায়াত ৩৩ এবং স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের ৩৫ জন চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন৷ এমনকি সোমবারের ফলাফলও আওয়ামী লীগের পক্ষে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে৷
নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ডয়চে ভেলকে বলেন, ‘‘আমাদের বিবেচনায় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে৷ আমাদের কাছে ব্যাপক সহিংসতা বা অনিয়মের তেমন কোনো অভিযোগ আসেনি৷ যেসব অভিযোগ এসেছে, তা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না৷'' তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা ঢালাওভাবে সহিংসতা বা অনিয়মের অভিযোগ করেন, তাঁরা তা রাজনৈতিক কারণেই করেন৷ তাঁরা কেন এটা করছেন – তার জবাব তাঁরাই ভালো দিতে পারবেন৷''