1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেন ঈদে নগরবাসী গ্রামে ছোটেন

৩০ মে ২০১৯

ঈদে নগরবাসী, বিশেষ করে ঢাকার বাসিন্দারা গ্রামের বাড়ি যান৷ এই যাত্রায় যত ভোগান্তিই থাকুক, সবাই তা মেনে নেন৷

ছবি: bdnews24.com

ঈদে কত লোক ঢাকা ছাড়েন তার কোনো পরিসংখ্যান নেই৷ তবে কমপক্ষে অর্ধেক নগরবাসী যে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যান সে বিষয়ে কারো সন্দেহ নেই৷ সেই হিসেবে ১ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার এই শহরের ৮০-৮৫ লাখ মানুষ এবারের ঈদেও ঢাকা ছাড়বেন৷

এরই মধ্যে নগরবাসী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন৷ কেউ কেউ আবার ঈদ যাত্রার ভোগান্তি কিছুটা কমাতে আগেই স্ত্রী-সন্তানদের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ নিজেরা যাবেন ঈদের ছুটি শুরু হলে৷

যাওয়া, আসায় ভোগান্তি হলেও আনন্দ তার চেয়ে বেশি: জামাল উদ্দিন

This browser does not support the audio element.

লম্বা ছুটি!

ঈদের সরকারি ছুটি ৪, ৫ ও ৬ জুন৷ কিন্তু শুক্রবার ( ৩১ মে) থেকেই বাস্তবে ছুটি শুরু হয়ে যাচ্ছে, কারণ, শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি৷ রবিবার শবে কদরের সরকারি ছুটি৷ তারপর মাত্র সোমবার (৩ জুন) অফিস খোলা৷ এরপর থেকে টানা ৩ দিন ঈদের ছুটি৷ ফলে সোমবার অনেকেই ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন বা ‘অন্যভাবে ম্যানেজ’ করছেন৷ তাই ধরে নেয়া যায় শুক্রবার থেকেই ঢাকার মানুষ গ্রামে ছুটতে শুরু করবেন৷

আর ধারণা করা হচ্ছে এবার আগের তুলনায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়বে৷ কারণ, ঈদের ছুটি শেষে দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি আছে৷ তাই সব মিলিয়ে হিসাব করলে এবার ঈদে ছুটি ৯ দিন৷

অন্য জায়গায় এভাবে একসাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাইনা: ফওজিয়া সুলতানা

This browser does not support the audio element.

কেন সবাই গ্রামে যান?

ঢাকার বেসরকারি চাকরিজীবী জামাল উদ্দিন৷ তাঁর গ্রামের বাড়ি ফেনী৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘গত ঈদে  ছুটি পাইনি, তাই বাড়ি যেতে পারিনি৷ এবার ছুটি পেয়েছি৷ সব মিলিয়ে ৯ দিন ছুটি৷ তাই বাড়ি যাবো৷ স্ত্রী-পরিজনকে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি ভোগান্তি এড়াতে৷ আমি যাবো ছুটি শুরু হলে৷’’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘গ্রামে আত্মীয়-স্বজন আছে, তাঁদের সাথে দেখা হবে৷ পরিবারের অন্যরাও আছেন৷ তাই যাওয়া-আসায় ভোগান্তি হলেও আনন্দ তার চেয়ে বেশি৷’’

ফওজিয়া সুলতানা একাই ঢাকায় থাকেন৷ কাজ করেন একটি সংবাদ মাধ্যমে৷ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা৷ তিনি যে করেই হোক প্রতি ঈদেই গ্রামের বাড়ি যান৷ কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাই-কোন বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেন৷ দেশের বাইরেও আত্মীয়-স্বজন আছেন৷ তাঁরা সবাই ঈদে গ্রামে আসেন৷ আর কোনো জায়গায় এমরা একসাথে এভাবে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাই না৷ তাই আমি ঈদে সব সময় বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করি৷ এ পর্যন্ত আমার কোনো ঈদই মিস হয়নি৷ এটা আমার নাড়ির টান৷’’

আমি গ্রামের বাড়ি ছাড়া ঈদ করার কথা চিন্তাই করতে পারিনা: খাদেমুল করিম ইকবাল

This browser does not support the audio element.

সরকারি কর্মকর্তা খাদেমুল করিম ইকবাল বলেন, ‘‘আমি টানা ৯ দিন ছুটি পাচ্ছি না৷ ৩ জুন অফিস করে আমাকে যেতে হবে৷ কিন্তু তাতে কোনো সমস্যা নেই৷ আমার যেখানে জন্ম, সেই জামালপুরেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ করবো৷ ওটাই আমার বাড়ি৷ ওখানে আমার সব স্মৃতি৷ আমি গ্রামের বাড়ি ছাড়া ঈদ করার কথা চিন্তাই করতে পারি না৷’’

কারা বাড়ি যান?

তাই  ঈদ শুধু উৎসব নয়৷ নগরবাসীর কাছে নাড়ির টানে গ্রামে ফেরার এক আয়োজন৷ আর ওই গ্রামে ফিরে আসেন পরিবারের সবাই৷ অনেকেই এই মিলনমেলা মিস করতে চান না৷

এখনো ঢাকার ৬০ ভাগ পরিবার প্রধানের জন্ম গ্রামে: ড. ইসলাম

This browser does not support the audio element.

নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই উৎসব আয়োজনে গগরবাসীর গ্রামমুখী হওয়ার নানা কারণ আছে৷ এখনো ঢাকার ৬০ ভাগ পরিবার প্রধানের জন্ম গ্রামে৷ আবার ঢাকায় যাঁরা মাইগ্র্যান্ট, তাঁদের অধিকাংশের শহরে বাড়ি নেই৷ তাঁদের পরিবারের একটি অংশ নিজ গ্রামে বা অন্য এলাকায় কাজের জন্য থাকেন৷ কেউ আছেন, যিনি শুধু নিজেই ঢাকায় থাকেন, পরিবার গ্রামে থাকেন৷ এসব কারণে উৎসব আয়োজনে তাঁরা গ্রামে যান৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘মধ্যবিত্তের একটি অংশ আছে যাদের গ্রাম ও শহর উভয় জায়গায় বাড়ি আছে৷  তাঁরাও গ্রামে তাঁদের পরিবার নিয়ে যার গ্রাম দেখাতে৷ কিন্তু যাঁদের গ্রামে বা শহরে কোথাও বাড়ি নেই, তাঁরা আসলে যান না৷ এঁরা নিম্নবিত্ত মানুষ৷ তাঁরা ঢাকায় হয়ত বস্তিতে থাকেন৷ গ্রামে কোনো আশ্রয় নেই৷ সে কারণেই শহরে এসেছেন৷’’

এই নগর বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ‘‘ঢাকার ৪০-৫০ ভাগ মানুষ ঈদে গ্রামে যান৷ তবে কোনো জরিপ নেই৷ এটার একটি জরিপ হলে আরো অনেক তথ্য পাওয়া যাবে৷’’

সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

সারাদেশে কত লোক ঈদে গ্রামে যান?

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মতে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে  ঈদের সময়ে সারাদেশে কমপক্ষে দ্বিগুন মানুষ যানবাহনে চলাচল করেন৷ ঢাকা থেকে এই সংখ্যা প্রায় ১ কোটি৷ আর অন্যান্য এলাকা থেকে সাড়ে ৩ কোটি৷ বাংলাদেশের সড়ক এবং যানবাহন এমনিতেই যাত্রীবান্ধব নয়৷ যানবাহন প্রয়োজনের তুলনায় কম৷ সড়কগুলোও ভালো না৷ ফলে দ্বিগুন চাপে পারিস্থিতি স্বাভাবিক কারণেই ঈদ বা কোরবানির সময় খারাপ হয়৷ সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘তবে আমরা মনে করি, এবার  ঈদে যাত্রীদের ভোগন্তি কম হবে৷  আগের তুলনায় শতকরা ১০ ভাগ কম৷ কারণ সড়ক- মহাসড়কের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো৷ আর মহাসড়কের কিছু এলাকায় যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ এখন যানবাহনগুলো যদি ঠিক সময়ে ছাড়ে তাহলে পরিস্থিতির আরো একটি উন্নতি হবে৷’’

গতবছরের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ