1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেন বাড়ছে বজ্রপাতে মৃত্যু?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩০ এপ্রিল ২০১৮

বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৫ সালে৷ ওই বছর বজ্রপাতে নিহত হয়েছিলেন ১৮৬ জন৷ অবস্থার এখনো উন্নতি হয়নি৷ চলতি মাসেও প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে নিহত হয়েছেন ৫০ জন৷

ছবি: bdnews24

বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৮০ থেকে ১২০ দিন বজ্রপাত হয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব জিওগ্রাফির অধ্যাপক ড. টমাস ডাব্লিউ স্মিডলিনের ‘রিস্কফ্যাক্টরস অ্যান্ড সোশ্যাল ভালনারেবিলিটি’ শীর্ষক গবেষণা বলছে, ‘‘প্রতিবছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ৪০টি বজ্রপাত হয়৷ বছরে দেড়শ'র মতো লোকের মৃত্যুর খবর সংবাদ মাধ্যম প্রকাশ করলেও প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা পাঁচশ' থেকে এক হাজার৷’’

দুর্যোগ ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১৭ সালে ২০৫, ২০১৬ সালে ২৪৫, ২০১৫ সালে ১৮৬, ২০১৪ সালে ২১০, ২০১৩ সালে ২৮৫, ২০১২ সালে ৩০১ এবং ২০১১ সালে ১৭৯ জন বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন৷

প্রধানত দুটি কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে: ড. হোসেন

This browser does not support the audio element.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বজ্রপাত একটি স্বাভাবিক ঘটনা৷ আগেও হয়েছে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এটা বেড়ে গেছে৷ গত দুই-তিন বছরে গড়ে ৩০০-৪০০ লোক মারা গেছে৷ অতীতে এমন হয়নি৷’’

এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানত দু'টি কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে আবহাওয়া ও জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে৷ এর ফলে  বৃষ্টিপাতের ধরন ও সময় পরিবর্তন হয়েছে৷ কালবৈশাখি বেশি হচ্ছে৷ আর বজ্রপাতের সংখ্যা বা পরিমাণ বেড়ে গেছে৷ অন্যদিকে আগে গ্রামাঞ্চলে প্রচুর উঁচু গাছ ছিল৷ তাল গাছ, বটগাছ প্রভৃতি৷ সাভাবিক নিয়মে বজ্রপাত হলে এসব উঁচু গাছ তা অ্যাসজর্ব করে নিতো৷ কিন্তু এখন তা না থাকায় যখন খোলা মাঠে বজ্রপাত হয় তা মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ শহরে গাছ না থাকলেও উঁচু উঁচু ভবন আছে৷ ফলে শহরের মানুষ এই মত্যু থেকে রেহাই পাচ্ছে৷’’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-র প্রধান ড. আব্দুল মতিন বলেন, ‘‘বায়ুদূষণও একটি কারণ৷ এ কারণেও বজ্রপাত বাড়ছে৷’’

বাযুদূষণও একটি কারণ: ড. মতিন

This browser does not support the audio element.

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় মঙ্গলবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে৷ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল এই দুই দিনে বজ্রপাতে ৩২ জন নিহত হয়েছে৷ আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে৷ এ অবস্থায় করনীয়, সরকারের সিদ্ধান্ত এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে৷

বজ্রপাতের প্রতিকার হিসেবে গতবছর সরকার সারাদেশে ১০ লাখ তালগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ তবে তালগাছ নয়, ২৮ লাখ তালের আঁটি রোপন করা হয়েছে৷

ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের গাছ তো লাগাতেই হবে৷ প্রতিরোধক ব্যবস্থাও নিতে হবে৷ তবে সবার আগে প্রয়োজন মানুষকে সচেতন করা৷ বৃষ্টি, ঝড় শুরু হলেই, বিশেষ করে যারা গ্রামে খোলা মাঠে থাকেন, তাঁরা যেন ঘরে আশ্রয় নেন৷’’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-র প্রধান ড. আব্দুল মতিন বলেন, ‘‘গাছ কাটার জন্য আমরা সবাই দায়ী৷ আমাদের সচেতন হতে হবে৷ এখনো যে গাছ আছে, তা যদি আমরা সংরক্ষণ করতে পারি, তাহলে পাঁচ বছরের মধ্যে পরিস্থিতি পালটে যাবে৷’’

২০১৭ সালের এই ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ