মানসিক রোগীদের জন্য বাংলাদেশের একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে পাবনার হেমায়েতপুরে৷ হাসপাতালটি ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট৷ কিন্তু বর্তমানে সেখানে ডাক্তার আছেন মাত্র চারজন৷ রয়েছে অন্যান্য সমস্যাও৷
বিজ্ঞাপন
ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার'-এ প্রকাশিত খবর বলছে, রোগীদের সঠিক সেবা দিতে আরও ৩০ জন চিকিৎসক প্রয়োজন৷ আর হাসপাতালে কর্মচারীদের জন্য ৪৯২টি পদ থাকলেও বর্তমানে কাজ করছেন ৩৬৬ জন৷ হাসপাতালের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকার হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগ দিলেও অনেকে সেখানে কাজ করতে চান না৷
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ২০১১ সালের প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি৷ আর ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশের মানসিক রোগ রয়েছে৷
বাংলাদেশে মানসিক রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বেশ কয়েকটি ছবি ছাপিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান৷ বাংলাদেশে মানসিক রোগীদের বেশ অবহেলা করা হয়৷ রোগীদের গায়ে কলঙ্ক লেপে দিয়ে তাদের অনেক সময় শিকল দিয়ে বেঁধেও রাখা হয়৷
গার্ডিয়ান প্রতিবেদনটি টুইটারে শেয়ার করলে সেখানে মন্তব্য করেন অনেকে৷ ওসমান গনি লিখেছেন, ‘‘তিক্ত সত্য৷ সামান্য সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া রোগীর সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে৷''
ক্যাথেরিন ম্যারি রোহান গার্ডিয়ান পত্রিকাকে আগে ব্রিটেনে মানসিক রোগীদের অবস্থা দেখার আহ্বান জানান৷ তাঁর মতে, ব্রিটেনে মানসিক রোগীদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, সারা বিশ্বের প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে একজন মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন৷
বলিউডের যে তারকারা অবসাদের শিকার
তারকাদের ঝলমলে জীবন দেখে মনে হতে পারে, তাদের জীবনে কোনো অবসাদ বা ডিপ্রেশন নেই৷ বলিউডের অবসাদগ্রস্ত তারকাদের অনেকে এই মানসিক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও কেউ কেউ সমাধান হিসেবে মৃত্যুকে বেছে নিয়েছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP
দীপিকা পাড়ুকোন
দীপিকা ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন একথা নিজেই স্বীকার করেছেন একটি সাক্ষাৎকারে৷ তিনি বলেছেন, ‘‘একটা সময় আমার মনে হত আমি কি করব? কোথায় যাবো? আমি কেবল কাঁদতাম৷’’ দীপিকা নিজের অবসাদের ব্যাপারটি যে বুঝতে পেরেছেন এ কারণে বিশেষজ্ঞরা তাঁকে সাহসী বলেছেন৷
ছবি: DW/P. M. Tewari
আনুষ্কা শর্মা
দীপিকার পর আনুষ্কাও তাঁর অবসাদের কথা জানিয়েছেন৷ তিনি এ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করেছেন৷ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘যখন আপনার পেটে ব্যথা হয় তখন কি আপনি চিকিৎসকের কাছে যান না? এটাও সেরকমই একটি ব্যাপার৷’’ আনুষ্কা জানিয়েছিলেন তাঁর অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার রয়েছে আর সেটার চিকিৎসা চলছে৷
ছবি: AP
পারভীন ববি
২০০৫ সালে পারভীন ববিকে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল৷ ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছিল, তাঁর মৃত্যু হয়েছিল মৃতদেহ উদ্ধারের ৭২ ঘণ্টা আগে৷ প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি বেশ কিছুদিন ধরে না খেয়ে ছিলেন৷ পারভীন ডিপ্রেশন এবং সিজোফ্রেনিয়ার শিকার ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সিল্ক স্মিতা
দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতার জীবনী নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিদ্যা বালন অভিনীত ডার্টি পিকচার মুভিটি৷ নাম, যশ, খ্যাতির শিখরে থেকে একসময় তিনি মানসিক স্থিতিশীলতা হারিয়ে ফেলেছিলেন৷ ১৯৯৬ সালে নিজের ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি৷
ছবি: ALT Entertainment/Balaji Motion Pictures
জিয়া খান
২০১৩ সালে জিয়ার আত্মহত্যা বলিউডে তোলপাড় তুলেছিল৷ মাত্র ২৫ বছরের জিয়া নিজের ঘরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছিলো৷ ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তাই তাঁর আত্মহত্যার কারণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মনীষা কৈরালা
গর্ভাশয়ে ক্যান্সারের কারণে মনীষা অবসাদে ভুগছিলেন৷ কিন্তু এসময় পরিবার ও বন্ধুরা তাঁকে সঙ্গ ও সাহস দেয়ায় তিনি সেই অবসাদ থেকে ফিরে এসেছেন৷ মনীষা বলেন তিনি নিরাশাবাদী নন, তাই ডিপ্রেশনের সাথে লড়াই করে জিতেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শাহরুখ খান
বলিউডের বাদশাহ বলা হয় তাঁকে৷ কিন্তু তিনিও ডিপ্রেশনের শিকার৷ এটা শুনতে অস্বাভাবিক লাগতে পারে৷ কেননা জীবনে নাম, যশ, খ্যাতি কোনোটারই অভাব নেই তাঁর৷ কিন্তু এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেছিলেন, কাঁধে অস্ত্রোপচারের পর বেশ অনেকটা সময় তিনি অবসাদে ভুগছিলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP
অমিতাভ বচ্চন
অ্যাংরি ইয়াং ম্যান হিসেবে পরিচিত অমিতাভ বচ্চন বরাবরই কঠিন সব ভূমিকায় অভিনয় করেন৷ ৯০ এর দশকে নির্মাতা হিসেবে নিজের প্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু সেই কোম্পানি পরিবেশিত মুভিগুলো ফ্লপ হওয়ায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছিলেন৷ সেই সময় তিনি গভীর অবসাদে ভুগছিলেন৷ তাই মানসিক অসুস্থতার কারণে শারীরিক কিছু অসুস্থতাও দেখা দিয়েছিল তাঁর৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
ধর্মেন্দ্র
এক, দুই না টানা ১৫ বছর ধরে অবসাদে ভুগেছিলেন বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্র৷ ডিপ্রেশনের কারণে তিনি মদ্যপান শুরু করেন এবং এতে এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েন যে সংসারে অশান্তি শুরু হয়৷ কিন্তু বর্তমানে তিনি এসব পেছনে ফেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন৷
ছবি: Mskadu
গুরু দত্ত
১৯৬৪ সালের ১০ অক্টোবর নিজের বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল হিন্দি চলচ্চিত্রের অন্যতম সৃজনশীল পরিচালক গুরু দত্তকে৷ বেশ কিছুদিন থেকেই তিনি অবসাদে ভুগছিলেন৷ প্রতি রাতে মদ্যপান এবং ঘুমের ওষুধ ছিল তাঁর সঙ্গী৷ যেদিন মারা যান সেদিনও একসাথে অনেক ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন৷