ভিয়েতনাম৷ চীনের প্রতিবেশী, জনবহুল দেশ৷ রয়েছে দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা৷ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় পর্যাপ্ত অর্থও নেই৷ তাহলে তারা কোভিড-১৯ ঠেকাচ্ছে কী করে?
বিজ্ঞাপন
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চীন থেকে শুরু হয়ে ১০ হাজার কিলোমিটার দূরে ইউরোপের ধনী দেশগুলোতে ছড়িয়ে গেছে৷ অথচ ভিয়েতনামে তেমন কিছু হয়নি৷
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্ত হয়েছেন সোয়া নয় লাখের বেশি৷ মারা গেছেন ৫৩ হাজার নয়শোর উপরে৷ অথচ চীনের সঙ্গে ১১০০ কিলোমিটার সীমান্ত থাকার পরও ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত সেখানে মাত্র ২৭০জন আক্রান্ত হয়েছেন৷ এর মধ্যে ২২৫ জনই সুস্থ হয়েছেন৷ এখন পর্যন্ত মারা যাননি কেউ৷
এর অর্থ করোনা মোকাবেলায় ভিয়েতনাম বেশ ভালো করছে৷
গত জানুয়ারির শেষে টেট নববর্ষ উদযাপনের সময় ভিয়েতনামের সরকার করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, যদিও প্রাদুর্ভাব তখনো চীনেই সীমাবদ্ধ ছিল৷ দেশটির প্রধানমন্ত্রী এনগুয়েন জুয়ান ফুক বলেন, খুব দ্রুতই এই ভাইরাস এখানে এসে পড়বে৷ ‘‘এই সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করা মানে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করা,’’ বলেন ফুক৷
করোনা সংকটে পপুলিস্ট নেতারা কোণঠাসা
পপুলিজম বা জটিল সমস্যার চটজলদি সমাধান বাতলে দেবার প্রবণতা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে৷ কিন্তু পপুলিস্ট নেতারা করোনা সংকটের সামনে অসহায় হয়ে পড়ছেন৷
ছবি: Imago Images/Media Punch/O. Contreras
ডনাল্ড ট্রাম্পের দুশ্চিন্তা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বছরে অর্থনৈতিক সাফল্য তুলে ধরে সাফল্যের আশায় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ প্রথমে করোনা সংকট লঘু করে দেখিয়ে চাপের মুখে কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি৷তবে বৈজ্ঞানিক ও বিশেষজ্ঞদের অবজ্ঞা করে ইস্টারের আগেই পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ করে তুলতে চান ট্রাম্প৷
ছবি: Reuters/J. Ernst
বরিস জনসনের উভয় সংকট
সবে ব্রেক্সিট কার্যকর করে জনপ্রিয়তা উপভোগ করছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷ করোনা সংকট তাঁর ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে৷ প্রথমদিকে পরস্পরবিরোধী ও বিভ্রান্তিকর অবস্থান নেবার পর জনসনও কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন৷ ব্রিটেনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবকাঠামো পরিস্থিতি সামলাতে না পারলে জনসনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে৷
ছবি: Reuters/I. Vogler
নরেন্দ্র মোদীর বিড়ম্বনা
ভারতে করোনা সংকট এখনো মারাত্মক আকার ধারণ করেনি৷ কিন্তু সমালোচকরা সরকারের অনেক ‘লোক দেখানো’ পদক্ষেপের সমালোচনা করছেন৷ তাঁদের মতে, লকডাউন ঘোষণা ও জনমোহিনী ভাষণ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী সংক্রমণ কমাতে যথেষ্ট কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ যথেষ্ট সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব ভারতকে সংকটে ফেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Sharma
বেপরোয়া বোলসোনারো
অন্যান্য পপুলিস্ট বিশ্বনেতার মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো করোনা সংকট যতটা সম্ভব উপেক্ষা করে চলার চেষ্টা করছেন৷ তিনি বিষয়টিকে নিয়ে ‘অকারণ ত্রাস’ সৃষ্টির সমালোচনা করে থাকেন৷ এমনকি অবিলম্বে দেশে সব বাধানিষেধ তুলে নেবার ডাক দিচ্ছেন তিনি৷ বয়স্কদের ভিত্তিহীন আশ্বাস দিয়ে বলছেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই৷ অনেকের সন্দেহ, প্রেসিডেন্ট নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/A. Borges
সীমান্ত বন্ধ রাখতে চান ল্য পেন
ইউরোপের পপুলিস্ট নেতারা ভাঙলেও মচকাতে প্রস্তুত নন৷ ফ্রান্সের জাতীয় ফ্রন্ট নেত্রী মারিন ল্য পেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের ‘সীমন্তহীনতার ধর্ম’-কে বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন৷ তাঁর মতে, যে কোনো পরিস্থিতিতেই সীমান্ত মানুষকে সুরক্ষা দেয়৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করার কোনো পরামর্শ যে দেয়নি, ল্য পেনের অনুগামীরা সেই খবর রাখেন কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে৷
ছবি: Reuters/E. Gaillard
বিশেষজ্ঞদের পছন্দ নয়
ট্রাম্প, জনসন, বোলসোনারোর মতো নেতারা কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রাহ্য করতে চান না৷ বিশেষজ্ঞরাই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠুন, সেটাও তারা চান না৷ নিজেদের ভিত্তিহীন ধারণাকে জনমোহিনী মোড়কে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে তাঁরা যথেষ্ট সফল হয়েছেন৷ ফলে করোনা সংকটের সময় সাধারণ মানুষের বিপদের আশঙ্কা আরো যাচ্ছে৷
ছবি: Imago Images/Media Punch/O. Contreras
6 ছবি1 | 6
সর্বাত্মক ব্যবস্থা
বিষয় হলো, ব্যবস্থা নিতে হলে দু'টো জায়গায় ভরসা রাখতে হবে৷ এক হলো সরকারের অর্থ, আর দুই জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা, যে দু'টিতেই ঘাটতি আছে ভিয়েতনামের৷
দক্ষিণ কোরিয়ার মতো লাখ লাখ পরীক্ষা করার সাধ্য নেই তাদের৷ হো চি মিন শহরের মেয়র জানিয়েছেন, তাঁর শহরের ৮০ লাখ লোকের জন্য ইনটেন্সিভ কেয়ার বেড আছে মাত্র নয়শ'টি৷ এ শহরে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সহজেই তা সামর্থ্যকে অতিক্রম করবে৷
তাই করোনা মোকাবেলায় ভিয়েতনাম কড়াকড়িভাবে কোয়ারেন্টিন নীতি গ্রহণ করে৷ যারা এই ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের সংস্পর্শে আসা সবাইকে খুঁজে বের করে৷ চীন সম্পূর্ণ লকডাউন করার আগেই তারা এ কাজগুলো করে৷
যেমন, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন সপ্তাহের জন্য হ্যানয়ের পাশে ১০ হাজার অধিবাসীর একটি শহর সম্পূর্ণ আলাদা করে ফেলে তারা৷ সে সময় পুরো দেশে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন মাত্র ১০ জন৷
জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলোও যেখানে আক্রান্ত ও তাদের সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে এমন লোকদের খুঁজে বের করছে, সেখানে ভিয়েতনাম আক্রান্তদের সরাসরি, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ের সংস্পর্শে আসা মানুষদেরও খোঁজ রেখেছে৷ এদের সবার ওপর চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়৷
আর একেবারে শুরু থেকেই উচ্চ ঝুঁকি এলাকাগুলো থেকে যারাই ভিয়েতনামে এসেছেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে৷ ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে সব স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ রাখা হয়েছে৷
ভিয়েতনামের নজরদারির অবস্থা
শুধু ঔষধ ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তির সহায়তায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর চেষ্টার পরিবর্তে ভিয়েতনাম তাদের সবার আস্থার সেনাবাহিনীর উচ্চমানের প্রযুক্তির নজরদারি সেবাটি কাজে লাগিয়েছে৷
নিরাপত্তা কর্মকর্তা বা কমিউনিস্ট পার্টির গোয়েন্দাদের প্রত্যেক সড়ক ও ক্রসিংয়ে অথবা প্রত্যেক গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে৷ মিলিটারিও তাদের সদস্য ও যন্ত্রপাতি নিয়ে মাঠে যাচ্ছে৷
নিবিড় পর্যবেক্ষণের কারণে নিয়ম না মানা খুব দুঃসাধ্য সেখানে৷
তবে সমস্যা হলো, কোভিড-১৯ আক্রান্তরা সমাজে ও সামাজিক গণমাধ্যমে একঘরে হয়ে পড়েছেন৷ যেমন, এক নারী ইউরোপ থেকে ভাইরাস হ্যানয় শহরে নিয়ে গেছেন বলে চাউর হয়ে গেছে৷ তিনি কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন না হওয়ায় কিংবা কোয়ারেন্টিনে না থাকায় তাকে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক হেনস্থা করা হয়েছে৷
এই নারীর ঘটনাটি ভিন্ন৷ তিনি যখন ভিয়েতনামে ফেরেন, তখন প্রথম ১৬ জন যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন, সবাই সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেছেন৷ তাই তিনি ভাইরাসটি আবার নিয়ে এসেছেন এমনটিই সাধারণের ধারণা৷
ভিয়েতনাম করোনা পরিস্থিতিকে যুদ্ধের সঙ্গে অলঙ্করণ করছে৷ যেমন, প্রধানমন্ত্রী ফুক বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক ব্যবসা, প্রত্যেক নাগরিক, প্রত্যেক আবাসিক এলাকা এই প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে একেকটি দূর্গ৷’’
এই তুলনা অনেক ভিয়েতনামিজের মধ্যে এক রকমের আবেগ তৈরি করেছে৷ তারা একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো ও ধৈর্য্যশীলতার পরিচয় দিতে গিয়ে গর্ববোধ করছেন৷
রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম ব্যাপক হারে তথ্য প্রচার করছে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাত ধোয়ার ওপর একটি ভিডিও ইউটিউবে ছেড়ে দিয়েছে, যা ভাইরাল হয়ে গেছে৷
নিয়ম মানা
যদিও কোনো জরিপ করা হয়নি, তবে সামাজিক গণমাধ্যম ও ভিয়েতনামিজদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায় যে, তারা সরকারের উদ্যোগগুলোর সঙ্গে একমত৷
ভিয়েতনাম অনেকের চেয়ে সংকট মোকাবেলা ভালোভাবে করছে বলে তারা গর্ববোধ করেন৷ দেশের সবচেয়ে বড় করোনাযোদ্ধা হিসেবে এরই মধ্যে ফেসবুকে ‘জাতীয় বীর' খ্যাতি পেয়ে গেছেন সহপ্রধানমন্ত্রী ভু দুক দাম৷
তবে কিছু মানুষ ভিয়েতনামের এক দলীয় কমিউনিস্ট সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলে বিষয়টি ভালোভাবে দেখছেন না৷ তাদের অভিযোগ সরকার নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করেন৷
এদিকে, মিডিয়ার ওপর সরকারের কড়া নিয়ন্ত্রণও মেনে নিয়েছেন মানুষ৷ এমনকি আক্রান্তের সংখ্যা কম হলেও যে বিরাট অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে যাচ্ছে, তা-ও মেনে নিয়েছে জনগণ৷
সরকারের হিসেবে ২০২০ সালের প্রথম দুই মাসে তিন হাজার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে৷ ভিনগ্রুপের মতো বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পর্যটকের অভাবে তাদের অনেকগুলো হোটেল ও রিসোর্ট বন্ধ করে দিয়েছে৷ এতে অনেক লোক চাকরি হারিয়েছেন৷
এই বাড়তি চাপ সামলাতে ভিয়েতনাম সরকার প্রায় ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থ বরাদ্দ রেখেছে৷ তবে ধারণা করা হচ্ছে, সংকটের কারণে কর আদায় অনেক কমে যাবে৷ সরকার জনগণের কাছে অর্থ চেয়েছে৷ তারাও যে যার মতো দিচ্ছেন৷ তারা মনে করেন, এভাবেই সম্ভব করোনা ভাইরাস মোকাবিলা৷
রডিয়ন এবিগহাউজেন/জেডএ
দুই দশকে নতুন যত ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব
গোটা বিশ্ব এখন করোনা ভাইরাস বিরুদ্ধে লড়ছে, যার শুরুটা হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে৷ গত প্রায় দুই দশকে ছড়িয়ে পড়া নতুন কয়েকটি ভাইরাস নিয়ে এই ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Center for Disease Control
বার্ড ফ্লু (এইচ৫এন১)
১৯৯৭ সালে হংকংয়ে এইচ৫এন১ ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল৷ তারপর ২০০৩, ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে এশিয়ার আরো কয়েকটি দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়৷ ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৬৩০ জন বার্ড ফ্লুতে সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৩৭৫ জন মারা গেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নিপাহ ভাইরাস
১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার পাংকর দ্বীপের ছোট্ট শহর কামপুং তেলুক নিপাহতে নতুন একটি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়৷ পরের বছর ওই শহরের নামে ভাইরাসটির নামকরণ হয় নিপাহ৷ এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর আশঙ্কা ৫৪ শতাংশ৷ ২০১৮ সালে ভারতের কেরালায় এই ভাইরাস সংক্রমণে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়৷ ২০১৩ সালে বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসে অন্তত ১০ জন মারা যান৷
ছবি: Getty Images/AFP
সার্স
সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব হয় চীনে৷ ২০০২ ও ২০০৪ সালে এশিয়ার কয়েকটি দেশে সার্স ভাইরাস মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ে৷ আট হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হন, মারা যান প্রায় ৭৭৪ জন৷ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে ভয়াবহ শ্বাসকষ্ট হয়৷ তবে ২০০৪ সালের পর এই ভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের খবর আর পাওয়া যায়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Reynolds
সোয়াইন ফ্লু
২০০৯ সালে প্রথম বিশ্বজুড়ে এইচ১এন১ ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়৷ শূকরের ফ্লুর সঙ্গে লক্ষণ মিল থাকায় একে সোয়াইন ফ্লু নাম দেওয়া হয়৷ এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১১ থেকে ২১ শতাংশ মানুষ এ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন৷ দেড় লাখ থেকে প্রায় ছয়লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ ঢাকায় নতুন বছরে সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার খবর শোনা গেলেও আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: AP
মার্স (মিডলইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম)
এটি সার্স ভাইরাস গোত্রেরই একটি ভাইরাস৷ ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরবে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়৷ দেশটিতে মার্সে আক্রান্ত প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ মারা যান৷ উট থেকে এই ভাইরাস মানবদেহে ছড়ায় বলে ধারণা করা হয়৷ হাঁচি, কাশি ও সংস্পর্শের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষেও ছড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
করোনা ভাইরাস
চীনের উহান প্রদেশে গত ডিসেম্বর থেকে করোনা ভাইরাস প্রকোপ শুরু হয়৷ পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
বৈশ্বিক মহামারি
২০২০ সালের শুরু থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে বিভিন্ন দেশে৷ এক পর্যায়ে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ এশিয়া থেকে ইউরোপ হয়ে এখন অ্যামেরিকা রয়েছে করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর শীর্ষে৷ সারা বিশ্বে এরিমধ্যে দুই লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে রহস্যময় ভাইরাসটি৷
ছবি: Getty Images/L. DeCicca
প্রতিষেধক নেই
এখনও করোনার কোন প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি৷ তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ৷ কয়েকটি উদ্যোগ বেশ খানিকটা এগিয়েছে৷ মানব শরীরে কিছু সম্ভাব্য টিকার পরীক্ষা নিরীক্ষাও শুরু হয়েছে৷ তবে সেগুলো কার্যকারিতা নিশ্চিত হতে আরো বছর খানেক সময় লাগতে পারে৷