কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। অভিযানে শিশু শিক্ষার্থীরদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে।
বিজ্ঞাপন
সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত ৯ দিনে গ্রেপ্তার হয়েছে সাড়ে ৫ হাজারেও বেশি মানুষ। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকাংশই সরকারবিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের নেতা-কর্মী। এখন প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে আদালত চত্ত্বরে। অনেকে স্বজনের খোঁজে পুলিশের কার্যালয়গুলোর সামনেও অপেক্ষা করছেন।
দৈনিক সমকালের শুক্রবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "নিম্ন আদালতের গারদখানার সামনে বাড়ছে ভিড়, কান্নাকাটি। সহিংসতার পর আটকদের রাখা হয়েছে এই গারদখানায়। রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে প্রিজনভ্যানে করে তাদের এখানে আনা হয়। স্বজনরা এসেছেন তাদের একনজর দেখতে, কথা বলতে। নবম শ্রেণির ছাত্র আমির হামজাকে বুধবার দুপুরে রাজধানীর শেখেরটেকের ১২ নম্বর রোড থেকে আটক করে পুলিশ। একই সঙ্গে আটক করা হয় দশম শ্রেণির ছাত্র নাইম ইসলামকে। তারা দু'জন একসঙ্গে মোবাইল ফোনে খেলছিল।”
১৫ বছরের আমির হামজার মা রেহেনা বেগম চাকরি করেন একটি গার্মেন্টসে। সিএমএম আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে ছেলের জন্য কাঁদছিলেন রেহেনা। তিনি বলেন, "শখ করে ছেলেকে মোবাইল কিনে দিলাম, সেটাই কাল হলো।” পুলিশ তাকে জানিয়েছে, আমির হামজার মোবাইল ফোনে অপরাধমূলক মেসেজ পাওয়া গেছে। আমিরের বাবা ভোলার লালমোহনের বাসিন্দা মো. কাওসার জানান, তার ছেলের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় নাশকতার মামলা দিয়েছে পুলিশ।
শিশু শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, "শিশু শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি এখনো আমার নজরে আসেনি। নিশ্চিত করে না জেনে কিছু বলা যাবে না। তবে আমরা কোয়ালিটি অ্যারেস্ট করতে বলেছি। অর্থাৎ, ভিডিওতে যাদের দেখা গেছে বা এলাকার লোকজন যাদের দেখেছে, তাদেরকে অ্যারেস্ট করতে বলেছি। ছোট বাচ্চারা কোথায় অ্যারেস্ট হয়েছে আমি জানি না। তবে কিছু অল্প বয়সি ছেলে-মেয়েদের ওরা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেটা আপনারাও দেখেছেন। এদের সামনে রেখেছিল। এদের অধিকাংশ কিশোর গ্যাং। এরা লেখাপড়া করে না, বাচ্চা ছেলে। সে কারণে আমাদের পুলিশ প্রথমে অ্যাকশনে যায়নি। এগুলো সেগুলো কিনা আমি জানি না।”
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকাসহ ৫১টি মহানগর-জেলায় ৫২৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গত ৯ দিনে (১৭ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই) সারা দেশে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ জনকে। রাজধানীতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫১ জনকে। এর মধ্যে কয়েকটি জেলায় পুরোনো মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের অনেকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবং দল দুটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। পাশাপাশি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর নেতা-কর্মীদেরও গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিএনপির যুব বিষয়ক সহসম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ মোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি কামরুল হাসানকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বিএনপি জানিয়েছে। এর আগে দুপুরে রাজধানীর বারিধারার বাসা থেকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)-র চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
এই অভিযানে অনেক ‘নিরীহ' ও ‘নিরপরাধ' মানুষকেও গ্রেপ্তার হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমাদের অভিযানে কোনো নিরপরাধ মানুষ গ্রেপ্তার হওয়ার সুযোগ নেই। তবে কোনো এলাকায় আমরা ব্লকরেইড দেওয়ার পর অনেককেই ধরে আনি। কিন্তু যাচাই-বাছাই শেষে নিরপরাধ মানুষদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদেরই গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। ”
শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ কমিশনার বলেন, "শুধুমাত্র যারা সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, এমনদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীরা খুব বেশি সহিংসতায় জড়ায়নি। যারা সহিংসতা চালিয়েছে, আমরা তাদের খুঁজে বের করছি। কোনো শিক্ষার্থী যদি সহিংসতায় না জড়িয়ে থাকে, তাহলে তাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই।”
দেশে আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে: ফারুক
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি শুরু করে ১ জুলাই। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সারা দেশে। এর পরদিন থেকে এই আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন জায়গায় এসব ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে নাশকতার অভিযোগে সারা দেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৫ ও ঢাকার বাইরে ১৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আরো ১২৮টি মামলা করেছে। এ নিয়ে রাজধানীতে ২০১টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ২০৯ জনকে। বাকি সাড়ে ৩ হাজার গ্রেপ্তার হয়েছে রাজধানীর বাইরে থেকে।
২২ বছর বয়সি মিজানকে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। খবর পেয়ে তার বাবা মকবুল হোসেন ও মা রুমা বেগম লৌহজং থেকে ঢাকায় আসেন। আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে ছেলের জন্য অঝোরে কাঁদছিলেন রুমা বেগম। তিনি বলছিলেন, ৭ হাজার টাকা বেতনে মোহাম্মদপুরের একটি সাইনবোর্ড তৈরির কারখানায় কাজ করে মিজান। পুলিশ আটকের পর উত্তরা পশ্চিম থানায় তার বিরুদ্ধে ভাঙচুরের মামলা দিয়েছে। রুমা বেগম বলেন, "আমরা গরিব মানুষ, কাম করে খাই। রাজনীতি বুঝি না। ছেলেটা কী এমন করল?” মিজানের বাবা মকবুল লৌহজং বাজারে ভ্যানে ফল বিক্রি করেন। চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি বলেন, "আমার ছেলে এমন কী অপরাধ করল যে, জেলে থাকতে হবে। এখন কী হবে, কবে ছাড়া পাবে?' ছেলে নিরপরাধ বলেও দাবি করেন মকবুল।
এভাবে এত মানুষকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুক ফয়সাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমরা মনে করছি, দেশে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আমরা এটাও মনে করছি, দেশে যেসব ঘটনা ঘটছে, সেটা আইনের শাসন নয়। এটা গণতান্ত্রিক পন্থাও নয়। এখন যা ইচ্ছা তাই হচ্ছে। এমন অবস্থা থাকলে দেশের পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সরকারের অনেক বেশি সহনশীল হওয়া উচিত এবং সহানুভুতিশীল হওয়া উচিত। দেশে এক সপ্তাহে যে ঘটনা ঘটে গেল, সেই ঘটনা মানুষকে হজম করতে হবে। সরকারের সঙ্গেও তাদের একটা বোঝাপড়ায় আসতে হবে। কিন্তু সেটা কিছুতেই হচ্ছে না। সরকার কী মনে করছে তা তো আমরা জানি না, তবে আমরা বাইরে থেকে যেটা বুঝতে পারছি, সেটা হলো, একটা নির্যাতনমূলক শাসনব্যবস্থা চালিয়ে এই দেশটাকে ক্ষমতায় রাখা বা ক্ষমতার আন্ডারে রাখার চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। দেশে বা দেশের বাইরেও এটার সমালোচনা হচ্ছে। এই অবস্থায় দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চিন্তিত।”
কোটা আন্দোলনের প্রতি সংহতি, আর সহিংসতার প্রতিবাদ ইউরোপে
বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানানোর পাশাপাশি সহিংসতার প্রতিবাদে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন প্রবাসীরা৷ ছবিঘরে থাকছে এরকম কিছু কর্মসূচির কথা৷
ছবি: Nahid Hasan
দ্য হেগ-এ মিছিল
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মিছিল করেছেন একদল বাংলাদেশি৷ এসময় তাদের একজনের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি- নাতনি৷’’ আরেকজন বহন করছিলেন, ‘‘বাংলাদেশের জন্য মুক্তির মিছিল’’ লেখা প্ল্যাকার্ড৷
ছবি: Ayaz Ur Rahman
ভেনিসে প্রতিবাদ
ইটালির ভেনিস শহরে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী, অধ্যাপক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা৷ তারা বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী হত্যা এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদ করেছেন৷
লাইপসিশ পৌরসভার সামনে প্রতিবাদ
কোটা সংস্কার ঘিরে সহিংসতার প্রতিবাদে লাইপসিশের রাথহাউসের সামনে সমবেত হন একদল বাংলাদেশি৷ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে যেসব প্রাণহানি হয়েছে, সেসবের বিচারের পাশাপাশি দেশটিতে বাকস্বাধীনতার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জার্মানির সহায়তা চেয়েছেন প্রতিবাদকারীরা৷
ছবি: Md Mahabur Rahman
পুলিশি বর্বরতা বন্ধের দাবি ড্যুসেলডর্ফে
জার্মানির ড্যুসেলডর্ফে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশে পুলিশি বর্বরতা বন্ধের এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বাঁচানোর আহ্বান জানানো হয়েছে৷ জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন অনেক বাংলাদেশি৷
ছবি: Musfiq Al Arafa
স্টুর্টগাটে প্রতিবাদ
স্টুর্টগাটে বাংলাদেশিদের প্রতিবাদ সভা থেকে কোটা সংস্কারে হতাহতদের জন্য ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ সেখানে একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘আমরা বিচার চাই, আমরা পরিবর্তন চাই৷’’
ছবি: Minhaz Dipon
পাডারবনে সমাবেশ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার প্রতিবাদে এবং প্রাণহানির বিচারের দাবিতে জার্মানির পাডারবন শহরে সমবেত হন একদল বাংলাদেশি৷ তাদের একজনের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘‘বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ৷’’
ছবি: Joyonta Dey
হামবুর্গে প্রতিবাদ
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে হামবুর্গে মানবন্ধনে অংশ নেয়াদের প্ল্যাকার্ডে নানারকম বক্তব্য ছিল৷ তাদের একজনের বার্তা ছিল, ‘‘সংলাপ নয়, পদত্যাগ চাই৷’’
ছবি: Nahid Hasan
বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ
‘‘বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে হত্যা এবং হামলার প্রতিবাদে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে কয়েকশ বাংলাদেশি সমবেত হন’’ বলে জানিয়েছেন তাদের একজন মুহাম্মদ মুহিব্বুল হাসান৷ প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে স্মারকলিপি প্রদান করে হামলাকারীদের শাস্তি, কোটা সংস্কার এবং সরকারের পক্ষ থেকে এর দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়৷
ছবি: Muhib Hasan
প্যারিসে মানববন্ধন
বাংলাদেশের চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ‘ন্যাশন’ চত্ত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষার জন্য আসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা৷ ‘‘দুই শতাধিক মানুষ বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি সংহতি জানান,’’ বলে জানিয়েছেন প্যারিসে বসবাসরত সাংবাদিক মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ৷
ছবি: Mohammad Arif Ullah
নুরেমবার্গে প্রতিবাদ
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার প্রতিবাদে জার্মানির নুরেমবার্গ শহরে মানববন্ধন করেন একদল প্রবাসী বাংলাদেশি৷
ছবি: Samsuzzaman Uday
ড্রেসডেনে প্রতিবাদ
জার্মানির ড্রেসডেনে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন একদল বাংলাদেশি৷ তাদের একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘নিরীহ শিক্ষার্থীদের হত্যা বন্ধ করুন৷’’
ছবি: Md Imtiaz
নর্দান সাইপ্রাসে অবস্থান কর্মসূচি
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত, সংঘর্ষের প্রতিবাদে নর্দান সাইপ্রাসেও বাংলাদেশিদের সমবেত হতে দেখা গিয়েছে৷ সেখানকার ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশিরা কোটা আন্দোলনে শহিদদের মাগফিরাত এবং আহত ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি৷ আমরা চাই ছাত্র হত্যা বন্ধ হোক, দেশে শান্তি ফিরে আসুক৷’’
ছবি: Emam Uddin
পোর্টসমাউথে প্রতিবাদ
যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন৷ সেখানে একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘শিক্ষায় রাজনীতি নয়৷’’
ছবি: Md. Rubayeth Islam
মাগডের্বুগে শিক্ষার্থীদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় যে প্রাণহানি হয়েছি তার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে জার্মানির মাগডের্বুগের বাংলাদেশি কমিউনিটি৷
ছবি: Shehab Uddin
ব্রেমেনে একাত্মতা প্রকাশ
বাংলাদেশে চলমান কোটা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একাংশ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন৷ সেখানে একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি৷’’
ছবি: Hasibul Hasan Shanto
এসেনে প্রতিবাদ
বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে জার্মানির এসেন শহরে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি মানববন্ধন করেন৷ মানববন্ধনে অংশ নেয়াদের মধ্যে অন্যতম রাজনৈতিক বিশ্লেষক জিয়া হাসান বলেন, ‘‘সবাই একমত হোন যে এটা আর কোটা সংস্কার নয়, বরং রাষ্ট্রীয় সংস্কার দরকার৷ হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সংস্কার সম্ভব নয় বলে [এখানে] সবাই শেখ হাসিনার পতন চান৷’’
ছবি: Niaz Muhit
বনে প্রতিবাদ
বাংলাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে জার্মানির বন শহরে জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন একদল প্রবাসী বাংলাদেশি৷ সেখানে একজন বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো: কবির আহমেদ বলেন, ‘‘মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারের কাছ থেকে আর কি-ইবা পাওয়ার আছে৷ তারা তো সম্পূর্ণ দেশটাই পেয়েছে স্বাধীন হিসেবে৷’’
ছবি: Md Shafaat Ullah
ছাত্র হত্যার অবসান দাবি মিউনিখে
জার্মানির মিউনিখ শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাংশ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন৷ এই কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত হোসাইন মোঃ তালিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা মিউনিখে বাংলাদেশে সংগঠিত সংঘাতের এবং ছাত্র হত্যার অবসান এবং বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছি৷’’
ছবি: Hossain Islam
ব্রান্ডেনবুর্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
জার্মানির কটবুস শহরে ব্রান্ডেনবুর্গ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত প্রায় ১০০ এর মতো শিক্ষার্থী চলমান কোটা সংস্কার ‘‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে’’ সমবেত হন৷ তাদের অনেকের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘সহিংসতা বন্ধ হোক৷’’
ছবি: Muhib Hasan
ম্যনশেনগ্লাডবাখে মানববন্ধন
জার্মানির ম্যনশেনগ্লাডবাখের হকশুলে নিধেরেইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন৷
ছবি: Rayhan Jilani
ওয়ারশতে বাংলাদেশের দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাংশ তাদের দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের ওপর ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলা এবং শিক্ষার্থীদের হত্যার প্রতিবাদে’’ বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন৷