ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে সড়কে প্রতিদিন এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)৷
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে জানতে এনায়েত উল্লাহ, তার স্ত্রী নার্গিস সামাদ, মেয়ে চাশমে জাহান নিশি ও ছেলে রিদওয়ানুল আশিক নিলয়ের নামে নিবন্ধিত যানবাহনের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে চিঠি পাঠিয়ে দুদক৷
চিঠিতে বলা হয়, এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে ঢাকা ও এর আশেপাশের বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারি ১৫ হাজার বাস থেকে দৈনিক এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের কথাও দুদকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয় বলে জানিয়েছে ডয়চে ভেলের কন্টেন পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
তবে বাস থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের এ নেতা৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন ‘‘সংগঠনের যেসব চাঁদাবাজ ছিল তাদেরকে একবছর আগেই বের করে দেওয়া হয়েছে৷ এরপর থেকে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ অন্যান্য জায়গায় আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে আসছে৷’’
দুর্নীতিতে কোন দেশের কী অবস্থান
জার্মানির বার্লিনভিত্তিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) তাদের দুর্নীতি ধারণা সূচক ২০১৯ প্রকাশ করেছে৷ এই সূচকে বাংলাদেশের দুর্নীতি পরিস্থিতি আগের মতোই রয়েছে৷ ছবিঘরে দেখুন কোন দেশের কী অবস্থান৷
ছবি: DW/C.Vieira Teixeira
সিপিআই সূচক
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স বা সিপিআই সূচকের মাধ্যমে৷ দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, গবেষক, বিশ্লেষকদের ধারণার উপর ভিত্তি করে শুন্য (উচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত) থেকে ১০০ (কম দুর্নীতিগ্রস্ত) পর্যন্ত স্কোরে সূচকটি পরিমাপ করা হয়৷
ছবি: DW/C.Vieira Teixeira
সূচকের বিষয়
ছয়টি তথ্য নিয়ে সূচকটি তৈরি৷ তার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি ও ঘুস আদান-প্রদান, স্বার্থের সংঘাত ও তহবিল অপসারণ, দুর্নীতিবিরোধী উদ্যোগ ও অর্জনে বাধা, ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক দলের স্বার্থে সরকারি পদমর্যাদার অপব্যবহার, সরকারি কাজে বিধিবহির্ভূত অর্থ আদায়, দুর্নীতি সংঘটনকারীর বিচারে সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা৷
ছবি: DW/C.Vieira Teixeira
নিউজিল্যান্ড ও ডেনমার্ক
টিআই-এর দুর্নীতি ধারণা সূচক ২০১৯ অনুযায়ী সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ নিউজিল্যান্ড ও ডেনমার্ক৷ দুই দেশেরই সমান স্কোর, ১০০-তে ৮৭৷
ছবি: Imago/Xinhua
ফিনল্যান্ড
কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে নর্ডিক দেশ ফিনল্যান্ড৷ তাদের স্কোর ৮৬৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/D. Goldman
সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইডেন
নিউজিল্যান্ড, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ডের পরে চতুর্থ অবস্থানে সুইজারল্যান্ড৷ দেশটির স্কোর ৮৫৷ একই স্কোর পেয়েছে সিঙ্গাপুর ও সুইডেনও৷
ছবি: picture-alliance/robertharding
নরওয়ে
সপ্তম অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে৷ এই নর্ডিক দেশের স্কোর ৮৪৷
ছবি: Getty Images/AFP/T. Charlier
নেদারল্যান্ডস
৮২ পেয়ে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে নেদারল্যান্ডস৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লুক্সেমবুর্গ ও জার্মানি
লুক্সেমবুর্গের স্কোর ৮০৷ একই স্কোর জার্মানিরও৷ নবম অবস্থানে রয়েছে দেশ দুটি৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/M. Haddenhorst
সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত
১৮০ টি দেশের মধ্যে সবার নীচে সোমালিয়া৷ সাব সাহারা আফ্রিকার দেশটির স্কোর মাত্র নয়৷ সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে সোমালিয়ার পর রয়েছে ইয়েমেন, ভেনেজুয়েলা, ইকুইটোরিয়াল গিনি, সুদান ও আফগানিস্তান৷
ছবি: PHIL MOORE/AFP/Getty Images
বাংলাদেশের স্কোর অপরিবর্তিত
সিপিআই ২০১৯-এ বাংলাদেশের স্কোর ২৬, অর্থাৎ একেবারে আগের বছরের সমান৷ তবে দেশের ক্রমে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়েছে৷ তালিকায় নীচের দিক থেকে ১৪-তে রয়েছে বাংলাদেশ৷ একই অবস্থানে আছে অ্যাঙ্গোলা, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস, ইরান, মোজাম্বিক ও নাইজেরিয়া৷ সব মিলিয়ে ১৮০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬৷
সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নীচে রয়েছে শুধু আফগানিস্তান৷ সূচকে তাদের অবস্থান ১৭৩৷ অন্যদিকে এই অঞ্চলে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ভুটান (২৫তম)৷ এরপর রয়েছে ভারত (৮০তম), শ্রীলঙ্কা (৯৩তম), নেপাল (১১৩তম), পাকিস্তান (১২০তম), মালদ্বীপ (১৩০তম), বাংলাদেশ (১৪৬তম)৷
ছবি: AP
11 ছবি1 | 11
গত ১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে এনায়েতের বিরুদ্ধে ঢাকার পরিবহন থেকে ‘দৈনিক এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা' আদায়ের অভিযোগ করেন সড়ক পরিবহন সমিতির সাবেক নেতা ইসমাইল হোসেন বাচ্চু৷
অভিযোগের প্রতিবাদে ২৭ অক্টোবর করা সংবাদ সম্মেলনে এনায়েত বলেন ‘‘চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা৷ ঢাকায় এত টাকা চাঁদাবাজি করার সুযোগ নেই৷’’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহর মালিকানাধীন এনা পরিবহনের বাস ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে৷