জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে বারো হাজারের বেশি মানুষ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন৷ দেশটির পূর্বাঞ্চলে উগ্র ডানপন্থিদের সমাবেশের দুই সপ্তাহ পরে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শরণার্থীসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে আশ্রয় নেয়া ইরাকি এবং আফগান শরণার্থীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো বন্ধের দাবিতে কোলন, ডর্টমুন্ড এবং গেলসেনকিয়রশেন শহরে রবিবার বারো হাজারের মতো মানুষ রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন৷ জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়া ওই দুই দেশের মানুষদের ফেরত পাঠানোর বিরোধিতা করা অ্যাক্টিভিস্টরা মনে করেন, দেশ দু'টিতে বসবাস এখনো বিপজ্জনক৷ তাই, ইরাক এবং আফগানিস্তানের মতো বিপজ্জনক দেশে শরণার্থীদের যাতে ফেরত পাঠানো না হয় সেই দাবি জানিয়েছেন তাঁরা৷
জার্মানিতে শান্তির পক্ষে মুসলমানদের মিছিল
কেউ এসেছেন সিরিয়া যুদ্ধের বিভীষিকার দেয়াল ভেদ করে, কেউ জার্মানিতে বাস করছেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম৷ মুসলমানদের নামে চলা সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানাতে সবাই কোলনে মিলেছেন এক কাতারে৷ যেখানে সংহতি জানিয়েছেন ভিন্ন ধর্মের মানুষও৷
ছবি: DW/S. Niloy
সিহাম, কোলন
‘‘আমি চাই, এই সন্ত্রাসের অবসান হোক৷ সন্ত্রাসের পথ ভুল পথ৷ উদার মুসলিমদের উচিত এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আরো সরব হওয়া৷ এ জন্য তাদেরকে ঘর থেকে বের হতে হবে৷ তাদেরকে বলতে হবে, ওরা যেটা করছে, এটা আমাদের ইসলাম নয়৷ কোরআন এটা বলে না৷ কোরআন শান্তির গ্রন্থ৷ তাই এর অনুসারীদেরকেও শান্তিপূর্ণ থাকতে হবে৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
ইউদানুর কারাকাস, তুর্কি বংশদ্ভূত জার্মান
‘‘সন্ত্রাসের বিষয়ে আমার যে অবস্থান সেটা জানান দিতেই আমি এখানে এসেছি৷ যদিও আমি একজন মুসলিম, কিন্তু জীবন পদ্ধতিতে আমি কঠোরভাবে ইসলাম অনুসরণ করি না৷ তারপরও মুসলিম হিসাবে আমাকে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
হাফসা
‘‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলতে আমরা এখানে এসেছি৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
বেইজা
‘‘আমরা সন্ত্রাসের পক্ষে নই৷ যারা সন্ত্রাসের পক্ষে থাকে, ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে, আমরা তাদের দলে নই৷ ইসলাম শান্তিপূর্ণ ধর্ম৷ আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বাস করতে চাই৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
প্রিয়াম শঙ্কর ঘোষ, জার্মানি প্রবাসী বাংলাদেশি
‘‘মুসলমানদের আলাদা করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বলার কিছুই নাই৷ কোনো সন্ত্রাসের জন্য কোন মুসলিমকে দায়ী করারও কোনো কারণ নাই৷ এ কারণে আমি এ ধরনের প্রতিবাদের পক্ষে না৷ মুসলমান হিসেবে এভাবে সমাবেশ করলে অস্ত্রটা তারাই পেয়ে যায়৷ সাময়িকভাবে এটাকে ইতিবাচক মনে হলেও এটা আসলে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করে৷ দীর্ঘ মেয়াদে ফল পেতে হলে তাদেরকে এটেনশন দেয়া যাবে না৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
মো. বেলাল হোসেন, জার্মানি প্রবাসী বাংলাদেশি
‘‘কোনো একটা সন্ত্রাসী হামলা হলেই দায় চলে আসে মুসলমানদের উপর৷ এভাবে দোষারোপ আমরা চাই না৷ সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নাই৷ তারা কেবলই সন্ত্রাসী৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
হেইদা
‘‘পৃথিবীকে এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে৷ শান্তির জন্য সকলকে একত্রে লড়তে হবে৷ আমি এই ধরনের একটা উদ্যোগের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছি৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেনে চলে এসেছি৷ কেনো তাদেরকে দোষারোপ করা হয়৷ আমি তো সব জায়গায় খুবই বন্ধুত্বপূর্ণভাবে মুসলিমদেরকে পেয়েছি৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
আম্মার, জার্মানি প্রবাসী সিরিয়ান
‘‘সিরিয়ার সরকার, আইসিস সবাই সন্ত্রাস করে৷ এদেরকে আলাদা করে দেখার কিছু নাই৷ সিরিয়ার মুসলমানদেরকে কেউ এই দিকে ঠেলে দেয়, কেউ ওই দিকে৷ আমরা এদের কাউকেই পছন্দ করি না৷ আমরা শান্তি চাই৷ আমরা অন্য ধর্মের মানুষকেও পছন্দ করি৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
বিলাল, জার্মানি প্রবাসী সিরিয়ান
‘‘আমরা দেখাতে চাই, ধর্মের সাথে সন্ত্রাসের কোনো সম্পর্ক নেই৷ সন্ত্রাস মানে সন্ত্রাস, সেটা আইসিস করলেও সন্ত্রাস৷ সিরিয়ার সরকার করলেও সন্ত্রাস৷ সব সন্ত্রাসকে না বলতে হবে৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
সামা, ফ্রাঙ্কফুট
‘‘আমরা একটা বার্তা দিতে চাই, আমরা জানাতে চাই যে, আমরা সন্ত্রাসী নই৷ আমরা শান্তি চাই৷ আমরা কোনোভাবেই শান্তি বিরোধী নই৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
ইমান, ফ্রাঙ্কফুট
‘‘আমি একজন মুসলমান হিসেবে জার্মানির বর্তমান পরিবেশ মেনে নিতে পারি না৷ একটা সাধারণীকরণ রয়েছে, তুমি যদি মুসলিম হও, তাহলে অটোমেটিকালি তুমি একজন সন্ত্রাসীও৷ অনেকের মধ্যেই এটা আছে৷ এটার প্রতিবাদ করতেই আমি ফ্রাঙ্কফুট থেকে এখানে এসেছি৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
11 ছবি1 | 11
‘কোলন টেইকস এ স্টান্ড!' শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোলনের রক্ষণশীল মেয়র হেনরিয়েটে রিকার, যাঁকে ছুরিকাহত করেছিল অভিবাসীবিরোধী এক উগ্রপন্থি৷ রবিবারের কর্মসূচি থেকে শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো বন্ধের দাবির পাশাপাশি জার্মানির কেমনিৎস শহরে সম্প্রতি উগ্র ডানপন্থিদের সহিংসতারপ্রতিবাদও জানানো হয়েছে৷ বর্ণবাদ এবং বিদেশি-ভীতির কোনো স্থান জার্মানিতে নেই বলেও স্লোগান দিয়েছেন প্রতিবাদকারীরা৷
কোলনে প্রতিবাদকারীদের হাতে ‘সমুদ্র থেকে মানুষ উদ্ধার আমাদের দায়িত্ব' এবং ‘জাতীয়তাবাদ একটি ভুল' শীর্ষক প্ল্যাকার্ডও দেখা গেছে৷
প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের মতো সংঘাতপ্রবণ একটি দেশকে ‘নিরাপদ' ঘোষণা করে জার্মানিতেই তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছে ম্যার্কেল সরকার৷ সম্প্রতি জার্মানি থেকে জোর করে ফেরত পাঠানো এক আফগান কাবুলে পৌঁছানোর পর আত্মহত্যা করায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়৷ এমনকি নিজের ৬৯তম জন্মদিনে ৬৯জন শরণার্থীকে নিজ দেশ ফেরত পাঠানো নিয়ে এক কৌতুক করেও সমালোচিত হন জার্মানির রক্ষণশীল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার৷
শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো ঠেকাতে মাঝেমাঝে বিভিন্ন বিমানবন্দরেও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন জার্মানরা৷ তাঁদের সেসব কর্মসূচিতে কিছুটা কাজও হয়৷ কখনো কখনো পাইলটরা শরণার্থীদের বিমানে তুলতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁদের ফেরত পাঠানো স্থগিত থাকে৷
উল্লেখ্য, কোলনে সমাবেশ ঘিরে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা করা হলেও বাস্তবে তেমনটা হয়নি৷ বরং অনেকটা উৎসবে পরিণত হয় সমাবেশটি৷
জার্মানিতে শান্তির পক্ষে মুসলমানদের মিছিল
কেউ এসেছেন সিরিয়া যুদ্ধের বিভীষিকার দেয়াল ভেদ করে, কেউ জার্মানিতে বাস করছেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম৷ মুসলমানদের নামে চলা সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানাতে সবাই কোলনে মিলেছেন এক কাতারে৷ যেখানে সংহতি জানিয়েছেন ভিন্ন ধর্মের মানুষও৷
ছবি: DW/S. Niloy
সিহাম, কোলন
‘‘আমি চাই, এই সন্ত্রাসের অবসান হোক৷ সন্ত্রাসের পথ ভুল পথ৷ উদার মুসলিমদের উচিত এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আরো সরব হওয়া৷ এ জন্য তাদেরকে ঘর থেকে বের হতে হবে৷ তাদেরকে বলতে হবে, ওরা যেটা করছে, এটা আমাদের ইসলাম নয়৷ কোরআন এটা বলে না৷ কোরআন শান্তির গ্রন্থ৷ তাই এর অনুসারীদেরকেও শান্তিপূর্ণ থাকতে হবে৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
ইউদানুর কারাকাস, তুর্কি বংশদ্ভূত জার্মান
‘‘সন্ত্রাসের বিষয়ে আমার যে অবস্থান সেটা জানান দিতেই আমি এখানে এসেছি৷ যদিও আমি একজন মুসলিম, কিন্তু জীবন পদ্ধতিতে আমি কঠোরভাবে ইসলাম অনুসরণ করি না৷ তারপরও মুসলিম হিসাবে আমাকে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
হাফসা
‘‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলতে আমরা এখানে এসেছি৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
বেইজা
‘‘আমরা সন্ত্রাসের পক্ষে নই৷ যারা সন্ত্রাসের পক্ষে থাকে, ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে, আমরা তাদের দলে নই৷ ইসলাম শান্তিপূর্ণ ধর্ম৷ আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বাস করতে চাই৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
প্রিয়াম শঙ্কর ঘোষ, জার্মানি প্রবাসী বাংলাদেশি
‘‘মুসলমানদের আলাদা করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বলার কিছুই নাই৷ কোনো সন্ত্রাসের জন্য কোন মুসলিমকে দায়ী করারও কোনো কারণ নাই৷ এ কারণে আমি এ ধরনের প্রতিবাদের পক্ষে না৷ মুসলমান হিসেবে এভাবে সমাবেশ করলে অস্ত্রটা তারাই পেয়ে যায়৷ সাময়িকভাবে এটাকে ইতিবাচক মনে হলেও এটা আসলে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করে৷ দীর্ঘ মেয়াদে ফল পেতে হলে তাদেরকে এটেনশন দেয়া যাবে না৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
মো. বেলাল হোসেন, জার্মানি প্রবাসী বাংলাদেশি
‘‘কোনো একটা সন্ত্রাসী হামলা হলেই দায় চলে আসে মুসলমানদের উপর৷ এভাবে দোষারোপ আমরা চাই না৷ সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নাই৷ তারা কেবলই সন্ত্রাসী৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
হেইদা
‘‘পৃথিবীকে এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে৷ শান্তির জন্য সকলকে একত্রে লড়তে হবে৷ আমি এই ধরনের একটা উদ্যোগের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছি৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেনে চলে এসেছি৷ কেনো তাদেরকে দোষারোপ করা হয়৷ আমি তো সব জায়গায় খুবই বন্ধুত্বপূর্ণভাবে মুসলিমদেরকে পেয়েছি৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
আম্মার, জার্মানি প্রবাসী সিরিয়ান
‘‘সিরিয়ার সরকার, আইসিস সবাই সন্ত্রাস করে৷ এদেরকে আলাদা করে দেখার কিছু নাই৷ সিরিয়ার মুসলমানদেরকে কেউ এই দিকে ঠেলে দেয়, কেউ ওই দিকে৷ আমরা এদের কাউকেই পছন্দ করি না৷ আমরা শান্তি চাই৷ আমরা অন্য ধর্মের মানুষকেও পছন্দ করি৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
বিলাল, জার্মানি প্রবাসী সিরিয়ান
‘‘আমরা দেখাতে চাই, ধর্মের সাথে সন্ত্রাসের কোনো সম্পর্ক নেই৷ সন্ত্রাস মানে সন্ত্রাস, সেটা আইসিস করলেও সন্ত্রাস৷ সিরিয়ার সরকার করলেও সন্ত্রাস৷ সব সন্ত্রাসকে না বলতে হবে৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
সামা, ফ্রাঙ্কফুট
‘‘আমরা একটা বার্তা দিতে চাই, আমরা জানাতে চাই যে, আমরা সন্ত্রাসী নই৷ আমরা শান্তি চাই৷ আমরা কোনোভাবেই শান্তি বিরোধী নই৷’’
ছবি: DW/S. Niloy
ইমান, ফ্রাঙ্কফুট
‘‘আমি একজন মুসলমান হিসেবে জার্মানির বর্তমান পরিবেশ মেনে নিতে পারি না৷ একটা সাধারণীকরণ রয়েছে, তুমি যদি মুসলিম হও, তাহলে অটোমেটিকালি তুমি একজন সন্ত্রাসীও৷ অনেকের মধ্যেই এটা আছে৷ এটার প্রতিবাদ করতেই আমি ফ্রাঙ্কফুট থেকে এখানে এসেছি৷’’