1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হলিউড পরিচালক হিচকক

মারুফ আহমদ২০ জুন ২০১৩

খুব অল্প বয়সে থানার হাজতে বন্দি থাকার ঘটনাটি তাঁকে ভয়াক্রান্ত করেছিল৷ পরবর্তিকালে সেই ভয়কে পুঁজি করেই বিশ্বের অসংখ্য দর্শকদের রোমাঞ্চিত করেছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিচকক৷

ছবি: UNIVERSAL

পুরো নাম: স্যার অ্যালফ্রেড যোসেফ হিচকক৷

ছবি: AP

জন্ম : ১৩ই আগস্ট, ১৮৯৯, লেইটনস্টোন, ইংল্যাণ্ড

মৃত্যু : ২৯শে এপ্রিল, ১৯৮০, লস এঞ্জেলেস

পেশা: চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার

বাবা: উইলিয়াম হিচকক

মা: অ্যামা জেইন

স্ত্রী: অ্যালমা রেভিল (১৯২৬-১৯৮০)

উল্লেখযোগ্য ছায়াছবি: সাইকো, মার্নি, দ্য বার্ডস

শৈশবে একবার খুব দেরি করে বাড়ি ফিরেছিলেন৷ বাবা রাগ করে একটি চিঠি লিখে বললেন, স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে তাঁর বন্ধুর হাতে দিতে৷ বাবার সেই পুলিশ বন্ধু চিঠিটা পড়েই হাজতে আটকে দিলেন অ্যালফ্রেডকে৷ দশ মিনিট পরই অবশ্য ছেড়ে দিয়ে বললেন, ‘‘কম বয়সি যারা দেরি করে ঘরে ফেরে, তাদের এরকমই শাস্তি হয়৷'' সেই থেকে পুলিশের প্রতি হিচককের ভয়৷ এ কারণে কখনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেননি, বলতেন, ‘‘গাড়ী চালালেই তো পুলিশের সংস্পর্শে যেতে হবে৷''

‘ভার্টিগো’ছবি: UNIVERSAL

জীবনের শেষ অবধি হিচকক ভুলতে পারেননি সেই অভিজ্ঞতা, প্রায়ই উঁকি দিয়েছে তাঁর ছবিতে বিভিন্ন ভাবে৷ যেমন, ‘স্পেলবাউন্ড' ছবির প্রধান চরিত্র একজন ডাক্তার৷ ছোটবেলায় মানসিক আঘাতের ফলে তিনি স্নায়ুরোগে আক্রান্ত এবং প্রায়ই ভাবেন তিনি নিজে একজন হত্যাকারী৷ একসময় দেখা যায় তিনি তা নন৷ প্রায় একই আঙ্গিকের বিখ্যাত ছায়াছবি ‘মার্নি'৷ এ ছবির প্রধান নারী চরিত্রও মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত৷ ছবির পরিসমাপ্তিতে দেখা যায় তিনি সত্যিই খুব কম বয়সে এক অনিবার্য পরিস্থিতিতে একজন মানুষ হত্যা করেছিলেন৷ হিচককের আরো কিছু ছায়াছবি এধরণের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ধর্মী৷ সবচেয়ে সাড়া জাগানো ছবি ‘সাইকো'৷ কিন্তু এই ছবিকে ঠিক মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ধর্মী বলা যাবে না৷ যদিও ছবির প্রধান চরিত্র –মা ছেলের বিশৃঙ্খল সম্পর্কে চিত্তবিকারগ্রস্ত এক মানুষ৷ তিনি নির্মম এক হত্যাকারী৷ প্রায় একই ধরণের ছবি ‘দ্য বার্ডস'৷ আগ্রাসী এক ঝাঁক পাখি আক্রমণ করে একটি ছোট্ট শহরের বাসিন্দাদের৷ তাঁর বহু ক্লাসিক ছবির ‘মোটিফ' মনস্তাত্ত্বিক, জীবনে ফিরে আসা ভয়, অপরাধ ও অনিশ্চয়তাবোধ এবং নির্দোষীকে হেনস্থা কেন্দ্রিক৷ হিচককের ছবিতে রোমাঞ্চ আর শিহরণের সঙ্গে আছে কিছুটা সূক্ষ্ম হাস্যরস৷ ছবির শৈল্পিক দিকও গুরুত্ব পেয়েছে সমানভাবে৷

‘মার্নি’ ছবির একটি দৃশ্যছবি: UNIVERSAL

হিচকক লেইটনস্টোন শহরে বড় হয়েছেন কিছুটা রক্ষণশীল পরিবেশে৷ শাক সব্জি ব্যবসায়ী বাবার সাথে তাঁর খুবএকটা নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি৷ পড়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং৷ পাশাপাশি নিয়েছৈন অঙ্কন চিত্র ও শিল্পকলার শিক্ষা৷ ১৯১৫ সালে একটি টেলিগ্রাফ সংস্থায় চাকরি পান৷সেখানে মাসিক ম্যাগাজিনে ‘হিচ' নামে  প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম রোমাঞ্চকর ছোট গল্প৷ এ সময় ফুলেফেঁপে উঠছিল নির্বাক চলচ্চিত্র শিল্প৷ অঙ্কনে, বিশেষ করে লিপিফলকে পারদর্শী হওয়ায় এ অঙ্গনে ঢোকার সুযোগ পান৷ তারপর থেকেই ধীরে ধীরে সহকারী পরিচালনা, চিত্রনাট্য এবং সেট সেটিংয়ের কাজ শুরু করেন৷

‘দি বার্ডস’ছবি: picture alliance/United Archives

১৯২৫ সালে মুক্তি পায় নিজের পরিচালিত প্রথম নির্বাক ছায়াছবি৷ পরের বছর থেকেই শুরু হয় তাঁর সফল চলচ্চিত্র জীবন৷ নির্বাক থেকে সবাকে পা দিয়েই সিনেমার কলাকৌশলে নতুন নতুন উন্নতির পথ আবিষ্কার করেন হিচকক৷ ১৯৩৯ সালে চলে যান হলিউডে৷ সেখানেই ছিলেন জীবনের শেষ অবধি৷ তাঁর প্রায় ছয় দশকের চলচ্চিত্রের জীবনে ৫৩ টিরও বেশি ছায়াছবি উপহার দিয়েছেন চলচ্চিত্র অনুরাগীদের৷ একটা বিশেষত্ব আছে হিচককের ছবিতে৷ প্রায় প্রতিটি ছবিরই প্রথম দিকে কোনো না কোনো দৃশ্যে দেখা যায় তাঁকে৷ হয়তো রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, অথবা খবরের কাগজ কিনছেন, কিংবা  স্টেশনে দাড়িয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করছেন৷ হিচকক বলেছিলেন, ‘আমার জন্যই দর্শকরা ছবি দেখতে যান, অতএব, আমাকেও তো তাঁদের দেখতে হবে৷'' টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবেও জনপ্রিয় ছিলেন হিচকক৷

‘সাইকো’ছবি: AP

বিংশ শতাব্দির সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র নির্মাতা হিচকককে ১৯৮০ সালে, তাঁর মৃত্যুর তিন মাস আগে ইংলেণ্ডের রাণী এলিজাবেথ নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন৷ আজো অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতার আদর্শ স্যার অ্যালফ্রেড যোসেফ হিচকক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ