1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঢাকায় আহত ৬ হাজারের বেশি, আসামি দুই লাখের বেশি

২৯ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীতে সংঘর্ষ ও সংঘাতে ৬ হাজার ৭০৩ জন আহত হয়েছে বলে জানাচ্ছে দৈনিক প্রথম আলো৷ আহতরা ৩১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷

আহত ব্যক্তিকে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন৷
বেশি মানুষ হাসপাতালে গেছেন ছররা গুলি, রাবার বুলেট বা বুলেটবিদ্ধ হয়ে৷ছবি: Mahmud Zaman Ovi

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, এসব রোগী ১৬ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে হাসপাতালে গেছেন৷

ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার প্রথম আলো জানায়, তাদের প্রতিনিধিরা ২৩ থেকে ২৭ জুলাই রাজধানীর মোট ৩৮টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ এর মধ্যে সরকারি হাসপাতাল ৯টি, বাকি ২৯টি বেসরকারি হাসপাতাল৷

বেশি মানুষ হাসপাতালে গেছেন ছররা গুলি, রাবার বুলেট বা বুলেটবিদ্ধ হয়ে৷ এছাড়া ইটপাটকেল ও লাঠি বা রডের আঘাতে আহত হয়ে কিছু মানুষ হাসপাতালে গিয়েছিলেন৷ আবার কেউ কেউ গেছেন কাঁদানে গ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে৷

সংঘর্ষে আহত সবচেয়ে বেশি মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান বা পঙ্গু হাসপাতালে৷ ২৩ জুলাই হাসপাতাল থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা যায়, এই হাসপাতালে ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ১ হাজার ২৬৯ জন চিকিৎসা নেন৷ এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ ছিলেন ২৩১ জন৷ হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় ৫৩৭ জনকে৷ অর্থাৎ এই হাসপাতালে আসা ৪২ শতাংশ রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসার দরকার ছিল৷

২৩ জুলাই বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ১ হাজার ৭১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন৷

১৫০ মৃত্যুর বিশ্লেষণ

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী বিক্ষোভ-সংঘর্ষে বেশি মৃত্যু হয়েছে শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষের৷ নিহত ব্যক্তিদের ৭৫ শতাংশ শিশু, কিশোর ও তরুণ৷ হাসপাতাল, স্বজন ও মরদেহ নিয়ে আসা ব্যক্তিদের সূত্রে সংঘর্ষ-সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ এর মধ্যে বয়স, পেশা ও আঘাতের ধরন এবং কোন এলাকায় আহত অথবা নিহত হয়েছিলেন, তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে ১৫০ জনের৷ এর মধ্যে ১১৩ জন শিশু, কিশোর ও তরুণ৷

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নিহতদের বেশির ভাগের শরীরে প্রাণঘাতী গুলির ক্ষতচিহ্ন ছিল৷ ছররা গুলি বা প্যালেট, রাবার বুলেটের ক্ষতচিহ্ন৷ অন্যান্য আঘাত কম৷ অনেক ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত হয়েছে, তবে প্রতিবেদন তৈরি হয়নি৷ অনেক ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন৷

বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে ১৯ জন শিশু ও কিশোর৷ এর মধ্যে চার বছর বয়সি শিশুও রয়েছে৷ ১৮ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে ৯৪ জন৷ ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সি ২১ জন৷ ৪০ বা এর বেশি বয়স ১৬ জনের৷

১৫০ জনের মধ্যে দোকান, হোটেল, বিক্রয়কেন্দ্র ইত্যাদির কর্মী ২৫ জন, দোকানদার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকার ১৬ জন, দিনমজুর ও সমজাতীয় পেশায় রয়েছেন ১১ জন, গাড়ি, ট্রাক, রিকশা-ভ্যানচালক ও সহকারী ১৩ জন এবং পোশাক কারখানার শ্রমিক ও কর্মী ৫ জন৷ চাকরিজীবী ও অন্যান্য পেশায় রয়েছেন ২৭ জন৷ এর মধ্যে একজন চিকিৎসক৷

বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, শ্রমজীবী মানুষেরা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও অন্যান্য আর্থসামাজিক কারণে বিক্ষোভে নেমেছিলেন৷ বাংলাদেশে প্রায় দেড় বছর ধরে মূল্যস্ফীতি চড়া, ১০ শতাংশের কাছাকাছি৷ নিহতের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য ও একজন আনসার সদস্যও রয়েছেন৷ সাংবাদিক মারা গেছেন চারজন৷

কলকাতায় এখনো ‘বন্দি’ কয়েক হাজার বাংলাদেশি

05:27

This browser does not support the video element.

ঢাকায় আসামি ২ লাখের বেশি

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয়েছে প্রায় ২০০ মামলা৷ এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে দুই লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে, যাদের অধিকাংশই অজ্ঞাত৷

প্রায় সব মামলাই পুলিশের দায়ের করা৷ নথি থেকে জানা যায়, অন্তত ১৬টি মামলার আসামি ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার মানুষ৷ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৫০টি থানায় গতকাল পর্যন্ত ২২৯টি মামলা হয়েছে৷ গত ১৭ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ১৭৮টি মামলা সংক্রান্ত নথি হাতে পেয়েছে ডেইলি স্টার৷ এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ২ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৪ জন৷ এর মধ্যে নামীয় আসামি মাত্র ১ হাজার ৩১০ জন৷ বাকি ৫১টি মামলায় কতজন আসামি তা জানা যায়নি৷

মামলায় অজ্ঞাত আসামি মানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যাকে খুশি তাকে গ্রেপ্তারের সুযোগ থেকে যাওয়া৷ পুলিশ ৬০টি মামলায় কোনো আসামির নাম বা নম্বর উল্লেখ করেনি এবং অন্তত দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০ হাজার জনকে আসামি করেছে৷ এই দুই মামলার একটি হয় গত ১৮ জুলাই মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সহিংসতার ঘটনায়৷ অপরটি গত ২১ জুলাই আজিমপুরে নাশকতার ঘটনায় লালবাগ থানায় মামলা করা হয়৷ আসামিরা অজ্ঞাতনামা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী৷

গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৯ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ৷ এছাড়া একটি মামলার আসামি আট হাজার, দুটি মামলায় সাত হাজার, ছয় হাজার আসামির বিরুদ্ধে সাতটি ও পাঁচ হাজার আসামির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়েছে৷ আসামিদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে জমায়েত, দাঙ্গা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা এবং সম্পদের ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়েছে৷

১৭ জুলাই থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে গতকাল অন্তত ১৫৮টি মামলায় গতকাল ৯৮ জনসহ ২ হাজার ৫০৬ জনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ৷

১০ দিনে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি অর্ধেকে নেমেছে

স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ২০০ থেকে ৩০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়৷ কিন্তু গত ১০ দিন ধরে এই স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে৷

বেনাপোলের ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য জানিয়েছেন৷ তিনি জানান, বর্তমানে আমদানি ট্রাকের সংখ্যা কমে ২০০ থেকে ৩০০ ও রপ্তানি কমে ৫০ থেকে ১০০ ট্রাকে এসেছে৷

এপিবি/এসিবি (দৈনিক প্রথম আলো/ডেইলি স্টার বাংলা)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ