1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্রে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা

১৮ নভেম্বর ২০২১

কয়েক দশক আগের চলচ্চিত্রে আজকের স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের পূর্বাভাস দেখলে বিস্ময় জাগতে পারে বৈকি৷ কিন্তু কল্পবিজ্ঞানের চাহিদা মেটাতে চলচ্চিত্র শিল্প এবং প্রযুক্তি জগত এমন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে চলেছে৷

Filmstudios Babelsberg, Tonkreuz
ছবি: picture-alliance/ZB/N. Bachmann

কল্পনা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে কল্পবিজ্ঞানভিত্তিক চলচ্চিত্র শিল্প বিশাল মুনাফা করে আসছে৷ ১৯২৭ সালে সেই প্রবণতা শুরু হয়েছিল৷ জার্মানির বার্লিনের কাছে পট্সডাম শহরে ইউএফএ স্টুডিওতে ‘মেট্রোপলিস' নামের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র তৈরি হয়৷ কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর অন্যতম আয়োজক হিসেবে

নিল্স ভার্নেকে বলেন, ‘‘সেই চলচ্চিত্রে ভবিষ্যতের এক শহর এবং শহরের নীচে পাতাল জগতে নিপীড়িত শ্রমিকদের হাল তুলে ধরা হয়েছিল৷ সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা হলো, ছবিটি আসলে একেবারেই বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি৷ মূল সংস্করণটির কারণে জার্মানির বিনিয়োগকারী সংস্থা হিসেবে ইউএফএ ধসে যেতে বসেছিল৷''

অনেক পরিশ্রম ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে গোটা সেটের ক্ষুদ্র সংস্করণ তৈরি করতে হয়েছিল৷ আজকের মাপকাঠিতে চলচ্চিত্রের বাজেট ছিল তিন থেকে চার কোটি ইউরো৷ সে যুগে এমন অংক কল্পনাই করা যেত না৷

আজকের যুগে ‘অবতার'-এর মতো চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট কম্পিউটারের মাধ্যমেই সৃষ্টি করা হয়৷ কল্পবিজ্ঞান চিরকাল চলচ্চিত্র শিল্পকে নতুন প্রযুক্তির দিকে ঠেলে এসেছে৷ আজও স্পেশাল এফেক্টের ক্ষেত্রে ‘মেট্রোপলিস' চলচ্চিত্রকে এক মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা হয়৷

‘স্টার ওয়ার্স' চলচ্চিত্র সিনেমা হলে অডিও বা ধ্বনির ক্ষেত্রে এক মানদণ্ড স্থির করে দিয়েছিল৷ প্রথম বার দর্শক সাউন্ডট্র্যাকের মাধ্যমে ছবির মধ্যে ডুব দেবার সুযোগ পেয়েছিলেন৷ তারপর ‘অবতার' নামের চলচ্চিত্র থ্রিডি প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিনব অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছিল৷

এমন সব চলচ্চিত্র শুধু আমাদের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা বদলে দেয়নি৷ সেগুলি ভবিষ্যতের জগতকে বড় পর্দায় নিয়ে এসেছিল৷ সেই স্বপ্ন পূরণ করতে কয়েক বছরের বেশি সময় লাগেনি৷ ভার্নেকে বলেন, ‘‘১৯৬৮ সালে নির্মিত ‘টু থাউজেন্ড ওয়ান – এ স্পেস ওডিসি' নামের চলচ্চিত্র দেখে থাকলে হয়তো মনে পড়বে যে মহাকাশযানের দুই মহাকাশচারীর হাতে ট্যাবলেট দেখা যাচ্ছে৷ তাঁরা শুধু সেটি সোজা রেখে পর্দার দিকে তাকাচ্ছেন৷ এছাড়া কোনো তফাত নেই৷ সেগুলি এমনকি আজকের ট্যাবলেটের তুলনায় আরও ভালো দেখতে৷ স্টার ট্রেক সিরিজে কমিউনিকেটর নামের এক ফ্লিপ ডিভাইস ছিল৷ এই শতাব্দীর প্রথম দশকের শুরুর দিকে ফ্লিপ ফোনের কথা সবার মনে আছে৷ অর্থাৎ, সেটাও বাস্তব হয়ে উঠেছিল৷''

চলচ্চিত্র ও মিডিয়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে ডেনিস নেভিয়াক মনে করেন, ‘‘কল্পবিজ্ঞান অনেক কিছুর আগাম আভাস দিয়েছে৷ টু থাউজেন্ড ওয়ান – এ স্পেস ওডিসি' চলচ্চিত্রে মহাকাশযানে ‘হ্যাল-নাইন থাউজেন্ড' নামের কম্পিউটারের কথা ভাবুন৷ হ্যাল অ্যালেক্সার মতো আধুনিক যুগের ভার্চুয়াল ভয়েস অ্যাসিস্টেন্টগুলির পূর্বাভাস দিয়েছিল৷ আমাদের মধ্যে অনেকের বৈঠকখানায় সেই প্রযুক্তি রয়েছে৷ তবে সৌভাগ্যবশত সেগুলি খুনি হয়ে ওঠেনি৷''

কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর অন্যতম আয়োজক নিল্স ভার্নেকে বলেন, ‘‘আজকের বেশিরভাগ সায়েন্স ফিকশন চলচ্চিত্রের বিশাল বাজেট থাকে৷ অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও জটিল কর্মযজ্ঞ সত্ত্বেও এমন ছবি থেকে মুনাফার অংক কম নয়৷''

বক্স অফিসে অন্য কোনো ছবি ‘অবতার'-এর মতো সাফল্য পায়নি৷ মুনাফার অংক ছিল প্রায় ২৪০ কোটি ইউরো৷ দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে ‘অ্যাভেঞ্জার্স – এন্ডগেম'৷ তৃতীয় স্থানে ‘টাইট্যানিক'৷ তারপরই ‘স্টার ওয়ার্স' সিরিজের একটি কল্পবিজ্ঞান ছবির স্থান৷

তবে আসল আয়ের উৎস মার্চেন্ডাইসিং, অর্থাৎ চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্য৷ স্টার ওয়ার্স সিরিজের মূল ছবিগুলি প্রথম বার এমন আয়ের পথ খুলে দিয়েছিল৷ ডেনিস নেভিয়াক মনে করেন, ‘‘এই সব জটিল ও বিশাল জগত পণ্য বিক্রির নানা সুযোগ করে দেয়৷ বলতে গেলে অনুরাগীদের এমন পণ্য কিনতে বাধ্য করে৷ সে কারণে কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র থেকে মার্চেন্ডাইজিং বাবদ আয়ের যথেষ্ট সুযোগ থাকে৷''

এ ক্ষেত্রে ‘স্টার ওয়ার্স' সিরিজের অবস্থান একেবারে শীর্ষে৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই সাইফাই এপিক গোটা বিশ্বে প্রায় ৫,৮০০ কোটি ইউরো আয় করেছে৷

মার্তা গ্রুদসিনস্কা/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ