1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোন পথে ঢাকায় জুয়ার মেশিন, জানে না কেউ

শহীদুল ইসলাম
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঢাকার ক্যাসিনোগুলোতে জুয়ার মেশিন কোথা থেকে, কীভাবে আনা হয়েছে কেউ কিছু বলতে পারছেন না৷ ধারণা করা হচ্ছে, অন্য কোনো পণ্য আমদানির সময় কৌশলে জুয়া খেলার এসব সরঞ্জাম বাংলাদেশে আনা হয়েছে এবং এর সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারাও জড়িত৷

Bangladesch Aktion gegen illegale Casinos in Dhaka
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin

কোনো পণ্য বাংলাদেশে আমদানি করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পাওয়ার পরই তা খালাস করা যায়৷ তবে ক্যাসিনোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা প্রভাব খাটিয়ে জুয়া খেলার সামগ্রী দেশে ঢুকিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে৷

বুধবার ঢাকার চারটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল৷

ওইসব ক্যাসিনো সিলগালা করার পাশাপাশি সেখান থেকে ১৮২ জনকে আটক করে প্রত্যেককে ছয় মাস থেকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে র‍্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত৷ জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ নগদ টাকা, জাল টাকা, জুয়া খেলার সরঞ্জাম, ইয়াবাসহ দেশি-বিদেশি মদ৷

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা র‍্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, "এগুলো একটাও স্বীকৃত ক্যাসিনো না৷ আর বাংলাদেশের আইনে কোনো ক্যাসিনোকে লাইসেন্স দেয়ার বিধান নেই৷ মূলত ক্রীড়া সংগঠনের আড়ালে এসব জুয়া খেলা আর মাদক সেবন চলছে, ক্যাসিনো সম্পূর্ণ অবৈধ৷ আমরা যাদের মাদক সেবন করা অবস্থায় পেয়েছি তাদেরকে আইনানুযায়ী জেল দেয়া হয়েছে৷''

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘ দিন আগেই ঢাকায় ক্যাসিনো গড়ে উঠেছে৷ প্রধানমন্ত্রী এখন এনিয়ে কথা বলায় সবাই তৎপর হয়েছে৷ ক্যাসিনোগুলোতে জুয়া খেলার যেসব সরঞ্জাম রয়েছে তা অবৈধ পন্থায় বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে এবং এরসঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারাও জড়িত৷''

তবে কোন পথে, কীভাবে জুয়া খেলার এসব সরঞ্জাম ঢাকায় আনা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি এই পুলিশ কর্মকর্তা৷

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া

This browser does not support the audio element.

জুয়ার মেশিন কীভাবে বাংলাদেশে ঢুকল, এই প্রশ্নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া বলেন,‘‘সেটা তো আমি জানি না, কীভাবে ঢুকেছে সেটা আমার জানা নেই৷''

বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এগুলো হয়ত কোনো পার্সটার্স, ইয়েটিয়ে এ রকম করে ভেঙেটেনে এনেছে, মিস ডিক্লারেশন থাকতে পারে, আমি ঠিক জানি না, পুরোটাই জানি না৷ এখন এগুলো অনুসন্ধান করতে হবে৷ কীভাবে বাংলাদেশে এসেছে তা খতিয়ে দেখব, (ক্যাসিনো) যেখানে যেখানে আছে আমরা এগুলো অনুসন্ধান করব, দেখব যে কীভাবে কোথা থেকে আসল৷ এগুলো দেশে প্রডিউজ করতে পারে কি না৷ এ ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা খুব কম...৷''

বাংলাদেশে ক্যাসিনো রয়েছে এটা আগে জানতেন কি না, সেই প্রশ্নে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘না না না,একেবারেই নতুন জিনিস৷''

ক্যাসিনোগুলোতে জুয়ার আসরের পাশাপাশি রমরমা মাদকের ব্যবসা চলে৷ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না, সেই প্রশ্ন ছিল এই অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সঞ্জয় কুমার চৌধুরীর কাছে৷

ডয়চে ভেলেক তিনি বলেন, ‘‘আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ে কাজ করি৷ বার, রেস্টুরেন্টগুলো মাদকদ্রব্য বা মদ লাইসেন্সধারীদের কাছে বিক্রি করার জন্য আমাদের কাছ থেকে অনুমতি ও লাইসেন্স নেয়৷ এরপর তারা হয়ত বিদেশ থেকে আমদানি করে বা বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের কাছ থেকে কিনে নেয়, সেটা বিক্রি করে৷

সঞ্জয় কুমার চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

ক্যাসিনোতে মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে, এমনটা জানানোর পর তিনি বলেন, ‘‘কোনো ক্যাসিনোতে মদ বিক্রির লাইসেন্স দেয়া নেই, এটা সম্পূর্ণ অবৈধ৷ বিক্রি হচ্ছে, আজকে পত্রিকায় দেখলাম৷ অবশ্যই আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক রাখার দায়ে কেইস ফাইল করব, দে উয়িল বি পানিশড৷''

ঢাকার অন্য ক্যাসিনোগুলোতে অভিযান চালানো হবে কি না, সেই প্রশ্নে সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘‘এটা তো রুটিন কাজ, এখন শুরু হলো, এটার শেষ নেই৷ অবৈধ মাদক শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটা চলতেই থাকবে৷ ক্যাসিনো বা অন্য যে কেনো জায়গায়ই হোক৷... ক্যাসিনো নিয়ে কথা হচ্ছে, আমিতো আগে জানতামই না বাংলাদেশে ক্যাসিনো আছে এবং অপরাধ করে বেড়াচ্ছে৷ আমরা বিশেষ নজর দেব৷ যেখানে অবৈধ মাদক থাকবে সেখানেই অভিযান অব্যাহত থাকবে৷''

ক্যাসিনোগুলো এতদিন চলে আসার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন৷

চারটি ক্যাসিনোতে অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, "গোয়েন্দারাই এই তথ্য দিয়েছে৷ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই অপারেশন  হয়েছে৷ আমরা শুনছিলাম অনেকদিন ধরে ঢাকাতে কতগুলো অবৈধ ক্যাসিনো … আমরা কোনো ক্যাসিনোর অনুমতি দিইনি৷ আমরা বিভিন্ন ক্লাব ও হোটেলগুলোতে বারের অনুমতি দিয়েছি, কিন্তু ক্যাসিনোর অনুমতি দিইনি৷

"তবে আমরা শুনছিলাম, অনেক জায়গায় নাকি ক্যাসিনো চালাচ্ছে। আমাদের কাছে সেই তথ্যগুলো ছিল, সেই অনুযায়ী কাল রাতে সেই ক্যাসিনোগুলো চেক করা হয়েছে। সেই ইনফরমেশনের ভিত্তিতেই হয়েছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ