কোলন ক্যাথিড্রালের জায়গাটিতে একটি গির্জা তৈরি করা হয়েছিল ৮৭০ খ্রিস্টাব্দে৷ কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যায় সে গির্জাটি৷ পরে আগের জায়গাতেই নতুনভাবে কোলন ক্যাথেড্রাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়৷

কোলন কাথিড্রাল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছিল ১২৪৮ সালে৷ ১৮৮০ সালে, অর্থাৎ শুরুর ৬৩২ বছর পর নির্মাণকাজ শেষ হয়৷

কোলন ক্যাথিড্রাল নির্মাণ করার সময় টাকার অভাব দেখা দেয়ায় দীর্ঘ সময় এর কাজ বন্ধ ছিল৷ তখন অনেক বছরই এটি ব্যবহৃত হয়েছিল গুদামঘর হিসেবে৷ পরে এলাকাবাসীর অর্থ সহায়তায় এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়৷

ইউরোপের সবচেয়ে বড় ক্যাথলিক গির্জা এই কোলন ক্যাথিড্রাল৷ গির্জাটি উচ্চতায় ১৬০ মিটার, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে পাঁচশ ফুট৷ কোলন শহরের অনেক জায়গা থেকেই ডোমের সুউচ্চ চূড়া দেখা যায়৷

জার্মানির ৪১টি বিশ্ব ঐতিহ্যের মধ্যে অন্যতম এই কোলন ক্যাথেড্রাল৷ ১৯৯৬ সালে এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয় ইউনেস্কো৷ তখন থেকে এই গির্জাটি দেখাশোনার ভারও নেয় তারা৷

কোলন ডোম বর্তমানে কোলন শহরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র৷ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন প্রায় বিশ হাজাররেও বেশি দর্শনার্থী এ গির্জাটি দেখতে আসেন৷ একসাথে চার হাজার দর্শনার্থী এর ভিতরে ঢুকতে পারেন৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চৌদ্দটি বোমার আঘাত লেগেছিল কোলন ক্যাথিড্রালে৷ সামান্য কিছু ক্ষতি ছাড়া মূল স্থাপনার তেমন ক্ষতি হয়নি বললেই চলে৷ পরে ধ্বংস হওয়া জায়গাগুলো পুননির্মাণ করা হয়৷

সারা পৃথিবীর কাছে কোলন শহরের ল্যান্ডমার্ক হিসেবে পরিচিত এই ক্যাথিড্রাল৷

কোলন ডোমের নান্দনিকতা ধরে রাখতে এখনো প্রতিনয়তই যত্নের সাথে সংস্কার কাজ চলে৷ ডোমটিকে অবিকল এর আদিরূপে ধরে রাখতে সদা সচেষ্ট কর্তৃপক্ষ৷

কোলন ক্যাথিড্রালের বাইরের দিকটায় চারপাশজুড়ে রয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য আর শিল্পকর্ম৷

কোলন ক্যাথিড্রালের ভেতরে সুবিশাল প্রার্থনা কক্ষ আছে, যেখানে একসাথে দুই হাজার ৮০০ মানুষ দাঁড়াতে এবং ১২০০ মানুষ একসাথে বসতে পারেন৷

মার্চে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো ২০৩৫ সাল থেকে পেট্রোল বা ডিজেলে চালিত কোনও নতুন গাড়ি নিবন্ধিত না করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। তবে জার্মানিতে এ নিয়ে একটি মামলা চলছে। মামলার নিষ্পত্তি হলে সবুজ জলবায়ু-নিরপেক্ষ সিন্থেটিক জ্বালানির ক্ষেত্রে এ বিষয়ে কিছু ছাড় দেয়া হতে পারে।

পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তিতে রূপান্তরের দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এপ্রিলে জার্মানির শেষ তিনটি সক্রিয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে জ্বালানি সংকট দেখা দেওয়ায় ইসার টু, নেকারভেস্টহাইম টু এবং এমসলান্ড নির্ধারিত সময়ের চেয়ে চার মাস বেশি চালু রাখা হয়। কিন্তু এরপর সেগুলোকে বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে জার্মানিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ যুগের অবসান ঘটে।

পয়লা মে থেকে জার্মানির বাসিন্দারা প্রতি মাসে মাত্র ৪৯ ইউরোর (প্রায় ছয় হাজার টাকা) বিনিময়ে জার্মানি জুড়ে আঞ্চলিক ট্রেন, ট্রাম, পাতাল রেল এবং বাস ব্যবহার করতে পারছেন। যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয় হলেও এই মূল্যে খরচ তুলতে পারছে না পরিবহণ সংস্থাগুলো। কম ভাড়ার কারণে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিগুলো ফেডারেল এবং রাজ্য সরকারগুলোর কাছে দেড় বিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা) ভর্তুকি দাবি করেছে।

জুলাই মাসে ডাচ ভাডেন সাগরের দ্বীপ আমেলান্ডের কাছে প্রায় তিন হাজার ৮০০টি গাড়ি বহন করা একটি কার্গো জাহাজে আগুন ধরে যায়। ক্রুদের সরিয়ে নেওয়ার সময় একজনের মৃত্যু হয়, ২২ জন ক্রু সদস্য আহত হন এবং প্রায় দুই হাজার ৭০০টি গাড়ি ধ্বংস হয়। জাহাজটিকে একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিষাক্ত তেল ছড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা পায় ভাডেন সাগর।

আগস্টে তাইওয়ানের চিপমেকার টিএসএমসি আরো তিন প্রতিষ্ঠান বোশ, ইনফিনেওন এবং এনএক্সপি এর সঙ্গে মিলে ড্রেসডেনে একটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ স্থানীয়ভাবে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন হওয়ায় এশিয়া থেকে আমদানির উপর জার্মানির নির্ভরশীলতা কমবে। জার্মান সরকার এই প্রকল্পে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) ভর্তুকি দিচ্ছে৷

জার্মান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগ সেপ্টেম্বরে ঘর গরম রাখার ইস্যুতে একটি বিতর্কিত আইন পাস করে। এর লক্ষ্য ছিল ঘর উত্তপ্ত রাখার জ্বালানি হিসাবে তেল-গ্যাসের ব্যবহার ধীরে ধীরে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে জলবায়ু-বান্ধব করে তুলতে সাহায্য করা৷ কিন্তু আইনের প্রযুক্তিগত অপ্রতুলতার কারণে গ্রিন পার্টির রাজনীতিবিদ এবং অর্থনীতি মন্ত্রী রবার্ট হাবেকের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন এবং পরিকল্পনাগুলো ভেস্তে যায়।

১৩০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জার্মানির বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন আইজি মেটাল একজন মহিলা চেয়ারপারসন নির্বাচন করেছে৷ আগামী চার বছর ইউনিয়নের ২১ লাখ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করবেন ক্রিশ্চিয়ানে বেনার। এই ইউনিয়নে ২০ শতাংশেরও কম সদস্য নারী।

জার্মানির সাংবিধানিক আদালত নভেম্বরে রায় দিয়েছে, কোভিড মহামারি মোকাবেলার উদ্দেশ্যে বরাদ্দ করা তহবিল আগামী বছরের বাজেটে জলবায়ু সুরক্ষার জন্য পুনরায় বরাদ্দ করা যাবে না। এমন রায়ের ফলে অন্যান্য নানাকিছুর পাশাপাশি সবুজ শক্তি প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য ৬০ বিলিয়ন ইউরোর (প্রায় সাত লাখ কোটি টাকা) ঘাটতিতে পড়েছে জার্মান সরকার।