যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবি
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩সংগঠকদের মধ্যে অন্যতম, কোলোন ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস'র আইটিটি প্রতিষ্ঠানের গবেষক এবিএম ফিরোজ ডয়চে ভেলেকে বলেন, রাজীবের হত্যাকাণ্ড তাঁদের আরো অনুপ্রাণিত করেছে৷ তাঁদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, ‘‘এই সাধারণ মানুষগুলো কেন এ'ভাবে মারা যাবে? কেন আমরা একসাথে হতে পারছি না?'' তাঁরা রাজীবের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে রাজি নন৷ রাজীব যে নাস্তিক ছিলেন, এ' অপপ্রচারও তাঁদের কানে এসেছে৷ কিন্তু কোনো ধর্মেই মানুষকে হত্যা করার অনুমতি দেয় না৷
কোলোনের সুউচ্চ এবং সুপ্রাচীন গির্জার সামনে সমাবেশ করেছেন কোলোন, ডর্টমুন্ড, বোখুম থেকে আসা এই বাঙালিরা৷ তাদের অনেকেই শাহবাগ আন্দোলনে সশরীরে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না বলে দুঃখিত৷
জার্মানির অন্যান্য শহরে যারা শাহবাগ নিয়ে আন্দোলন করছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে কিনা, এ' প্রশ্নের উত্তরে ফিরোজ জানালেন, তাদের অধিকাংশই ছাত্র কিংবা পড়াশুনা শেষ করে চাকুরি করছেন৷ কাজেই সকলের মুখ্য যোগাযোগটা ফেসবুকের মাধ্যমে৷ ফেসবুক এবং ব্লগিং'এর মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের শাহবাগচেতাদের মধ্যে আদানপ্রদান চলেছে৷ পরস্পর পরস্পরকে তাদের কর্মসূচি সম্পর্কে জানাচ্ছেন৷
লন্ডনের মতো জার্মানিতে তাঁদের কোনো সক্রিয় বিরোধিতার অভিজ্ঞতা হয়নি, বলে জানালেন ফিরোজ৷ তার একটা কারণ এখানকার বাংলাদেশিদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বলে তাঁর ধারণা, কেননা এখানে মূলত ছাত্রদের বাস, যাঁরা ফেসবুক ব্যবহার করেন৷ জার্মানিতে তাঁরা নেতিবাচক চিন্তাধারার মানুষজন খুব কম পেয়েছেন, বলে জানালেন ফিরোজ৷
অপরদিকে জার্মান সহপাঠী, পরিচিত, প্রতিবেশী, ফেসবুক বন্ধুদের জন্য তাঁরা সমাবেশের ডাকও দু'টি ভাষায় জানিয়েছেন৷ তবে জার্মানদের বাংলাদেশের ঘটনাবলী সম্পর্কে বিশেষ একটা ধারণা না থাকার ফলে বাঙালি আন্দোলনকারীদের নানা ধরণের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে: চল্লিশ বছর পরে এই আন্দোলন কেন? জার্মানিতে মৃত্যুদণ্ড না থাকার ফলে সেই দাবি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ ফলে জার্মানদের বোঝানোর কাজটাও করতে হচ্ছে ফিরোজ ও তাঁর সমব্যথীদের৷
বাকি থাকছে তাঁদের আন্দোলন কর্মসূচি৷ লন্ডনের মতো তাঁরাও শাহবাগের কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলার চেষ্টা করছেন: ‘‘আমরাও মোমবাতি জ্বালিয়েছি, আমরাও তিন মিনিটের নীরবতা পালন করেছি,'' জানালেন ফিরোজ৷
সাক্ষাৎকার: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন