1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোষের বিভাজন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে

১৬ জানুয়ারি ২০২৩

মানুষ নানা উদ্ভাবনের মাধ্যমে অসাধ্যসাধন করে চলেছে৷ এবার শরীরের জীবন্ত কোষ পর্যবেক্ষণ করতে বিজ্ঞানীরা অভিনব এক কৌশল কাজে লাগিয়ে বিশেষ ধরনের মাইক্রোস্কোপ তৈরি করেছেন৷

মানুষ নানা উদ্ভাবনের মাধ্যমে অসাধ্যসাধন করে চলেছে৷ এবার শরীরের জীবন্ত কোষ পর্যবেক্ষণ করতে বিজ্ঞানীরা অভিনব এক কৌশল কাজে লাগিয়ে বিশেষ ধরনের মাইক্রোস্কোপ তৈরি করেছেন৷
ছবি: imago stock&people

পৃথিবীর বুকে প্রাণের চরিত্র বুঝতে হলে ভালো করে নজর দিতে হবে৷ ক্ষুদ্রতম কাঠামো শনাক্ত করে তার মর্ম বুঝতে হবে৷ সেই উপলব্ধির মধ্যে কোনো নতুনত্ব নেই৷ জ্ঞানপিপাসু মানুষ বহুকাল ধরে সেটাই করে চলেছেন৷ আরও উন্নত যন্ত্র, বিশেষ করে আরও শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ সে কাজে সহায়তা করছে৷

তবে সমস্যা হলো, জীবন্ত কোষ পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত কঠিন৷ সেই সমস্যা দূর করতে নতুন ধরনের মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজন৷ টোমাস কাল্কব্রেনার, রাল্ফ ভলেনশেনস্কি ও ইয়োর্গ সিবেনমর্গেন সেটি সৃষ্টি করেছেন৷ তাতে চোখ রাখলে আমাদের কোষের মধ্যে জৈব রাসায়নিক ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা যায়, যেমনটা এতকাল সম্ভব ছিল না৷

‘ল্যাটিস লাইটশিট ৭' নামের সেই নতুন মাইক্রোস্কোপে মানুষের জীবন্ত কোষের অসাধারণ ছবি ফুটে উঠছে৷ কোষের বিভাজনের সেই প্রক্রিয়া সরাসরি দেখা যাচ্ছে৷ অর্থাৎ দুই চোখ ভরে প্রাণের সাক্ষাৎ রূপ দেখার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে৷ তবে কোষ আসলে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং সতর্কও বটে৷ একমাত্র কোনো ভুলত্রুটির অবকাশ না থাকলে তবেই কোষের বিভাজন ঘটে৷ কারণ বিভাজনের সময়ে কোনো ত্রুটি ঘটলে মিউটেশনের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে৷ তখন ক্যানসারের আশঙ্কাও অমূলক নয়৷

কিন্তু আমরা তাকিয়ে থাকলে কীভাবে সেই প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব পড়ে? আসলে কিছু পর্যবেক্ষণ করতে হলে আমাদের আলোর প্রয়োজন হয়৷ অবশ্যই অন্ধকারে কিছু দেখা সম্ভব নয়৷ কিন্তু আলো আবার শক্তিও বটে৷ মাত্রাতিরিক্ত শক্তি আমাদের অসুস্থ বা আহত করতে পারে৷ রোদে ত্বক পুড়ে গেলে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়৷ অর্থাৎ কোষের বিভাজন পর্যবেক্ষণ করার সময়ে খুব বেশি আলো ব্যবহার করলে কোষ সেই কাজই করতে চায় না৷ আমাদের তাকিয়ে দেখার কারণেই প্রাণের প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটছে৷

কোষ পর্যবেক্ষণের অভিনব মাইক্রোস্কোপ

04:20

This browser does not support the video element.

শুধু কম আলো সমাধান হতে পারে৷ কিন্তু টিমটিমে আলোয় আবার ভালো ছবি তোলা সম্ভব নয়৷ সেই সমস্যা দূর করার কৌশল ‘লাইটশিট'৷ এ ক্ষেত্রে সব জায়গা জুড়ে আলো ফেলা হয় না৷ যে অংশে লেন্স তাক করা হয়, শুধু সেই অংশ ক্ষণিকের জন্য আলোকিত করা হয়৷ অর্থাৎ পর পর চিকন ফিতের মতো আলো নিক্ষেপ করা হয়৷ এভাবে তোলা ফটোগুলি কম্পিউটারের মাধ্যমে থ্রিডি ছবিতে রূপান্তরিত করা হয়৷ তখন প্রাণের স্পন্দন স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়৷

শুনতে ভালো লাগলেও কয়েকটি চ্যালেঞ্জ থেকে গেছে৷ যেমন মনে রাখতে হবে যে, কোষ তরল পরিবেশে থাকে৷ অর্থাৎ তরলের মধ্যে উঁকি দিতে হয়৷ সুইমিং পুলে হাতের আংটি পড়ে গেলে পাড়ে দাঁড়িয়ে সেটির খোঁজ করা কি সহজ?

কাজটা আসলে বেশ কঠিন৷ পানির স্তর ভেদ করে বেশি কিছু দেখা যায় না৷ ডুবুরির চশমা অবশ্য সেই কাজ সহজ করে দেয়৷ সে কারণে এই মাইক্রোস্কোপ নীচ থেকে নমুনা পাত্রের কাচের তলদেশের মধ্যে উঁকি মারে৷ ‘লাইটশিট'-ও ভেতরে থাকে বলে লেন্স কিছুটা বাঁকা রাখতে হয়৷ কিন্তু সেটা করলে আবার ছবির ত্রুটি এত বেশি হয় যে কিছুই দেখা যায় না৷ আসলে এই কৌশল কাজ করার কথাই নয়, যদি না অত্যন্ত জটিল লেন্সের মাধ্যমে সেই ত্রুটি সংশোধন করা যায়৷

সত্যি কথা বলতে গেলে সেগুলিকে আর লেন্স বলা চলে না৷ বরং তথাকথিত অপটিক্যাল ফ্রি ফর্ম এলিমেন্ট বলতে হবে৷ স্পষ্ট ছবি সৃষ্টি করতে সেগুলি প্রয়োজনীয় ভারসাম্য নিশ্চিত করে৷ এভাবে সম্পূর্ণ নতুন ও একেবারে অনন্য মাইক্রোস্কোপের লেন্স সৃষ্টি করা হয়েছে, যেগুলি অসাধ্যসাধন করছে৷ মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে এমন জ্ঞান অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে৷ বিশেষ করে চিকিৎসাবিদ্যার উন্নতি আরও তরান্বিত করতে পারে৷ ডেভেলপাররা বলছেন, তারা কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টা ধরে জীবন্ত কোষের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারেন৷

ফল্কার এয়ারবার্ট/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ