1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যানসারে মৃত্যুও বাড়িয়েছে করোনা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

বাংলাদেশে প্রতিবছর ক্যানসারে আক্রাস্ত হন এক লাখ ৫০ হাজার, মারা যান এক লাখ ৯ হাজার৷ করোনার সময় ক্যানসার চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় মৃত্যুহার বেড়েছে৷

England | NHS | Studie mit dem Galleri-Bluttest zur Erkennung von Krebs
ছবি: Kirsty Wigglesworth/AP Photo/picture alliance

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান গ্লোবোক্যানের তথ্য অনুযায়ী দেশে এখন ১৫ লাখ ক্যানসার রোগী আছে।

এই সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে ক্যানসারে আক্রান্ত হন এক লাখ ২২ হাজার। আর তখন প্রতিবছর গড়ে মারা যেতো ৯২ হাজার। তখন দেশে মোট ক্যানসার রোগী ছিল ১২ লাখ।

জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রক্ত রোগ , ব্লাড ক্যানসার ও বোনম্যারেন ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞ ডা. মো. এটিএম কামরুল হাসান বলেন, " ২০২০ সালে আমাদের হাসপাতাল থেকে ২০ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ২০২১ সালে ২৫ হাজার। আর এখন তরুণরও ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তারা প্রধানত লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন।”

জাতীয় ক্যানসার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের ক্যানসার এপিডেমিওলোজি বিভাগের প্রধান ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে ক্যানসারে আক্রান্ত এবং মৃত্যু দুইটিই বাড়ছে।”

এখন ১৮ থেকে ৩০ বছরের তরুণরও মূলত লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন: ডা. মো. এটিএম কামরুল হাসান

This browser does not support the audio element.

তার কথা, " এরচেয়ে আরো উদ্বেগজনক তথ্য হলো ক্যানসার আক্রান্ত এক তৃতীয়াংশ রোগীই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে, অথবা রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের কাছে যান না। তারা হাতুড়ে ডাক্তার এবং টোটকা চিকিৎসকের কাছে যান। এর প্রধান কারণ দুইটি। ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং সচেতনতার অভাব।”

তিনি বলেন, করোনার কারণে ক্যানসার চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, রোগীদের করোনা হওয়ায় ক্যানসার চিকিৎসা শেষ না করেই ৩০ শতাংশ রোগী বাড়ি ফিরছেন। চিকিৎসা শেষ না করা রোগীদের ৭৫ শতাংশই গত এক বছরের মধ্যে মারা গেছেন। আর ডা. মো. কামরুল হাসান বলেন, "আউটডোরে যারা আসেন তাদের ৫০ ভাগই কোনো ধরনের চিকিৎসা না নিয়ে চলে যান।”

তিনি জানান, "করোনার সময় যাদের ক্যানসারের চিকিৎসা নেয়া জরুরি ছিল তাদের কমপক্ষে ১০ ভাগ রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে পারেননি। ফলে তারা অ্যাডভান্স স্টেজে চলে যান। এখন আবার যারা নতুন করে হাসপাতালে আসছেন, তাদের বড় একটি অংশ অ্যাডভান্স স্টেজে। ফলে করোনার কারণে সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে না পারায় অ্যাডভান্স স্টেজের রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে, যা আমরা এখন বুঝতে পারছি। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে এরা চিকিৎসা পেলে দ্রুতই ভালো হয়ে যেতেন।”

বাংলাদেশে ক্যানসার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নতুন একটি এবং ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরে আরো নতুন সাতটি  স্বতন্ত্র ক্যানসার হাসপাতালের কাজ শুরু হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশে ক্যানসার চিকিৎসার সুযোগ এখনো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং ব্যয়বহুল। ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন, "বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে গড়ে দুই লাখ এবং বেসরকারি হাসপাতালে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যয় হয়। ”

ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং সচেতনতার অভাবে এক তৃতীয়াংশ রোগীই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান না: ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার

This browser does not support the audio element.

বংলাদেশে ক্যানসার চিকিৎসার পূর্ণাঙ্গ সরকারি প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকার জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। এর শয্যা সংখ্যা এখন ৫০০। এর বাইরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালসহ বিভাগীয় পর্যায়ের বড় বড় সরকারি হাসপাতালে আলাদা ক্যানসার বিভাগ আছে।  বাংলাদেশে বর্তমানে ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা ২০০ জনের কিছু বেশি হবে

বাংলাদেশে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা নিয়ে দেশের বাইরের সংস্থগুলো একটা হিসেব দিলেও বাংলাদেশে কোনো হিসেব নাই । নেই ক্যানসার রেজিষ্ট্রেশন ব্যবস্থা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎিসকরা মনে করেন , যে হিসাব পাওয়া যায় বাস্তবে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা  তার চেয়ে অনেক বেশি। কারণ, অনেকেরই ডায়াগনোসিস হয় না। আবার অনেকে সামাজিক ও পারিবারিক কারণে তা প্রকাশ বা চিকিৎসা করাতে চান না। বিশেষ করে নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই গোপনীয়তা অনেক বেশি। আর নারীরা বেস্ট্র ক্যানসারেই আক্রান্ত হন বেশি। বাংলাদেশে তিন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্তের হার বেশি। ব্রেস্ট ক্যানসার , ফুসফুসের ক্যানসার ও  মুখ গহ্বরের ক্যানসার। তবে ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন, " সর্বশেষ গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, খাদ্যনালীর ক্যানসার অনেক বাড়ছে। এটা প্রথম স্থানে চলে যেতে পারে।”

ক্যানসার চিকিৎসার তিনটি ধাপ সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি। বাংলাদেশে এই তিন ধাপেরই এখন আধুনিক চিকিৎসা আছে বলে দাবি করেন ডা. এটিএম কামরুল হাসান। তার মতে, এখন বেশি প্রয়োজন সচেতনতা, জনবল ও চিকিৎসা খরচ কমানো। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, তরুণদের লিভার ক্যানসারের কারণ হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস। সচেতন হলে আগেই ভ্যাকসিন নিলে লিভার ক্যানসারে আক্রান্তই হতেন না তারা।

২০১৮ সালের ছবিঘর

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ