1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যানসার রোগী ও আত্মীয়স্বজনের জন্য শান্তির নীড়

৪ জুন ২০২১

স্থাপত্য ও ঘরবাড়ির অভ্যন্তরীণ সজ্জা যে মানুষের উপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, অনেকেই সে বিষয়ে সচেতন নন৷ ব্রিটেনে ক্যানসার রোগী ও তাঁদের স্বজনদের মনে কিছুটা অন্তত স্বস্তি আনতে বিখ্যাত স্থপতিরা একাধিক কেন্দ্র ডিজাইন করছেন৷

DW Euromaxx 03.04.21 Maggies Centre
ছবি: DW

ইংল্যান্ডের লিডস শহরে ‘ম্যাগিস সেন্টার'-এ ক্যানসারের রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনরা অনেক কার্যকর ও মানসিক সহায়তা পান৷ ভবনটি এক হাসপাতাল ক্যাম্পাসের মধ্যে অবস্থিত হলেও বেশ নজরে পড়ার মতো৷ স্থাপত্য ও ভেতরের সাজসজ্জার কোণাগুলি গোলাকার ও নরম হওয়ায় রোগী ও অন্যান্য অতিথিদের উপর মনোরম প্রভাব ফেলে৷ লিডস শাখার প্রধান অ্যামান্ডা প্রক্টার বলেন, ‘‘মানুষ হাসপাতালের মূল পরিবেশ থেকে দূরে এই বিশাল ও সুন্দর জায়গায় এসে সত্যি নিরাপদ ও শান্ত বোধ করেন৷ একজন নারী জায়গাটিকে উষ্ণ ও নরম কম্বলের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷''

ভবনের ভেতরের অংশে প্রাকৃতিক উপাদান ও উষ্ণ আলো চোখে পড়ার মতো৷ সামাজিক আদানপ্রদানের জন্য সেখানে অসংখ্য জায়গা রয়েছে৷ সর্বত্র ব্যবহৃত স্প্রুস গাছের কাঠ টেকসই পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে৷ চুনাপাথরের মতো ছিদ্রে ভরা উপাদান দিয়ে তৈরি দেওয়ালগুলি স্বাভাবিক বাতাস চলাচল নিশ্চিত করে৷ অ্যামান্ডা বলেন, ‘‘ভবনের কেন্দ্রস্থলের দিকে এলে বড় খোলা জায়গা চোখে পড়বে৷ আমরা জানি, ক্যানসার গোপনীয়তার বেড়াজালে মোড়া থাকতো৷ কিন্তু এখানে এলে মনে হবে আমরা বিষয়টি নিয়ে  খোলামেলাভাবে আলোচনা করতে পারি৷ কেন্দ্রস্থলে আসার সময়ে আমরা বলতে পারি যে মানুষের জীবনে সেটা ঘটছে৷ তবে আমাদের এখানে কোণাবিহীন ছোট জায়গাও রয়েছে, যেখানে গেলে মনে হবে মোড়কে প্রবেশ করছি৷ মনে হবে কোনো ঘর যেন প্রবেশের সময় আলিঙ্গন করছে৷''

সেলিয়া নাইটের স্বামীর লিউকেমিয়া ধরা পড়েছে৷ এমন কঠিন সময় সেলিয়া ম্যাগিস সেন্টারে সহায়তা পাচ্ছেন৷ নিজের সমস্যা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘‘স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়৷ তিনি গাড়ি চালান না৷ তার চিকিৎসার সময়ে সেন্টারের মতো আরামদায়ক জায়গা আমার জন্য বড় এক সহায়তা নিয়ে এসেছে৷''

ক্যানসারে প্রশান্তি দিতে ভবন ডিজাইন

04:44

This browser does not support the video element.

বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি টমাস হেদারউইক ২০২০ সালে লিডস শহরে ম্যাগিস সেন্টার গড়ে তোলেন৷ তাঁর ডিজাইনটি অনেকটা অতিকায় ফুলগাছের টবের মতো দেখতে৷ ভবনের ভেতর ও বাইরের অংশে অসংখ্য সবুজ গাছপালার কেন্দ্রীয় ভূমিকা রয়েছে৷ তাঁর কাছে স্বাচ্ছন্দ্যবোধের ক্ষেত্রে স্থাপত্য ও ডিজাইনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে৷ টমাস বলেন, ‘‘আমাদের কাছে বিষয়টি সত্যি ইন্টারেস্টিং কারণ আমাদের যুগে আবেগের উপর ভবনের প্রভাব নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হয়৷ গত শতাব্দীর অনেক ভবন আমাদের হতাশ করেছে, খারাপ জায়গা সৃষ্টি করেছে৷ ক্যানসার কেয়ার সেন্টারের মতো অন্য কোনো ভবনে মানুষের আবেগ-অনুভূতির এমন সংযোগ থাকতে পারে না৷''

জাহা হাদিদের মতো নামকরা স্থপতিরা ম্যাগিস সেন্টারগুলি ডিজাইন করেছেন৷ যেমন স্কটল্যান্ডের ডান্ডি শহরের শাখাটির স্থপতি ফ্রাংক গেরি৷ ম্যানচেস্টারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন নর্মান ফস্টার এবং গ্লাসগোয় রেম কোলহাল৷

প্রতিষ্ঠানের প্রধান ডেম লরা লি প্রায় ২৫ বছর আগে সূচনাপর্ব থেকেই ম্যাগিস সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন৷ সেই প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘ম্যাগি কেসউইক জেংক্স নামের এক নারীর নামেই প্রথম ম্যাগিস সেন্টার চালু হয়৷ ম্যাগির স্তনে ক্যানসার ধরা পড়েছিল৷ ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এনএইচএস-এর আওতায় যে সব চিকিৎসা দেওয়া হয় না, তিনি সেগুলি শনাক্ত করেন৷ ম্যাগির মৃত্যুর পর প্রথম সেন্টারটি চালু হয়৷ অন্যান্য হাসপাতালের জমিতে অন্যান্য সেন্টারের জন্য আমাদের কাজ করতে বলা হয়েছিল৷ ফ্র্যাংক গেরি, রিচার্ড রজার্স, নর্মান ফস্টারের মতো মানুষ ম্যাগির বন্ধু ছিলেন৷ তাঁরা বিভিন্ন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ম্যাগিস সেন্টার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷''

মার্কিন স্থপতি ড্যানিয়েল লিবেসকিন্ড লন্ডন শহরে আগামী ম্যাগিস সেন্টারটি গড়ে তুলছেন৷ ব্রিটেনের ২৫তম কেন্দ্রটি লিডস শহরে রয়েছে৷ স্থাপত্য কীভাবে নিরাময়ের প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে পারে, এটা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত৷

মেগিন লাই/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ