ক্যানাডার আশ্রয় ব্যবস্থা নিয়ে সতর্কতামূলক বিজ্ঞাপন
৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ক্যানাডায় আশ্রয় পাওয়া কঠিন - সেখানে আশ্রয় পেতে ইচ্ছুকদের মধ্যে এই তথ্য ছড়িয়ে দিতে চায় সে দেশের সরকার৷ সে কারণে সরকারি খরচে অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত এই বিজ্ঞাপন কর্মসূচি চলবে৷ খরচ হবে এক লাখ ৭৮ হাজার ৬৬২ মার্কিন ডলার বা সোয়া দুই কোটি টাকা৷
স্প্যানিশ, উর্দু, ইউক্রেনীয়, হিন্দি ও তামিলসহ ১১টি ভাষায় বিজ্ঞাপনগুলো প্রচারিত হবে বলে দেশটির অভিবাসন বিভাগ রয়টার্সকে জানিয়েছে৷
অনলাইনে ‘ক্যানাডায় কীভাবে আশ্রয় পাওয়া যায়' বা ‘শরণার্থী ক্যানাডা' ইত্যাদি লিখলে ‘ক্যানাডার অ্যাসাইলাম সিস্টেম- অ্যাসাইলাম ফ্যাক্টস' নামে স্পন্সর করা তথ্য দেখানো হবে বলে অভিবাসন বিভাগ বলছে৷
জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক জীবন
ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২০১৩ সালে দলের নেতা নির্বাচিত হন৷ দুবছর পর তার দল সরকার গঠনে সমর্থ হয়৷ বর্তমানে ট্রুডোর দলের প্রতি সমর্থন অনেক কমে গেছে৷ ছবিঘরে ট্রুডোর রাজনৈতিক জীবনের উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা থাকছে৷
ছবি: Sean Kilpatrick/The Canadian Press/AP/picture alliance
অক্টোবর, ২০১৩
লিবারেল দলের নেতা নির্বাচিত হন৷ সেই সময় দলটি জনপ্রিয়তার বিচারে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ছিল৷ কারণ, দুই বছর আগে ২০১১ সালের নির্বাচনে লিবারেলরা প্রথমবারের মতো তিন নম্বরে নেমে গিয়েছিল৷ লিবারেল দলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়ের ট্রুডোর ছেলে জাস্টিন ট্রুডো৷
ছবি: picture alliance/empics/A. Vaughan
অক্টোবর, ২০১৫
দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার দুই বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ট্রুডোর দল সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়৷ প্রথমবারের মতো হাউস অফ কমন্সে তিন নম্বরে থাকা একটি দল নির্বাচনে জয়ী হয়৷
ছবি: Reuters/C. Wattie
ডিসেম্বর ২০১৭
২০১৬ সালে আগা খানের কাছ থেকে ভ্রমণ, উপহার ও ফ্লাইট সুবিধা নেওয়ার মাধ্যমে ট্রুডো স্বার্থের দ্বন্দ্ব আইন ভঙ্গ করেছেন বলে রায় দিয়েছিল ক্যানাডার এথিকস কমিশনার৷ কোনো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন রায় ওটাই প্রথম ছিল৷
ছবি: Reuters/C. Wattie
ফেব্রুয়ারি ২০১৯
সাবেক বিচারমন্ত্রী জোডি উইলসন-রেবোল্ড (ছবি) অভিযোগ করেন, এসএনসি-লাভালিন কোম্পানির বিরুদ্ধে যেন দুর্নীতির অভিযোগে বিচার করা না হয় সেজন্য তাকে চাপ দিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা৷ এই ঘটনায় পদত্যাগ করেছিলেন তিনি৷ পাবলিক ওয়ার্কস মন্ত্রী জেন ফিলপটও ট্রুডোর প্রতি আস্থা হারানোর অভিযোগে পদত্যাগ করেন৷ ট্রুডো সবসময় নিজেকে ফেমিনিস্ট হিসেবে উপস্থাপন করেন৷ তাই তাদের পদত্যাগ ট্রুডোর জন্য রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিকর ছিল৷
ছবি: picture-alliance/H. Ruckemann
সেপ্টেম্বর, ২০১৯
ট্রুডো যখন তরুণ ছিলেন তখন কৃষ্ণাঙ্গর রূপ ধারণ করতে মুখে কালো রং লাগিয়েছিলেন৷ ২০১৯ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের আগে এমন কিছু ছবি প্রকাশ হয়ে গেলে বিতর্ক শুরু হয়৷ ট্রুডো ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, তিনি একজন সব সুবিধা পাওয়া ছেলে হিসেবে বেড়ে উঠেছিলেন এবং সে কারণে একটি ‘কালো দাগ’ ছিল৷
ছবি: Reuters/CBC
অক্টোবর, ২০১৯
নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও মেজরিটি সরকার গঠনের মতো আসন পায়নি ট্রুডোর দল৷ সে কারণে তাকে জোট সরকার গঠন করতে হয়েছিল৷
ছবি: Reuters/C. Allegri
আগস্ট, ২০২০
করোনা মহামারি থেকে ক্যানাডারে উদ্ধার করতে কত অর্থ প্রয়োজন তা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে পদত্যাগ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী বিল মরনৌ (ছবি)৷
ছবি: picture-alliance/J. Tang
সেপ্টেম্বর, ২০২১
ক্যানাডায় প্রতি চার বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা৷ তবে ট্রুডো ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিলেন৷ তার আশা ছিল, করোনা মোকাবিলায় সরকার ভালো করায় নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি মেজরিটি সরকার গঠন করতে পারবেন৷ কিন্তু তা হয়নি৷
ছবি: Carlos Osorio/REUTERS
সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ট্রুডোর দলের জনপ্রিয়তা অনেক কমছে৷ সবশেষ জরিপ বলছে, এখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ট্রুডোর লিবারেল পার্টি মাত্র ২১ শতাংশ ভোট পাবে৷ বর্তমানের বিরোধী দল কনজারভেটিভরা পাবে ৪৩ শতাংশ ভোট৷ আর নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি এনডিপি পাবে ১৯ শতাংশ৷ এই অবস্থায় বুধবার সরকারের উপর থেকে স্বয়ংক্রিয় সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে এনডিপি৷ তাই ট্রুডোর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে৷
ছবি: Sean Kilpatrick/The Canadian Press/AP/picture alliance
9 ছবি1 | 9
বিজ্ঞাপনগুলোর একটি এমন, ‘‘ক্যানাডায় আশ্রয় পাওয়া সহজ নয়৷ নিয়মকানুন বেশ কঠিন৷ জীবন পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার যা জানা প্রয়োজন, জেনে নিন৷''
পরিবর্তন
একটা সময় ক্যানাডা নিজেকে শরণার্থীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে দেখাতে চেয়েছে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এতে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে৷ ক্যানাডায় বাড়ির দাম বাড়ার জন্য অভিবাসীদের দায়ী করছেন অনেকে৷ এছাড়া জরিপে দেখা গেছে, ক্যানাডা খুব বেশি নতুন মানুষদের ঢুকতে দিচ্ছে- এমন ভাবা ক্যানাডীয়র সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷
ডনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক টুইটে বলেছিলেন, ‘‘যারা নিপীড়ন, সন্ত্রাস ও যুদ্ধ থেকে পালাচ্ছেন, ক্যানাডীয়রা তাদের স্বাগত জানাবে- আপনার বিশ্বাস যাই হোক না কেন৷ বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি৷ #WelcomeToCanada.''
এমন টুইটের প্রায় আট বছর পর ট্রুডো ১৭ নভেম্বর এক ভিডিওতে বলেন, খারাপ মানুষেরা তাদের নিজেদের স্বার্থে ক্যানাডার অভিবাসন ব্যবস্থাকে শোষণ করছে৷
গতমাসে ক্যানাডার সরকার স্থায়ী ও সাময়িক অভিবাসন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে৷
ক্যানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ জেমি চাই ইয়ুন লিউ বলেন, ক্যানাডায় আশ্রয় নিয়ে অনলাইনে অনেক ভুয়া তথ্য আছে৷ বিজ্ঞাপন কর্মসূচির মাধ্যমে সেগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই কার্যকর হতে পারে৷ কিন্তু ‘‘বিজ্ঞাপনে যদি বলা হয়, ‘আপনি স্বাগত নন'... তাহলে সেটি ক্যানাডার অতীত মনোভাবের বিপরীত মনে হবে,'' বলেন তিনি৷