গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর উদ্ধার হওয়া তাহমিদকে খুঁজে পেতে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সহায়তা চেয়েছেন তাঁর পরিবার৷ দেশটির জাতীয় সংবাদ সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
টরোন্টোর আইনজীবী মার্লিস এডওয়ার্ড-এর বরাত দিয়ে ‘দি ক্যানাডিয়ান প্রেস' জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ তাহমিদকে খুঁজে পেতে তাঁর পরিবার এডওয়ার্ডকে নিয়োগ দিয়েছে৷ উল্লেখ্য, ২২ বছরের তাহমিদ ক্যানাডার স্থায়ী বাসিন্দা ও টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী৷
এদিকে, ক্যানাডার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ‘টরোন্টো স্টার' জানিয়েছে, তাহমিদের অবস্থা জানতে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ক্যানাডা৷
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সোমবার ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার'-কে জানান, তাহমিদ সহ উদ্ধার হওয়া অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ তবে তাহমিদের মুক্তির দাবিতে চালু হওয়া ফেসবুক পাতা বলছে, তাহমিদকে এখনও তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়নি৷
তাহমিদের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চেয়ে ক্যানাডার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মন্ত্রী স্টেফানে ডিওন-এর কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন তাহমিদের পরিবার৷ তাহমিদ যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন সেখানকার প্রেসিডেন্ট মেরিক গার্টলারও একই মন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছেন৷ এ ব্যাপারে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স ক্যানাডার মুখপাত্র দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজকে ইমেলে জানান, ‘‘যিনি একটি দেশের নাগরিক নন তাঁর বিষয়ে কিছু করার ক্ষেত্রে সেই দেশের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে৷''
তাহমিদের মু্ক্তির দাবি জানিয়েছেন অনেক ফেসবুক আর টুইটার ব্যবহারকারী৷
ধর্মের রাজনীতি ও তরুণ প্রজন্ম
ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রসার ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে উৎসাহ, উদ্বেগ দুই-ই আছে৷ আর সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক দল ও ইসলামপন্থিদের উত্থানের বিষয়টিকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ৷ ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে কী ভাবছে আজকের প্রজন্ম?
ছবি: Reuters
পিয়ান মুগ্ধ নবীর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী পিয়ান মুগ্ধ নবীর কাছে ধর্ম বিষয়টা পুরোপুরি ব্যক্তিগত হলেও রাজনীতি ব্যক্তিগত বিষয় নয়৷ তবে ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে তিনি কখনোই সমর্থন করেন না৷
ছবি: DW
শিবরাজ চৌধুরী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী শিবরাজ চৌধুরী৷ তার মতে, ধর্ম এবং রাজনীতি কখনোই এক হতে পারে না৷ ধর্মের মূল বিষয় মনুষত্ব বা মানুষের মধ্যকার শুভবোধ৷ তবে ধর্মের নামে যদি কখনো মৌলবাদ কিংবা চরমপন্থা চলে আসে, সেটা কখনোই গ্রহনযোগ্য নয়৷
ছবি: DW
শিহাব সরকার
ঢাকার একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী শিহাব সরকার৷ তার মতে, ধর্ম ধর্মের জায়গায় আর রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়৷ বলা বাহুল্য, ধর্মের নামে রাজনীতি তিনিও সমর্থন করেন না৷
ছবি: DW
আসিফ হামিদী
আসিফ হামিদীও মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন৷ তিনিও মনে করেন ধর্ম এবং রাজনীতি কখনোই এক হতে পারে না৷ তাই ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ঘোর বিরোধী তিনি৷
ছবি: DW
মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর
ঢাকার একটি মাদ্রাসা থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করেছেন মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর৷ তাঁর মতেও রাজনীতি ধর্মভিত্তিক হতে পারে না৷ তবে আল্লাহ এবং রাসুলের কিংবা ইসলামের উপর কোনোরকম আঘাত আসলে তার বিরোধীতা করা সব মুসলমানের নৈতিক দ্বায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি৷
ছবি: DW
সাদমান আহমেদ সুজাত
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদমান আহমেদ সুজাত৷ তাঁরও ঐ এক কথা৷ ‘‘ধর্ম এবং রাজনীতি কখনো এক হতে পারে না৷’’ তিনি জানান, ‘‘ধর্ম আমরা সাধারণত জন্মগতভাবে পাই, কিন্তু রাজনীতিকে আমরা অনুসরণ করি৷’’
ছবি: DW
সাজ্জাদ হোসেন শিশির
ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন শিশির৷ তাঁর মতে, রাজনীতি সবসময়ই ধর্ম নিরপেক্ষ হওয়া উচিত৷ তাঁর বিশ্বাস, ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে মিশিয়ে ফেললে তার ফল কখনো ভালো হয় না৷
ছবি: DW
দাউদুজ্জামান তারেক
ঢাকার আরেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দাউদুজ্জামান তারেক মনে করেন, রাজনীতির সঙ্গে ধর্মের কখনো মিল হতে পারে না৷ কারণ বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা একই রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসরণও করতে পারেন৷
ছবি: DW
8 ছবি1 | 8
জেডএইচ/ডিজি (সিবিসি নিউজ, ডেইলি স্টার, ঢাকা ট্রিবিউন)