অ্যামেরিকা-ক্যানাডা সীমান্তে অবরোধ করেছিল 'ফ্রিডম কনভয়' বিক্ষোভকারীরা। ৩৬ ঘণ্টার চেষ্টায় পুলিশ তাদের তুলতে পেরেছে।
ছবি: Nathan Denette/The Canadian Press/ AP/picture alliance
বিজ্ঞাপন
করোনা লকডাউন, ভ্যাকসিন, কোভিড পাসপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন ক্যানাডার নানা স্তরের মানুষ। বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশ ট্রাক ড্রাইভার। ক্যানাডা-অ্যামেরিকা সীমান্তে যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন। সীমান্ত পার করতে হলে টিকাকরণ বাধ্যতামূলক, ক্যানাডার এই ঘোষণার পর তারা ফ্রিডম কনভয়ের পরিকল্পনা করেন। গত এক সপ্তাহ ধরে ক্যানাডায় সেই আন্দোলনই চলছিল। রোববার সেই আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে তুলে দিয়েছে পুলিশ। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
করোনাবিধিবিরোধী ট্রাকচালকদের বিক্ষোভে অচল ক্যানাডার রাজধানী
জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি পরিস্থিতি৷ তাই প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মন্তব্য, ‘‘এটা (বিক্ষোভ) থামতেই হবে৷’’ অটোয়ার রাস্তা থেকে ট্রাক আর বিক্ষোভকারীরা কবে সরবে সেটাই এখন দেখার...
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
মুক্তি দাবি
এখনো যারা টিকা নেননি তাদের জন্য কঠোর নিয়ম করেছে ক্যানাডা সরকার৷সেই নিয়মে টিকা না নেয়া ট্রাক চালকরা পড়েছেন বিপদে৷ নিয়ম অনুযায়ী পণ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেলে টিকা-সনদ দেখাতে না পারলে তারা আর দেশে ফিরতে পারবেন না৷এই নিয়মের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি চায় তারা৷ তাই অটোয়ার রাস্তায় ট্রাকের পেছনে লাগানো হচ্ছে পোস্টার, যাতে লেখা ‘ফ্রিডম’৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
জ্বালানি তেলের ছড়াছড়ি
সরকারের ঘোষণা করা এই নিয়মের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাতে রাজধানীতে ভিড় করেছে শত শত ট্রাক৷ ট্রাক নিয়ে আসা চালকেরা রাস্তায়ই থাকছেন, খাচ্ছেন, লাগাতার হর্ন বাজিয়ে বিপর্যস্ত করে তুলছেন জনজীবন৷পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন অটোয়ার মেয়র৷ পুলিশ ঘোষণা করেছে- ট্রাক চালকদের সরাতে ট্রাকের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে৷ তাই অনেকে সেখানে জ্বালানি নিয়ে যাচ্ছেন৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
রান্নাঘর রক্ষার চেষ্টা
পেছনের এই খুপড়িতে খাবার রান্না করতেন ট্রাকচালকেরা৷ সেই অস্থায়ী রান্নাঘর বন্ধ করে দেবে পুলিশ৷ তাই তা রক্ষার জন্য পাহারা দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
ট্রুডোর এ কেমন ঘর!
অটোয়ার পার্লামেন্ট স্কয়ারে এক ট্রাকে দেখা যাচ্ছে পোস্টার আর ব্যানার৷ পোস্টারে লেখা ‘নো ভ্যাকসিন পাসপোর্ট, নো ম্যান্ডেট’ আর একটা ব্যানারে লেখা, ‘ট্রুডোর নতুন ঘর’৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
জ্বালানি মজুদ
পুলিশ ট্রাকের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধে করে দেবে৷ তাই ট্রাকে জ্বালানি ভরছেন একজন৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
পুলিশকে কটাক্ষ
পুলিশ ট্রাকের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয়ায় ট্রাকচালকদের সমর্থক এক বিক্ষোভকারী জ্বালানি পান করার ভাণ করছেন৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
মাস্ক দিয়েই প্রতিবাদ
নাক-মুখ খোলা মাস্ক পরেছেন এক বিক্ষোভকারী, সেই মাস্কেই লেখা ‘ফ্রিডম’৷
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
রাস্তায় খেলাধুলা
বিক্ষুব্ধ ট্রাকচালক এবং অন্য করোনাবিধি-বিরোধী অন্য বিক্ষোভকারীরা রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে৷ তাই রাস্তাই এখন হকি খেলার মাঠ৷
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
বিক্ষোভকারীদের ড্যান্স পার্টি
অটোয়ার রিডু সেন্টারের বাইরে বিক্ষোভকারীরা মেতেছে নাচের উৎসবে৷
বিক্ষোভে সমর্থন জানাতে ট্রাকের গায়ে স্বাক্ষর করছেন একজন৷ তার আগে স্বাক্ষর করেছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী৷
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
বিক্ষোভের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
ট্রাক চালকদের বিক্ষোভে অটোয়ার জনজীবন বিপন্ন৷ তাই সেই বিক্ষোভের বিরুদ্ধেও দানা বাঁধছে বিক্ষোভ৷ এক সমাবেশ থেকে তাই করোনাবিধি-বিরোধী ট্রাকচালকদের প্রতি আহ্বান, ‘‘এ শহরকে আতঙ্কগ্রস্ত করা বন্ধ করুন৷’’
ছবি: Blair Gable/REUTERS
ট্রুডোর বিরুদ্ধে জমছে ক্ষোভ
১২ দিন ধরে করোনাবিধি-বিরোধীদের অবস্থানের কারণে অচল রাজধানী অটোয়া৷ সরকার তাদের সরাতে এখনো কঠোর ব্যবস্থা না নেয়ায় এক নগরবাসীর প্রশ্ন, ‘‘ট্রুডো কোথায়?’’
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
13 ছবি1 | 13
ক্যানাডায় ৯০ শতাংশ মানুষের টিকাকরণ হয়ে গেছে। কিন্তু অল্পসংখ্যক মানুষ কোভিড টিকার বিরোধী। টিকা, কোভিড পাসপোর্ট, লকডাউন-- সবকিছু নিয়েই তাদের মধ্যে মতান্তর আছে। এই পরিস্থিতিতে তারা বড়সড় আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। দেশের নানা প্রান্তে তারা ফ্রিডম কনভয় নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিল। রাজধানীর পাশাপাশি সবচেয়ে বড় অবরোধ হয়েছিল উইন্ডসরের অ্যাম্বাসডর ব্রিজে। অ্যামেরিকা-ক্যানাডা সীমান্তের এই ব্রিজে প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে অবরোধ করেছিল আন্দোলনকারীরা। বড়বড় ট্রাক, পিক আপ ট্রাক, এমনকী, কুকুর নেওয়ার গাড়িও সামিল হয়েছিল বিক্ষোভে। ক্যানাডার পতাকা লাগিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল।
ট্রাক চালকদের ধর্মঘট নিয়ে উত্তপ্ত ক্যানাডার সংসদ
02:45
This browser does not support the video element.
ব্রিজ অবরোধ হওয়ায় ক্ষতি হচ্ছিল অ্যামেরিকা-ক্যানাডা বাণিজ্যে। শুক্রবার থেকেই পুলিশ তাদের তোলার চেষ্টা করছিল। শনিবার আদালতের অর্ডারও নিয়ে যাওয়া হয় তাদের কাছে। আদালতের নির্দেশ দেখে বেশ কিছু অবরোধকারী শনিবারই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু কিছু বিক্ষোভকারী থেকে যায়। রোববার দীর্ঘ চেষ্টার পর পুলিশ তাদের তুলতে সক্ষম হয়। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বলপ্রয়োগ করে অনেক আগেই তারা বিক্ষোভকারীদের তুলে দিতে পারতো। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে নিয়ে এসেছিল। বলপ্রয়োগ করলে বা কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়লে শিশুদের ক্ষতি হতে পারতো। সে জন্যই পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে বিক্ষোভ তুলেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
ক্যানাডার অন্য প্রান্তের অবরোধগুলিও তোলার চেষ্টা হচ্ছে। সেখানেও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে রাজধানীর অবরোধ এখনো অব্যাহত।