এ যেন এক রূপকথার রাজকন্যার বিয়ে! ক্যান্সার আক্রান্ত পাঁচ বছরের এইলেড প্যাটারসন বিয়ে করলেন প্রিয় বন্ধু হ্যারিসন গ্রিয়ারকে৷ মৃত্যুর প্রহর গুনছে ছোট রাজকুমারী৷ তাই তার ইচ্ছে পূরণে বাধা দেয়নি কেউ৷
বিজ্ঞাপন
দুরারোগ্য ক্যান্সারে (নিউরোব্লাস্টোমা) আক্রান্ত সে৷ রোগের প্রকোপে ঝরে গিয়েছে মাথার সব চুল৷ এখন শুধু মৃত্যুর প্রহর গুনছে ক্ষুদে রাজকুমারী এইলেড প্যাটারসন৷ মৃত্যুর আগে ইচ্ছে পূরণের একটি তালিকা তৈরি করেছে স্কটল্যান্ডের মেয়েটি৷ এর মধ্যে রয়েছে নিজের প্রিয় বন্ধুকে বিয়ে করার ইচ্ছে৷ তার এই ইচ্ছেতে বাধ সাধেনি দুই পরিবার৷ তাই পরিবারের সম্মতিতে নিজের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছয় বছরের হ্যারিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে এইলেড প্যাটারসনের৷
দুই পরিবারই বিভিন্ন অসহায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ক্যান্সারের কষ্ট ভুলিয়ে মেয়েটির মুখে হাসি ফোটাতে৷ এ অবস্থায় এইলেড নিজেই যখন প্রিয় বন্ধু হ্যারিসনকে বিয়ে করার আবদার করে বসল, তখন একটুও না ভেবে তাতে সম্মতি দিল দুই পরিবার৷ তার ছোট্ট জীবনের এই ক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে তোড়জোর শুরু করে দেয় দুই পরিবার৷
১৮ জুন এইলেড-হ্যারিসনের বিয়ে উপলক্ষে একত্রিত হয়েছিলেন দুই পরিবারের ঘনিষ্টজনরা৷ সন্ধ্যার প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি আয়োজনই ছিল একেকটা চমক৷ আর এই চমক ও বিস্ময়ে ছোট্ট এইলেড বেজায় খুশি তার প্রিয় বন্ধুকে পাশে পেয়ে৷ এইলেডের মা গেইল প্যাটারসন শোনান এইলেডের ছোট জীবনের নানা গল্প৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রতিটি মানুষের প্রার্থনা ছিল এইলেডের শেষের দিনগুলো যেন ভালো কাটে, আনন্দে, ভালোবাসায় ভরে ওঠে৷
২৩ শে জুন ফেসবুকে বিয়ের ভিডিওটি আপলোড করার পর এ পর্যন্ত ১৭ লাখ বার দেখা হয়েছে৷ শেয়ার হয়েছে ৪ হাজারের বেশি বার৷ ইনসাইড এডিশন ২০ জুন ভিডিওটি ইউটিউবে প্রকাশের পর ১ লাখেরও বেশির বার দেখা হয়েছে৷
এপিবি/এসিবি
সিরিয়ায় ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা বন্ধ
সিরিয়ার দামেস্ক শহরের শিশু হাসপাতালে ক্যানসার ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা ওষুধ ও প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাবে শিশুদের চিকিৎসা দিতে পারছেন না৷ তবে এটা যে শুধুমাত্র সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের কারণে হচ্ছে, তা নয়৷
ছবি: Reuters/O.Sanadiki
যুদ্ধাবস্থায় হাসপাতালের পরিস্থিতি
চিকিৎসা সেবায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে একসময় বেশ সুনাম ছিল সিরিয়ার৷ কিন্তু ছয় বছরের দ্বন্দ্ব-সংঘাতে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে৷ অর্ধেকেরও কম হাসপাতাল ঠিকমত কাজ করছে দেশটিতে৷ দামেস্কের হাসপাতালগুলোতে প্রতি সপ্তাহেই ভিড় করছে কমপক্ষে ২০০ শিশু, যাদের ৭০ ভাগই আসছে রাজধানীর বাইরে থেকে৷
ছবি: Reuters/O.Sanadiki
নিষেধাজ্ঞার কারণে ওষুধপত্র অপ্রতুল
দামেস্কের শিশু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছে রোগীরা৷ স্থানীয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদির অভাবের কারণ হিসেবে সিরিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করছে৷ কেননা বেশিরভাগ ওষুধপত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো থেকেই আসতো সিরিয়ায়, যেগুলো তারা আর আসতে দিচ্ছে না দেশটিতে৷
ছবি: Reuters/O.Sanadiki
ব্যয় কমিয়েছে সরকার
যুদ্ধ মানেই তা ব্যয়বহুল৷ আর এই ব্যয়ের কারণে সরকার স্বাস্থ্য খাতে বাজেট কমিয়েছে৷ নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থের দাম পড়ে গেছে সিরিয়ায়৷ আর বিদেশি ওষুধ না পেয়ে রোগীরা দিন কাটাচ্ছে অসহায় অবস্থার মধ্যে৷ যুদ্ধ শুরুর আগে দেশে ব্যবহৃত ৯০ ভাগ ওষুধ নিজেরাই উৎপাদন করত সিরিয়া৷ তবে ক্যানসারের ওষুধগুলো বরাবরই আমদানি করতে হতো৷
ছবি: Reuters/O.Sanadiki
স্বাস্থ্যখাতে বাজেট কম
একটি অসুস্থ শিশুর দেখভাল করছেন এক নার্স৷ সিরিয়ার অবস্থানরত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২০১১ সালে যুদ্ধ শুরুর পর সিরীয় সরকার স্বাস্থ্যখাতে বাজেট কমানোর কারণে বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে৷
ছবি: Reuters/O.Sanadiki
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব
সিরিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি এলিজাবেথ হফ জানান, দেশটির উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্যানসারবিরোধী বিশেষ কিছু ওষুধ আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না৷
ছবি: Reuters/O.Sanadiki
চিকিৎসার জন্য রোগীদের অপেক্ষা
ক্যানসারের রোগী ফাহাদ মোবাইল ফোন নিয়ে খেলছে আর তার মা বসে আছেন বিছানায়৷ চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করছেন এরা৷ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বিদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে সিরিয়ায়৷ তাই ওষুধপত্র না থাকায় ঠিকমত চিকিৎসা সেবা দিতে পারছেন না চিকিৎসকরা৷
ছবি: Reuters/O.Sanadiki
চিকিৎসায় বিলম্ব
বেসরকারি সংস্থা ‘বাসমা’ দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য ক্যানসারের ওষুধ কিনতে তহবিল সংগ্রহ করে থাকে৷ সংস্থাটির নির্বাহী ব্যবস্থাপক রিমা সালেম বললেন, ‘‘যুদ্ধ শুরুর পর সাহায্যপ্রার্থী পরিবারের সংখ্যা ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ বেড়েছে৷’’ কিন্তু চিকিৎসা শুরু হতেই দেরি হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ সময়৷ তাই উদ্বিগ্ন সালেম জানান, ‘‘চিকিৎসা দিতে দেরি হলে যে কোনো দিন মারা যেতে পারে যে কোনো শিশু৷’’