অ্যামেরিকার ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবের তীব্র নিন্দায় বিশ্ব নেতারা। তাঁদের মতে, এটা গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ।
বিজ্ঞাপন
তাঁরা কেউ বলছেন, গণতন্ত্রের উপর আঘাত, কেউ বলছেন গণতন্ত্রের পক্ষে মর্যাদাহানিকর কাজ, কেউ বলছেন, এই ঘটনায় গণতন্ত্রের শত্রুরাই শুধু উল্লসিত হবে। এককথায় বিশ্ব নেতারা কেউই অ্যামেরিকার ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের আচরণ মেনে নিতে পারছেন না। সকলেই প্রতিবাদ করছেন এবং তাঁরা ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর চান।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মতে, ''মার্কিন কংগ্রেসে অমর্যাদাকর দৃশ্য দেখা গেল। অ্যামেরিকার মতো গণতন্ত্রে ক্ষমতা হস্তান্তর যেন শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে হয়।''
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেছেন, মার্কিন গণতন্ত্রের শক্তির উপর তাঁর বিশ্বাস আছে। উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।
ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বক্তব্য, ''অ্যামেরিকার ঘটনায় তাঁর দেশ অত্যন্ত বিচলিত এবং দুঃখিত। সহিংসতা কখনোই জনগণের রায়কে বানচাল করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রই বিজয়ী হবে।''
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে বলেছেন, ''ওয়াশিংটন ডিসি-তে সহিংসতার ঘটনার খবরে বিপন্ন বোধ করছি। ক্ষমতার হস্তান্তর শান্তিপূর্ণভাবে হওয়া উচিত। এই ধরনের বেআইনি প্রতিবাদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আঘাত মেনে নেয়া যায় না।''
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাসের প্রতিক্রিয়া, ''ওয়াশিংটন ডিসি-র ঘটনায় গণতন্ত্রের শত্রুরাই উল্লসিত হবে। ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকরা যেন জনগণের রায় মেনে নেন এবং গণতন্ত্রকে পদদলিত করা বন্ধ করেন।''
ট্রাম্প সমর্থকদের ‘সেভ অ্যামেরিকা মার্চ’
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে তার সমর্থকরা রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘সেভ অ্যামেরিকা মার্চ’ শুরু করেছে৷ ছবিঘরে বিস্তারিত৷
ছবি: Jim Urquhart/REUTERS
ট্রাম্পের আহ্বান
২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি হয়েছে বলে বরাবরই দাবি করে আসছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ এবার ওয়াশিয়টন ডিসিতে এক সমাবেশের আহ্বান করলেন তিনি৷ স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ১১টায় হোয়াইট হাউজের কাছে এলিপসে সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্পের ভাষণ দেয়ার কথা৷
কী হবে ৬ জানুয়ারি?
ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটের যে ফল জানা গেছে সেটা এখনো ‘আনুষ্ঠানিক’ ফলাফল নয়৷ এই ভোটের ফল পাঠানো হয়েছে রাজধানীতে এবং ছয় জানুয়ারি কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে ভোট আনুষ্ঠানিকভাবে গণনা করা হবে৷ এরপরই আসবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড
মার্কিন নির্বাচনে হার নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে একের পর এক নাটকের জন্ম দিয়ে চলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আর হয়নি এমন অনেক কিছুই করছেন তিনি৷ এবার দিলেন নির্বাচনের ফলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক৷
ছবি: Samuel Corum/Getty Images
উত্তপ্ত ওয়াশিংটন ডিসি
রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হচ্ছেন ট্রাম্প সমর্থকরা৷ ‘মার্চ টু সেভ অ্যামেরিকা’ ব্যানার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সামনে জড়ো হয়েছেন তারা৷ বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে৷ এতে আহত হন কয়েকজন৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
সততার জয় কামনা...
‘সততার মূল্যায়ন হোক, জালিয়াতির নয়’ এমন প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সুপ্রিম কোর্টের সামনে৷ কারো হাতে প্ল্যাকার্ড ‘চুরি বন্ধ কর’৷
ছবি: Jim Urquhart/REUTERS
হাজারো সমর্থক
সমাবেশকে কেন্দ্র করে ৫ হাজার সমর্থক এরই মধ্যে ডিসিতে পৌঁছেছেন৷ সমাবেশে ৩৫ হাজার সমর্থক যোগ দেবেন বলে জানা গেছে৷
ছবি: Samuel Corum/AFP
গ্রেপ্তার
ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ এদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে পুলিশকে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছে৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
অদ্ভুত সাজপোশাকে
কেউ কেউ এমন সাজপোশাকে উপস্থিত হয়েছেন, মনে হচ্ছে কোনো কার্নিভালে অংশ নিতে এসেছেন৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
রক্ষণশীলদের সক্রিয়তা
প্রাউড বয়েজসহ অন্য রক্ষণশীল ট্রাম্প-সমর্থকরা বড় ধরনের মহড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ এছাড়া কট্টরপন্থি ডানপন্থি গ্রুপ থ্রি পার্সেন্টার্সও ফ্রিডম প্লাজায় নেমেছে বিক্ষোভে৷ শিরোস্ত্রাণ আর বর্ম পরেও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন কেউ কেউ৷
ছবি: Leah Millis/REUTERS
মামলা
ভোট চুরির অভিযোগে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের আদালতে ডনাল্ড ট্রাম্পের করা মামলাগুলো একের পর এক খারিজ হয়ে যাচ্ছে৷ ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাবেন তারা৷
ছবি: Leah Millis/REUTERS
10 ছবি1 | 10
সাবেক প্রেসিডেন্টদের প্রতিক্রিয়া
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ও তাঁর স্ত্রী লরা বলেছেন, ক্যাপিটলের দৃশ্য দেখে তাঁদের মন ভেঙে গেছে। মিথ্যা প্রচার ও মিথ্যা আশা কিছু মানুষের ভাবাবেগ উসকে দিয়েছে।
বিল ক্লিন্টনের মতে, ''এই ঘটনা হলো ট্রাম্পের বিষাক্ত রাজনীতির ফল। ট্রাম্প ভোটে হেরেছেন। তারপরেও এভাবে ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন।''
বারাক ওবামাও এই ঘটনার জন্য পুরোপুরি ট্রাম্পকে দায়ী করে বলেছেন, ''এটা হলো আমাদের দেশের কাছে লজ্জার এবং মর্যাদাহানিকর ঘটনা।'' তাঁর মতে, ''রিপাবলিকানদের সামনে দুইটি বিকল্প আছে, এক, যে রাস্তায় তাঁরা হাঁটছেন, সেই রাস্তায় চলা এবং আগুন লাগানোর কাজ করা, দুই, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা।''