ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার জন্য প্রাউড বয়েজের বিরুদ্ধে মামলা
১৫ ডিসেম্বর ২০২১
ওথ কিপারের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল। এই প্রথম কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমন মামলা করলেন।
বিজ্ঞাপন
গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন ইতিহাসে এক দুঃস্বপ্নের দিন। ওই দিন মার্কিন প্রশাসনিক ভবন ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্পপন্থিরা। ক্যাপিটলে ঢুকে তারা কাগজপত্র তছনছ করে দিয়েছিল। তাণ্ডব চালিয়েছিল একাধিক অফিস এবং কংগ্রেসে। এবার সেই দাঙ্গার জন্য সরাসরি প্রাউড বয়েজ এবং ওথ কিপারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেন ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্ল র্যাসিন। এক বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, 'ওই দিনের হামলার পিছনে প্রাউড বয়েজ এবং ওথ কিপারের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। সে কারণেই ওই দুই গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করার জন্ এই মামলা করা হয়েছে।'
ক্যাপিটল হামলায় যে প্রাউড বয়েজ এবং ওথ কিপারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল, তা কার্যত পরিষ্কার। সে সময় তাদের করা বহু পোস্ট থেকেই জানা গেছে, তারা ওই হামলাকে সমর্থন করছে। শুধু তাই নয়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও তাদের কার্যত সমর্থন করেছিলেন। বস্তুত, ঘটনার পর বাইডেনপন্থিরা হামলার জন্য ট্রাম্পের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন। তার মন্তব্যের পরেই জনগণ ক্যাপিটলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে আদালতে মামলাও চলছে। ক্যাপিটল হামলার নথি নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। আদালত এ বিষয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য নস্যাৎ করে দিয়েছে।
ছবিতে ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের বিক্ষোভ
বুধবার ট্রাম্প সমর্থকরা নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ক্যাপিটল ভবনে। পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে। ছবিতে ঘটনার কিছু মুহূর্ত।
ছবি: Spencer Platt/Getty Images
ক্যাপিটলের দিকে মার্চ
ক্যাপিটল ভবনের দিকে মার্চ করছেন বিক্ষুব্ধ ট্রাম্প সমর্থকরা। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করছে।
ছবি: Roberto Schmidt/AFP/Getty Images
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
বুধবার ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল ভবনে বিক্ষোভ দেখান ট্রাম্প সমর্থকরা। পার্লামেন্টের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ট্রাম্প সমর্থনকারীরা। পুলিশ ব্যারিকেড লাগিয়ে তাঁদের থামানোর চেষ্টা করছে।
ছবি: Stephanie Keith/REUTERS
ক্যাপিটলে ঢুকছেন বিক্ষোভকারীরা
জোর করে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়ছেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ কোনোভাবেই তাঁদের আটকাতে পারেনি। ভিতরে তখন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলছে।
ছবি: Win McNamee/Getty Images
বন্দুকের মুখে
বিক্ষোভকারীরা ক্যাপিটলের ভিতরে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। তাদের আটকাতে পুলিশ বন্দুক বের করতে বাধ্য হয়।
ছবি: J. Scott Applewhite/AP Photo/picture alliance
সেনেটের হলঘরে ধুন্ধুমার
বিক্ষোভকারীরা পৌঁছে যায় সেনেটের হলঘরে। অধিবেশন কক্ষের দরজা আটকে তখন নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন সেনেটররা। পুলিশ হলঘর থেকে বিক্ষোভকারীদের বের করার চেষ্টা করছে।
ছবি: Manuel Balce Ceneta/AP Photo/picture alliance
সেনেট দখলের চেষ্টা
পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এই বিক্ষোভকারী ঢুকে পড়েছে সেনেটের হলঘরে। 'ফ্রিডম' বলে চিৎকার করতে করতে তিনি অধিবেশন কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করেন।
বিক্ষোভকারীরা এভাবেই পৌঁছে যান ক্যাপিটল ভবনের রোটান্ডায়। স্পিকারের বক্তৃতা করার পোডিয়াম পর্যন্ত তাঁরা তুলে ফেলেন।
ছবি: Win McNamee/Getty Images
কাঁদানে গ্যাস
শেষপর্যন্ত সেনেট হলেই কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করে পুলিশ। তাতেও বিক্ষোভকারীদের বাইরে পাঠানো যায়নি।
ছবি: Andrew Caballero-Reynolds/AFP/Getty Images
ক্যাপিটলের বাইরের ছবি
সন্ধে থেকে এমনই ছিল ক্যাপিটলের পরিস্থিতি। উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ওয়াশিংটনে। কারফিউ ঘোষণা করা হয়।
ছবি: Leah Millis/REUTERS
পুলিশের ঢাল
শেষ পর্যন্ত রায়ট পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীদের বের করা সম্ভব হয়। ততক্ষণে গুলিও চালিয়েছে পুলিশ। মৃত্যু হয়েছে এ বিক্ষোভকারীর।
ছবি: Spencer Platt/Getty Images
13 ছবি1 | 13
এই পরিস্থিতিতে অ্যাটর্নি জেনারেলের মামলা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, অ্যামেরিকায় প্রাউড বয়েজ এবং ওথ কিপারের মতো অতি দক্ষিণপন্থি সংগঠনগুলিকে সরাসরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলা হবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। ক্যানাডা অবশ্য প্রাউড বয়েজকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবেই চিহ্নিত করেছে। দুইটি গোষ্ঠীই হেট স্পিচের জন্য বিখ্যাত। দুইটি গোষ্ঠীই হোয়াইট সু্প্রিমেসি বা বর্ণবাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ট্রাম্পের ইন্ধনে এরাই ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালিয়েছিল বলে মনে করেন বহু বিশেষজ্ঞ। সম্প্রতি ওথ কিপারের এক সদস্য আদালতে নিজের দোষ স্বীকারও করেছে। তারপরেই অ্যাটর্নি জেনারেল এই মামলা করলেন।