1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শরণার্থীদের উপর পুলিশি নির্যাতন

৬ মে ২০২০

ফ্রান্সের ক্যালে জঙ্গলে এখনো বহু শরণার্থী বাস করছে৷ করোনা মহামারী যাদের জীবন আরো কঠিন করে তুলেছে৷ সুপারমার্কেটগুলোতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না৷ প্রতিনিয়ত পুলিশ তাদের তাঁবু কেড়ে নিচ্ছে৷

ফ্রান্সের ক্যালেতে শরণার্থীদের তাঁবুছবি: DW/L. Louis

ক্যালে ও ডানকেখহ জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া এই শরণার্থীরা যেকোনো উপায়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে চায়৷

জঙ্গলের সবুজ ঘাসের উপর ছোট ছোট তাঁবুতে বাস শরণার্থীদের৷ পুলিশ ভ্যান আসলে কুখ্যাত এই শরণার্থী ক্যাম্পে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়৷ সেই ২০১৮ সালের অগাস্ট থেকে প্রতি দুইদিন অন্তর অন্তর পুলিশ এই ক্যাম্পে হাজির হয় এবং শরণার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে৷ পুলিশ দেখলেই নিজেদের তাঁবু তুলে জঙ্গলের গভীরে চলে যায় শরণার্থীরা৷ পুলিশ চলে গেলে ফিরে আসে নিজের জায়গায়৷

করোনা ভাইরাস মহামারীর বিস্তার রোধে দেশ লকডাউন করে দেয়া হলেও ক্যালেতে এ নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি৷

ইরিত্রিয়া থেকে আসা ২৮ বছরের এক শরণার্থী বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের মানুষই মনে করে না৷ যদি তারা আসার পর আপনি উঠে না পড়েন তবে তারা তাঁবু কেড়ে নেয়৷ তখন ত্রাণকর্মীদের কাছে আবার তাঁবু চাইতে হয়, যেটা পেতে এক সপ্তাহের বেশি পার হয়ে যায়৷’’

পুলিশ জীবননাশের হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন শরণার্থী৷ তাদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের পিটিয়েছে, টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়েছে এবং ‘বানর’ ও ‘কুকুর’ বলে গালি দিয়েছে৷

লকডাউনে শরণার্থীদের চলাফেরাও অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ তাদের মূল শহরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ সুপারমার্কেটে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ৷ লোকাল বাসও তোদের তোলা বন্ধ করে দিয়েছে৷

এ বিষয়ে নগরীর ডেপুটি মেয়র ফিলিপ মিনয়ঁনেট বলেন, "বাসগুলোতে আর দলবেঁধে শরণার্থীদের উঠতে দেওয়া হচ্ছে না৷ তবে তারা আলাদা উঠতে বাধা নেই, বিশেষ করে যেসব বাস হাসপাতালের দিকে যায় সেগুলোতে৷

‘‘ক্যাম্পে তিন জনের করোনা ভাইরাস পজেটিভ হওয়ার পর আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ নাহলে অন্যরা বাসে উঠতে চাইছিল না৷’’

ক্যাম্পে শুধু তিনজন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত এমনটা বলা কঠিন৷ ত্রাণকর্মীরা জানান, সেখানে আরো বেশ কয়েকজনের শরীরে করোন ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ দেখা গেছে৷ কিন্তু তারা পরীক্ষা করাতে পারেনি৷ সেখানে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব৷ পুরো ক্যাম্প আবর্জনায় পূর্ণ৷ তাদের মাস্ক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিছুই নেই৷

ডিসেম্বরে ক্যালেতে আসা ২০ বছরের নোয়েল বলেন, ‘‘মহামারীর শুরু থেকেই আমাদের সুরক্ষার জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি৷ আমাদের এখানে ফেলে রাখা হয়েছে৷ আমরা এখানে আটকে গেছি৷ কয়েকজনকে আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ কিন্তু সেখানে চারজনকে একটি রুমে থাকতে হয়-এটা অবৈধ৷ তাই অনেকে চলে এসেছে৷ এমনকি অনেকে দুইদিন ধরে হেঁটে এখানে ফেরত এসেছে৷’’

আশ্রয় শিবিরগুলোর অবস্থাও ভালো নয়৷ করোনাকালে সেখানে কর্মীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে৷ এদিকে, ধারণ ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ শরণার্থী থাকছে৷ টান পড়েছে ত্রাণ সাহায্যেও৷

ক্যালের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মিশেল তুহনেয়াঁ বলেন, মেডিকেল টিম নিয়মিত শরণার্থীদের পরীক্ষা করছে৷

‘‘এছাড়া আমরা ৭১৫ জন শরণার্থীকে আশ্রয় শিবিরে যেতে বলেছি৷ যেখানে তারা ‍চিকিৎসা পাবে৷ ৩৫৩ জন সেখানে এরইমধ্যে চলে গেছে৷ নিয়মানুযায়ী দুইদিন পরপর আমাদের জঙ্গলে অভিযান চালাতেই হবে, যতদিন অবৈধ শরণার্থী সেখানে থাকবে৷ তাদের সেখানে বসত গড়া থেকে আটকাতে হবে৷ এটা ঠিক না ভুল তা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না৷ আমাদের বিচার বিভাগ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷’’

ত্রাণকর্মীরা জানান, সেখানে প্রায় ১২শ শরণার্থী রয়েছে৷ সরকারি হিসাবের থেকে প্রায় দ্বিগুণ৷ এতজনের জন্য মাত্র ছয়টি টয়লেট৷ যেখানে হাত ধোয়ার জন্য এমনকি সাবান পর্যন্ত নেই৷ সরকারের তাদের জন্য আরেকটু বেশি কিছু করা উচিত৷

লিসা লুই/এসএনএল

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ