ইউক্রেনের বিমানবাহিনী দাবি করেছে, ক্রাইমিয়ার বন্দরে রাশিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজ সফলভাবে ধ্বংস করেছে তারা।
বিজ্ঞাপন
রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের ফাইটার জেটের হামলায় জাহাজটির ক্ষতি হয়েছে। ইউক্রেনের দুইটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছে।
মঙ্গলবার মস্কো জানিয়েছে, ক্রাইমিয়ার ফিওদোসিয়া বন্দরে রাশিয়ার নৌসেনার একটি যুদ্ধবিমান নামার মতো জাহাজ দাঁড়িয়ে ছিল। যাকে মূলত ল্যান্ডিং শিপ বলা হয়। ইউক্রেনের যুদ্ধবিমান থেকে সেই জাহাজটির উপর হামলা চালানো হয়। ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেন দাবি করেছে, জাহাজটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে।
ক্রাইমিয়ার রুশ গভর্নর জানিয়েছেন, ঘটনায় দুইজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ওই হামলার পর রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে দুইটি ইউক্রেনীয় যুদ্ধবিমানকে নামানো হয়েছে। তবে সেই বিমানের পাইলটদের বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। ইউক্রেন এখনো পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।
ইউক্রেনে আতঙ্কের নগরীতে সুরের মূর্ছনা
যুদ্ধ চলছে একদিকে, অন্যদিকে রাতের আঁধারে মোমবাতি জ্বালিয়েও ধ্রুপদী সংগীতের সুরে বাঁচার আনন্দ নিচ্ছেন অসংখ্য মানুষ৷ লভিভে প্রায় প্রতিদিনের এমন এক আয়োজনের কথা জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
আকাশে যুদ্ধবিমান, নীচে কনসার্ট
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের আকাশে যখন যুদ্ধবিমান আতঙ্ক ছড়ায়, তখনো অর্গান হলে থাকে সুরপাগল মানুষদের ভিড়৷ মগ্ন হয়ে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার পারফর্ম্যান্স উপভোগ করেন তারা৷ অনেক সময় মোমের আলোয় চলে কনসার্ট৷ শ্রোতারা মোমের আলোয় এতটাই অভ্যস্ত যে মাঝে মাঝে যুদ্ধবিমান ফিরে গেলে, কিংবা বিদ্যুৎ ফিরে এলেও আলো জ্বালাতে চান না তারা৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
কম আয়, অনেক বেশি আনন্দ
যুদ্ধপরিস্থিতিতে কনসার্ট আয়োজনে প্রতিকূলতা অনেক৷ মৃত্যুঝুঁকি তো থাকেই, কনসার্ট আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও জোটে না৷ অথচ ঝুঁকি নিয়ে সংগীত উপভোগ করতে আসা অনেকেই চান দীর্ঘক্ষণ চলুক কনসার্ট, আবার কবে আসা হবে, আদৌ সে সুযোগ আর হবে কিনা তার তো ঠিক নেই!
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
আনন্দটাই বড় বিষয়
লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার কো-ডিরেক্টর টারাস ডেমকো মনে করেন যুদ্ধের সময় মানুষকে সামান্য আনন্দে রাখাও অনেক বড় ব্যাপার৷ রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া একটানা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ এ অবস্থায় মানুষকে তো আমাদের সহায়তা করতে হবে৷ প্রতিদিন কয়েক মিনিটের জন্যও যদি তাদের মনে একটু শান্তি দেয়া যায় তা-ও তো অনেক!’’
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
যুদ্ধের পর যুদ্ধ
১৯১৫ সাল পর্যন্ত লুহানস্কে পারফর্ম করেছে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক৷ রুশ-সমর্থিত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা’ লুহানস্ক দখল করে নেয়ার পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট শহর সিভিয়েদনেৎস্কে চলে যায় তারা৷ গত বছর রুশ হামলায় সিভিয়েরদনেৎস্কও বিদ্ধস্ত হয়৷ তখন বাধ্য হয়েই লভিভে চলে আসে লুহান্স্ক ফিলহার্মোনিক৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
‘সংগীত আত্মবিশ্বাস জোগায়’
লভিভে কনসার্ট করতে পেরে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার পরিচালক ইগর শাপোভালভ খুব খুশি৷তিনি মনে করেন কনসার্ট আয়োজন করে যুদ্ধের কারণে বিপর্যস্ত অনেক মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছেন, কারণ, ‘‘প্রাচীন কাল থেকে সংগীত মানুষকে নানাভাবে শক্তি জুগিয়ে আসছে৷ সংগীত অনেক মানুষকে আত্মবিশ্বাস জোগায়, অনেকের কাছে আবার সংগীত মানসিক দুরবস্থা কাটিয়ে ওঠার উপায়৷’’
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
হামলা হলে কনসার্ট বন্ধ
লভিভে রাশিয়ার বড় ধরনের হামলা খুব কম হয়েছে৷ তাই এখন কনসার্ট হচ্ছে প্রায় নিয়মিত৷ জুলাই মাসে রাশিয়ার এক হামলায় ১০ জন মারা যায়৷ ওই সময় বাধ্য হয়ে কনসার্ট বন্ধ রেখেছিল লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
6 ছবি1 | 6
খেরসনে ট্রেন স্টেশনে হামলা
ইউক্রেনের অভিযোগ, দক্ষিণ ইউক্রেনের শহর খেরসনে একটি ট্রেন স্টেশনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার বাহিনী। ঘটনায় একজন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। অন্তত চারজন ব্যক্তি ওই হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার সময় স্টেশনে একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। তাতে খেরসন থেকে ১৪০ জন বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বস্তুত, খেরসনে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের বাহিনীর এখনো তীব্র সংঘর্ষ চলছে। সে কারণেই বেসামরিক নাগরিকদের অন্যত্র সরানোর চেষ্টা চলছিল। সে সময়েই রাশিয়ার বাহিনী স্টেশনে হামলা চালায়।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্টেশনের বাইরে পুলিশ বাহিনী রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করে। ট্রেনটি সফলভাবে রওনা হতে পেরেছে। তবে ওই নাগরিকদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা জানানো হয়নি।
ইউক্রেন যুদ্ধের গোড়ায় খেরসন শহরটি রাশিয়া দখল করে নিয়েছিল। পরবর্তীকালে ইউক্রেন শহরটি পুনরুদ্ধার করে। তবে এখনো সেখানে লাগাতার লড়াই চলছে। রাশিয়ার বাহিনী নিয়মিত সেখানে হামলা চালাচ্ছে বলে ইউক্রেনের অভিযোগ।