প্রায় দুশো রুশপন্থি বিদ্রোহী বুধবার সকালে ক্রাইমিয়ায় ইউক্রেনের নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে ঢুকে পড়ে৷ এরপর তারা কয়েকটি ভবনে রাশিয়ার পতাকা উত্তোলন করে বলে জানা গেছে৷
বিজ্ঞাপন
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, তাদের এক আলোকচিত্রী নৌ সদর দপ্তরে ঢুকতে সমর্থ হয়েছেন৷ ঐ ফটোগ্রাফার রুশপন্থিদের সদর দপ্তরে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন৷ এছাড়া ঐ কার্যালয়ে থাকা ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জিনিস-পত্র গুছিয়ে চলে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ তবে ইউক্রেনের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ক্রাইমিয়া থেকে ইউক্রেনের সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে না৷
উল্লেখ্য, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চুক্তি সইয়ের একদিন পর এই ঘটনা ঘটলো৷ মঙ্গলবার রাশিয়া ও ক্রাইমিয়ার মধ্যে এই চুক্তি হয়৷ এর আগে রবিবার এক গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে মত জানান ক্রাইমিয়ার অধিকাংশ নাগরিক৷
তবে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্ব এই গণভোট আয়োজনকে অবৈধ বলে আখ্যায়িত করেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, ‘‘গণভোট আয়োজন আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি৷''
এদিকে, ইউক্রেন বিষয়ে রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করতে রাশিয়ার কয়েকজন কর্মকর্তার উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র৷
ক্রাইমিয়ায় সব শান্ত?
সবার মনোযোগ এখন ইউক্রেনের ক্রাইমিয়ার দিকে৷ ক্রাইমিয়ায় যা ঘটেছে তাকে রাশিয়ার আগ্রাসন বলা হলেও রুশ সেনাদের কিন্তু সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছে স্থানীয়রা৷ ছবিঘরে দেখুন ক্রাইমিয়ার পরিস্থিতি৷
ছবি: DW/F. Warwick
কোসাকদের আগমন
রাশিয়ার ক্রাসনোডার থেকে এসেছে ২৫০ জনের মতো কুবান কোসাক৷ সামরিক বাহিনীর পোশাক পরেননি তাঁরা৷ সেভাস্টোপোলের রুশপন্থি কর্তৃপক্ষ কোসাকদের শপথ পাঠ করিয়েছে৷ স্বেচ্ছাসেবী কোসাকরা জানিয়েছে, ক্রাইমিয়াবাসীদের রক্ষা করার জন্য তারা স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে৷
কুবান কোসাকরা সেভাস্টোপোলের পুলিশের সঙ্গে টহলে অংশ নিচ্ছে৷ মাথায় উলের টুপি পরে রবি বার থেকে রাস্তায় টহল দিচ্ছে কোসাকরা৷ ২০০৫ সালে এথনিক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী এবং শক্তিশালী সামরিক শক্তি হিসেবে কোসাকদের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷
ছবি: DW/F. Warwick
কঠিন সময়ে নিরাপত্তা
রাশিয়া এবং ক্রাইমিয়ার টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন কোসাকদের নেতা কর্নেল সের্গেই সাভোনিন ইউরিয়েভিচ৷ তিনি বলেন, কোসাকরা সেভাস্টোপোলের মানুষদের রক্ষা করার জন্য এসেছে৷
ছবি: DW/F. Warwick
‘স্বায়ত্তশাসন, বিচ্ছিন্নতাবাদ নয়’
ক্রাইমিয়ায় অনেকের হাতেই দেখা যায় ক্রাইমিয়া এবং রাশিয়ার পতাকা৷ এর অর্থ এই নয় যে, ক্রাইমিয়া ইউক্রেন থেকে আলাদা হয়ে গেছে৷ সেভাস্টোপোলের এই তরুণ-তরুণীরা জানালেন, তাঁরা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চাননা, কেননা ইউক্রেনকে তাঁরা ভ্রাতৃপ্রতীম রাষ্ট্র মনে করেন৷ তাঁদের দাবি একটাই – স্বায়ত্তশাসন এবং এথনিক রুশ হিসেবে প্রাপ্য মর্যাদা৷
ছবি: DW/F. Warwick
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
এই প্রবীণ এসেছেন কোসাকদের সমর্থন জানাতে৷ রাশিয়ার প্রতি তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে৷ পরনে রুশ সেনাবাহিনীর মতো কমলা আর কালো রংয়ের পোশাক৷ তিনি নিজেও সোভিয়েত ইউনিয়নের রেড আর্মির সাবেক কর্মকর্তা৷
ছবি: DW/F. Warwick
রাস্তায় তল্লাশি
সিমফারোপোল এবং সেভাস্টোপোলের মাঝের হাইওয়েতে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে রুশপন্থি বেসামরিক বাহিনীর সদস্যরা৷
ছবি: DW/F. Warwick
ব্যবসার জন্য খারাপ সময়?
লিলিয়া ভজনুক একজন স্যুভেনির বিক্রেতা৷ রাবারের তৈরি মুখোশগুলোর মধ্যে পুটিনের চেহারার মুখোশটার এখন দারুণ কাটতি৷ তবু খুব চিন্তায় আছেন লিলিয়া৷ চলমান সংকট ব্যবসার বড় রকমের ক্ষতি করবে বলে আশঙ্কা তাঁর৷
ছবি: DW/F. Warwick
হৃদয়-মন জয় করেছে তাঁরা
সেভাস্টোপোলে গেলেই ব্ল্যাক সি ফ্লিট অঁসম্বল-এর কনসার্ট দেখতে পাবেন৷ নাচ-গানের এই স্থানীয় সংগঠনটি তাদের পরিবেশনা দিয়ে সবার মন জয় করেছে৷ রুশ লোকসংগীতে সাগরের প্রশংসা করে যেসব গান রচনা করা হয়েছে মূলত সেগুলোই পরিবেশন করে ব্ল্যাক সি ফ্লিট অঁসম্বল৷ রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ইয়াব্লোচকো বা ‘ছোট্ট আপেল’ নাচটা সত্যই মনোমুগ্ধকর৷
ছবি: DW/F. Warwick
চাই শুধু স্বায়ত্তশাসন
সেভাস্টোপোলের অধিকাংশ মানুষই রুশ জাতীয়তাবাদের সমর্থক৷ ইউক্রেনীয়দের তারা অবিশ্বাস করে, মনে করে ইউক্রেনীয়রা চরম ডানপন্থি৷ সেভাস্টোপোলের মানুষ মনে করে রুশ বাহিনীর উপস্থিতি এ অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসন এবং নিরাপত্তার রক্ষাকবচ৷
ছবি: DW/F. Warwick
10 ছবি1 | 10
জি-৭ এর বৈঠক আহ্বান
আগামী সপ্তাহে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে জি-৭ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংস্থা জি-৮ এর সদস্য হলেও ইউক্রেন সংক্রান্ত আলোচনায় দেশটিকে আমন্ত্রণ জানাননি ওবামা৷
ইইউ কর্মকর্তার মস্কো সফর বাতিল
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হ্যার্মান ফান রম্পয়ের বুধবার মস্কো সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটা বাতিল করা হয়েছে৷ রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সফর বাতিলের জন্য ইইউ-কে দায়ী করেছে৷ এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইউক্রেন সম্পর্কে ‘সত্য' জানতে চায় না ইইউ৷ তাই তারা রম্পয়ের সফর বাতিল করেছে৷