ক্রাইমিয়া ব্রিজ-বিস্ফোরণ: রাশিয়ার হাতে গ্রেপ্তার আট
১৩ অক্টোবর ২০২২
মস্কোর দাবি, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা বিভাগ সরাসরি এই ঘটনার সঙ্গে যুদ্ধ।
বিজ্ঞাপন
ক্রাইমিয়া ব্রিজে বিস্ফোরণ নিয়ে প্রথম থেকেই সরব রাশিয়া। যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, তা ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা। রাশিয়া প্রথম থেকেই ইউক্রেনের দিকে আঙুল তুলেছে। কিন্তু ইউক্রেন বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি। বুধবার রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে যে ইউক্রেন সরাসরি যুক্ত, তার প্রমাণ তারা পেয়েছে। এই ঘটনার পিছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান কিরিলো বুদানোভ সরাসরি যুক্ত বলে মস্কোর দাবি।
এফএসবি জানিয়েছে, বুধবার মোট আটজনকে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচজন রাশিয়ার নাগরিক, বাকি তিনজন ইউক্রেন এবং আর্মেনিয়ার নাগরিক। ইউক্রেন অবশ্য জানিয়েছে, রাশিয়ার এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
ইউক্রেন যুদ্ধ: পরমাণু যুদ্ধ কি আসন্ন!
ফের ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রের সামনে রকেট হামলা রাশিয়ার। আরো অঞ্চল পুনর্দখলের দাবি জেলেনস্কির।
ছবি: REUTERS
রকেট হামলা
বৃহস্পতিবার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের খুব কাছে রকেট হামলা চালায় রাশিয়া। রকেটের আঘাতে একটি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
ইউক্রেন প্রশাসনের স্থানীয় সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ভাঙা বাড়ির নীচে এখনো অন্তত পাঁচজন আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মৃতদের মধ্যে একজন নারী। অন্যজনের অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয়েছে।
ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করতে চায়। বুধবার এবিষয়ে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন। পরমাণু কেন্দ্রটির সম্পূর্ণ হস্তান্তর চেয়েছিলেন তিনি।
ছবি: REUTERS
ইউক্রেনের বক্তব্য
ইউক্রেন কোনোভাবেই পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়ার হাতে দিতে প্রস্তুত নয়। বুধবার দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন ঝাপোরিজ্ঝিয়া অঞ্চলে আরো তিনটি জায়গা পুনর্দখল করেছে। কোনোভাবেই ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হবে না।
ছবি: Ukrainian Presidency/AP/picture alliance
পরমাণু সংস্থার প্রধান ইউক্রেনে
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির প্রধান কিয়েভে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন। কীভাবে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। জেলেনস্কিকে আশ্বাস দিয়েছেন।
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
রাশিয়ার অধিকারে
যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করে। তার ভিতর থেকেই তারা লড়াই চালাচ্ছিল। কিন্তু পরমাণু কেন্দ্রটি দখল করলেও কর্মীদের তারা তাড়িয়ে দেয়নি। ইউক্রেনের কর্মীরাই সেখানে কাজ করছিলেন।
ছবি: Alexander Ermochenko/REUTERS
বাইডেনের ভয়
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার সেনা লড়াইয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এবং সে কারণেই তার ভয়, পুটিন যে কোনো সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের পর পরমাণু অস্ত্র নিয়ে এত চিন্তা করতে হয়নি বলে এদিন মন্তব্য করেছেন বাইডেন।
ছবি: picture alliance / Consolidated News Photos
রাশিয়ার অবস্থান
পুটিন আগেই জানিয়ে রেখেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব আঘাত পেলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতেও তিনি ভয় পাবেন না।
ছবি: Dmitry Astakhov/Sputnik/REUTERS
ইউক্রেনের অবস্থান
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের যে জমি দখল হয়েছে, দেশের সেনা তা উদ্ধeর করতেও বদ্ধপরিকর। যার অর্থ ইউক্রেন ক্রাইমিয়া দখলেরও চেষ্টা করবে। পুটিন আগেই জানিয়েছিলেন, ক্রাইমিয়ায় আঘাত হানলে রাশিয়া ফের কিয়েভের অভিমুখে যাত্রা করবে।
ছবি: dpa/APA Images/Zuma/picture alliance
9 ছবি1 | 9
চলতি সপ্তাহেই ক্রাইমিয়ার কার্চ ব্রিজে বিস্ফোরণ হয়েছিল। নাটকীয় ফুটেজে দেখা যায়, ব্রিজে ওঠার পর একটি ট্রাকে বিস্ফোরণ হয়। যার জেরে ব্রিজের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। এই ব্রিজটি রাশিয়া এবং ক্রাইমিয়ার মধ্যে অন্যতম সংযোগসেতু।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেই রাশিয়ার সেনা খেরসন অঞ্চল দখল করেছিল। এই ব্রিজটির মাধ্যমেই সেখানে রাশিয়া নিয়মিত যুদ্ধের রসদ পাঠিয়েছে। বিস্ফোরণের ফলে খেরসন অঞ্চলের সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগ অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
রাশিয়ার তদন্তে উঠে এসেছে যে, ব্রিজে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ২২ হাজার কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। বুলগেরিয়া, আর্মেনিয়া, জর্জিয়ার মধ্য দিয়ে সেই বিস্ফোরক প্লাস্টিকে মুড়ে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
ইউক্রেন অবশ্য গোড়া থেকেই বলছে, তারা এই বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে ব্রিজে বিস্ফোরণ নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা।
জি ৭ এর সংকল্প
জি ৭ এর বৈঠকে বিশ্ব নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যতদিন ইউক্রেন যুদ্ধ চলবে, ততদিন সবরকমভাবে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো হবে। ইউক্রেনকে আরো অর্থনৈতিক সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি রাশিয়ার কাছে যুদ্ধ বন্ধের আবেদন করা হয়েছে। সামরিক এবং মানবিক সাহায্য ছাড়াও ইউক্রেনের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ২০ দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।