আরাফাত সানির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তুলেছেন তাঁর স্ত্রীর পরিচয়ে মামলা করা তরুণী৷ এবার যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের এই স্পিনারের বিরুদ্ধে৷ রবিবার থেকে গ্রেপ্তার রয়েছেন আরাফাত সানি৷
বিজ্ঞাপন
২০১৬ সালের মার্চের পর আর জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি আরাফাত সানি৷ এ কারণে আন্তর্জাতিক সংবাদ শিরোনামে আসার সুযোগও হয়নি দেশের হয়ে ১৬টি একদিনের আন্তর্জাতিক ও ১০টি টি-টোয়েন্টি খেলা বাঁ হাতি এই অর্থোডক্স স্পিনারের৷ তবে রবিবার ঢাকার আমিনবাজার এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে দেশি-বিদেশি সব সংবাদমাধ্যমেই গুরুত্ব পাচ্ছে তাঁর খবর৷
গত ৫ জানুয়ারি আরাফাত সানির বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা করেন এক তরুণী৷ মামলার এজাহারে বলা হয়, সাত বছর আগে ওই তরুণীর সঙ্গে সানির প্রেম হয়৷ এরপর ২০১৪ সালে তাঁরা পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেন৷ বিয়ের পর সানি তরুণীকে নিজের বাড়িতে না তুলে ভাড়া বাসায় তোলেন৷ ২১ বছর বয়সি তরুণীর অভিযোগ, তাঁকে তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়ায় সানি উল্টে ফেইসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে মেসেঞ্জারে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাঠান এবং নানাভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন৷ এ অভিযোগে মামলার কারণেই রবিবার পুলিশ আরাফাত সানিকে গ্রেপ্তার করে৷ গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে খেলা সানির পরিবার অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ সানির মা মনে করেন, টাকার লোভে ওই তরুণী তাঁর ছেলেকে ‘ফাঁসানোর' চেষ্টা করছেন৷
তবে অনেকেই সানিকে নির্দোষ মনে করতে পারছেন না৷ জাতীয় দলের কোনো কোনো ক্রিকেটারের মাঝে অতীতেও যে নৈতিকতাবোধ, মানবতাবোধ, সামাজিক মূল্যবোধের ঘাটতি দেখা গেছে এবং সে কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে যে মামলাও হয়েছে, সেই দৃষ্টান্তগুলো স্মরণ করে তাঁরা বরং সানির কঠোর শাস্তিই দাবি করছেন৷
ডয়চে ভেলের অনুরোধে এপ্রিল, ২০১৬ সালে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তাঁর দেয়া ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী নামগুলো থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
তামিম ইকবাল
ডয়চে ভেলের অনুরোধে ২০১৬ সালের এপ্রিলে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তিনি সেরা একাদশ নির্বাচন করায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের ভাতিজা তামিমকে নিয়েছেন বলে যাঁরা ভাবছেন তাঁরা একবার তামিমের পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিন৷ বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত মোট রানের সংখ্যা ৫,০০০ রান পেরিয়েছেন তিনি৷ এ জন্য তাঁকে ১৫৯টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ
টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম জয়টি আসে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে৷ সেই ম্যাচে ওয়াকার, ওয়াসিম, শোয়ের আখতারের মতো বোলারদের বিপক্ষে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ৩৯ রান করেছিলেন বিদ্যুৎ৷ দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই রান টাইগারদের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
সাকিব
অনেকে হয়ত তাঁকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় বলবেন৷ বিশ্ব ব়্যাংকিংয়ে কয়েকবার শীর্ষে উঠে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এই অলরাউন্ডার৷ ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত ১৬৩টি একদিনের ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,৫৬৬, উইকেট নিয়েছেন ২১৫টি, সেঞ্চুরি আছে ৬টি৷ সাকিবের চেয়ে উইকেট বেশি আছে শুধু মাশরাফির৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মুশফিকুর রহিম
এই উইকেট-রক্ষক কাম ব্যাটসম্যানের ওডিআই ডেব্যু হয়েছিল ২০০৬ সালে৷ সেই থেকে ১৬৪টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,০৭৬টি, আছে ৪ সেঞ্চুরি (২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত)৷ প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটিও তাঁর৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু
বাংলাদেশের প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন নান্নু৷ সেই সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২০৷ সেটি ১৯৮৬ সালের কথা৷ এরপর মোট ২৭টি ওয়ানডে খেলেছেন৷ ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়ে নান্নুর করা সাত ওভার (২৯ রান দিয়েছিলেন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
পাইলট
শুধু ভালো উইকেট-রক্ষকও ছিলেন না, শেষদিকে ব্যাট করতে নেমে দলকে জেতাতে না পারলেও বেশ কয়েকবারই একটা সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে ওডিআই খেলা শুরু করার পর ১২৬ ম্যাচে ১,৮১৮ রান করেছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
রফিকুল আলম
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন এই অলরাউন্ডার৷ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের হয়ে দু’টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন৷ তবে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম খেলেন ১৯৮০ সালে৷ ১৯৮২ ও ১৯৮৬-র আইসিসি ট্রফিতেও খেলেছেন রফিকুল আলম৷
ছবি: Mir Farid
রফিক
প্রধান পরিচয় বাঁ-হাতি স্পিনার হলেও মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবেও পরিচিত ছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে তাঁর ওডিআই অভিষেক হয়েছিল৷ প্রথম উইকেটটাই পেয়েছিলেন টেন্ডুলকারকে আউট করে৷ বোলিং ফিগার ছিল ৫-০-১৫-১৷ এরপর ১২৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে সমান সংখ্যক উইকেট পেয়েছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
মাশরাফি (অধিনায়ক)
সেরা একাদশের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফিকে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্তটি আকরামের জন্য সহজই ছিল বলা যায়৷ দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অন্যদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে নিতে বেশ কয়েকবারই পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
মুস্তাফিজুর রহমান
আইসিসি ২০১৫ সালে ওয়ানডে একাদশের যে নাম ঘোষণা করেছিল তাতে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে স্থান পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান৷ ঐ বছর জুনে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক ঘটে৷ প্রথম দুই ওয়ানডেতে তিনি ১১ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
রুবেল হোসেন
ডানহাতি এই ফাস্ট বোলারের ওয়ানডে অভিষেকটা স্মরণীয় হয়েছিল৷ ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐ ম্যাচে ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে টাইগারদের জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন৷
ছবি: Getty Images/Dibyangshu Sarkar
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (দ্বাদশ খেলোয়াড়)
সাকিব-তামিম-মুশিফক-মাশরাফিদের ভিড়ে তাঁর নাম চাপা পড়ে গেলেও দলের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যেই তাঁকে ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখা যায়৷ ২০১৫ বিশ্বকাপের পরপর দুই ম্যাচে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন৷ তাঁর অফস্পিনও সময় সময় বেশ কাজে লাগে৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
অমায়িক আকরাম
সেরা একাদশে নিজের নাম না রাখা প্রসঙ্গে আকরাম খান বলেন, ‘‘তালিকা আমি করেছি, সেখানে তো আমার নাম রাখতে পারি না৷’’ তবে ইএসপিএনক্রিকইনফো ডটকম ওয়েবসাইটে আকরামকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘প্রথম আসল নায়ক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Bernama
13 ছবি1 | 13
অর্থাৎ তিনি মনে করেন, পেস বোলার শাহাদাত গৃহকর্মীকে নির্যাতন করেও অর্থ এবং প্রভাব খাটিয়ে শাস্তি এড়াতে পেরেছেন বলে অন্যরাও হয়ত ভাবছেন, অপরাধ করলেও তারকাখ্যাতি, প্রভাব-প্রতিপত্তির জোরে পার পাওয়া যাবে৷ আরাফাত সানিও সে কথা ভেবেই এক তরুণীর সঙ্গে কথিত আচরণ করতে পেরেছেন বলে গাজী নাসিরুদ্দিনের বিশ্বাস৷