1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্রিকেটে হতাশার হাহাকারেও রোমাঞ্চের হাতছানি

নোমান মোহাম্মদ
২১ জুলাই ২০২০

করোনা-কারাগারে বন্দি বাংলাদেশের ক্রিকেট৷ বন্ধের সিলমোহর একের পর এক দ্বিপক্ষীয় সিরিজে৷ স্থগিত এ বছরের এশিয়া কাপও৷ মাস তিনেক পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাতিলের ঘোষণা তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে চমকে দেয়নি৷

ICC T20 World Cup - Logo und Unterschriften
ছবি: Getty Images/M. Dodge

নতুন করে থমকেও দেয়নি৷ তবু বিশ্ব মঞ্চের একটি টুর্নামেন্টের অংশ হতে না পারার হাহাকার তো থাকছেই৷

‘‘এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না হওয়াটা প্রত্যাশিত মানে কী, একেবারে অপ্রত্যাশিত না৷ এটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খুব দুর্ভাগ্যজনক৷ এখন যদি শ্রীলঙ্কা সিরিজ না হয়, তাহলে এ বছর আর কোনো খেলাই নেই৷ অনেক দীর্ঘ বিরতি৷ আমাদের মতো ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের জন্য যা মোটেই ভালো না৷’’ নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কণ্ঠে বিষাদ৷ যে বিষন্নতার সুর আছড়ে পড়েছে তামিম ইকবালের মতো অভিজ্ঞ থেকে শুরু করে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের মতো তরুণ ক্রিকেটারের ভাবনার মোহনায়ও৷

তামিম অবশ্য বাস্তবতা মেনে অন্ধকারে আলো খুঁজছেন৷ মন্দে খুঁজে পেতে চাইছেন ভালোটাও, ‘‘কম-বেশি সবাই বুঝতে পারছিল যে, এ বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে না৷ এতে তাই অবাক হইনি৷ তবে খারাপের মধ্যেও ভালো বলতে হলে, পরের তিন বছরে তিনটি বিশ্বকাপ হবে৷ আমার হিসেবে এক দিক দিয়ে ভালোই হয়েছে৷ কারণ, বিশ্বের কোনো দেশই গত তিন-চার মাস ধরে প্রস্তুতির সময় পায়নি৷ আর বিশ্বকাপের মতো প্ল্যাটফর্মে, বিশেষত আমাদের মতো দলের জন্য প্রস্তুতিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ আশা করছি, পরের বছর বিশ্বকাপটি হলে আমরা প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পাবো৷’’

হাবিবুল বাশার

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশের জন্য যথাযথ প্রস্তুতিটা ভীষণ জরুরি৷ আরো বেশি প্রয়োজন টি-টোয়েন্টি দলের জন্য৷ কেন? তামিমের যুক্তিতে উঠে আসেন তরুণ ক্রিকেটাররা, ‘‘টেস্ট ও ওয়ানডের তুলনায় আমাদের টি-টোয়েন্টি দল তারুণ্যনির্ভর৷ সেই তরুণ ক্রিকেটাররা এখন আরো এক বছর সময় পেলো৷ এ সময়ে আরো ১০-১৫-২০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে পারবে৷ কোনো সন্দেহ নেই, এ বছর বিশ্বকাপ হলে খুব ভালো হতো৷ কিন্তু হয়নি বলে সেটি যে আমাদের জন্য খুব খারাপ হয়েছে, আমি তা মনে করি না৷ কারণ, এখন আমাদের জন্য প্রস্তুত হবার যথেষ্ট সময় থাকবে৷’’

অন্যান্য সিরিজ বাতিলের পর বাংলাদেশকে সরাসরি যদি বিশ্বকাপে খেলতে হতো, তাহলে সেটি হতো আরেক চ্যালেঞ্জের৷ যেখানে প্রাথমিকভাবে গ্রুপ পর্বে খেলা স্কটল্যান্ড, নামিবিয়া, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে৷ এখানে সেরা দুই দলের মধ্যে থেকে মূল পর্বে ওঠার চ্যালেঞ্জ৷ দীর্ঘ বিরতির পর আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষে খেললে অঘটনের আশঙ্কা যে ছিল, সেটি মেনে নিচ্ছেন হাবিবুল৷ তবে সেটিকে বড় ফ্যাক্টর মানতে নারাজ এই নির্বাচক, ‘‘ক্রিকেটের বাইরে থেকে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা অবশ্যই কঠিন৷ অঘটনের আশঙ্কাও হয়তো থাকতো৷ আবার আমি মনে করি, এটি বরং ভালো হতো৷ কারণ, আমাদের ম্যাচ প্র্যাকটিসটা হয়ে যেতো৷ আর ব্যাপার তো এমন নয় যে, বাংলাদেশ শুধু বসে আছে, বাকিরা খেলছে৷ আমার তাই মনে হয় না, অত অসুবিধা হতো৷ আর এত চিন্তিত হওয়াটাও ভালো লক্ষণ না৷ যত যাই হোক, আমি খেলার পক্ষে৷’’

তামিম ইকবাল

This browser does not support the audio element.

এ বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিতের পাশাপাশি আগামী তিন বছরে তিন বিশ্বকাপ 

আয়োজনের ঘোষণাও করেছে আইসিসি৷ ২০২১ ও ২০২২ সালে টোয়েন্টি-টোয়েন্টি এবং ২০২৩ সালে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে৷ বিশ্বকাপ খেলার রোমাঞ্চটা ভালোই টের পাওয়া যায় অলরাউন্ডার সাইফ উদ্দিনের কণ্ঠে, ‘‘দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কোনো ক্রিকেটারের জন্যই স্বপ্ন৷ আমি কখনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলিনি৷ ২০১৬ সালে সর্বশেষ যখন এ টুর্নামেন্ট হয়, আমিঅনূর্ধ্ব-১৯ দলে৷ তখন থেকেই স্বপ্ন দেখি, নিজেকে পরিণত করে সুযোগ পেলে এ টুর্নামেন্টে খেলবো৷ সুযোগটা কাছে চলে এসেছিল৷ সুস্থ ও ফিট থাকলে হয়ত বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকতাম৷’’

সেটি এবার হয়নি৷ তবে আগামী দুই বছরে তো দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার হাতছানি রয়েছে৷ তাতে আবছায়ার মতো অন্য এক সুযোগের হাতছানিও দেখেন সাইফ, ‘‘মেগা ইভেন্টগুলোতে ভালো করতে পারলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে খেলার সুযোগ আসতে পারে৷ ওসব জায়গায় আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের নিয়ে যেমন মাতামাতি হয়; বাংলাদেশের বেলায় এক সাকিব ভাই ছাড়া খালিই বলা যায়৷ যখন ড্রাফটে নাম থাকে কিন্তু আমাদের প্রতি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আগ্রহ দেখায় না, তখন খারাপ লাগে৷ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো ইভেন্টগুলোর দিকে তাই তাকিয়ে থাকি৷ এখানে যদি একস্ট্রা অর্ডিনারি কিছু করতে পারি, তাহলে হয়ত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে সুযোগ পাবো৷ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য তাই এমন ইভেন্ট গুরুত্বপূর্ণ৷’’

মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন

This browser does not support the audio element.

যে সাকিবের কথা বললেন সাইফ, তিনি এখন নিষেধাজ্ঞার শেকলবন্দি৷ দুঃসহ দহনকাল পেরিয়ে সে তালা খুলবে এ বছরের ২৯ অক্টোবর৷ আগের সূচিতে ততদিনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হয়ে যাবার কথা৷ তাতে সাকিব খেলতে পারতেন কিনা, এ নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা৷ কারণ, নিষিদ্ধ ক্রিকেটারকে স্কোয়াডে রাখা যাবে কিনা৷ এ বছরের বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়ায় সাকিবকে ছাড়া এমন বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট না খেলার আশঙ্কা নেই বলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেকেই স্বস্তিতে৷ তবে নির্বাচক হাবিবুলের ভাবনাটি অন্যরকম, ‘‘সাকিব স্পেশাল ক্রিকেটার৷ ও থাকলে একজন বোলার বা ব্যাটসম্যান বেশি নিয়ে খেলা যায়৷ ভবিষ্যতে সাকিবসহ বিশ্বকাপ খেলার সময় বিরাট প্লাস পয়েন্ট তো থাকবেই৷ কিন্তু পরের বিশ্বকাপের সময় সাকিব ইনজুরিতেও থাকতে পারে৷ আমি তাই ওভাবে ভাবতে চাই না৷ দল হিসেবে যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে৷ আমি চাই খেলা হোক, এবং কারো জন্য বসে থাকতে চাই না৷’’

কিন্তু করোনা-কারাগারে আটক বাংলাদেশ ক্রিকেটে সে খেলাটিই যে হচ্ছে না! বরং বসেই থাকতে হচ্ছে৷ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিতের ঘোষণায় তাই হতাশা এড়ানোর সুযোগ সামান্যই৷ সে হতাশা তাড়ানোর সুযোগ আগামী তিন বছরে তিনটি বিশ্বকাপে থাকা সত্ত্বেও!

২০১৯ সালের জুলাই মাসের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ