ক্রিসমাসের সময় করোনাকে দূরে রেখে রেলযাত্রার ব্যবস্থা
৫ ডিসেম্বর ২০২০
করোনাকালে বড়দিনের ছুটির সময় জার্মানির রেল কর্তৃপক্ষ ডয়চে বান নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ বাড়ানো হচ্ছে দ্রুত গতির ট্রেন, আসন পরিকল্পনাও করা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার ডয়চে বান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বড়দিনের ছুটির সময়, অর্থাৎ আগামী ১৮ থেকে ২৭ ডিসেম্বর জার্মানির বড় শহরগুলোর মধ্যে যাতায়াতের জন্য বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে৷ ওই সময়ে হাই-স্পিড আইসিই ট্রেন ১৫টি বাড়ানো হবে৷ এভাবে প্রতিদিন দীর্ঘযাত্রায় অন্তত ১৩ হাজার আসন বাড়ালেও করোনা সংক্রমণ এড়াতে যাত্রীরা যাতে স্বাস্থবিধি মেনে চলেন তা নিশ্চিত করতে নেয়া হবে বিশেষ উদ্যোগ৷ যাত্রীরা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসেন তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ৬০ ভাগ আসনের টিকিট বিক্রি করা হবে৷
কেউ চাইলেও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করতে পারবেন না, কারণ, যাত্রীদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন পাঁচ হাজার পুলিশ এবং চার হাজার নিরাপত্তা কর্মী৷
এ বছর বড়দিনের সময় অন্যান্যবারের চেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে ডয়চে বান-এর যাত্রী পরিবহন বোর্ডের প্রধান বার্থোল্ড হুবার বলেছেন, ‘‘ক্রিসমাসকে সামনে রেখে রেলযাত্রাকে যতটা সম্ভব নিরাপদ করা আমাদের দায়িত্ব৷ আমরা সে দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করবো৷''
মিশায়েল বুখবাউম/এসিবি
জার্মান ট্রেন সম্পর্কে যে দশটি বিষয় জানা উচিত
টিকিট, রিজার্ভেশন এবং ট্রেনের ধরন: জার্মানিতে ট্রেনে চলাচলে আগ্রহীদের জন্য এখানে থাকছে দশটি তথ্য বা পরামর্শ যা আপনার কাজে লাগতে পারে৷
ছবি: Deutsche Bahn AG
আপনি কি বুঝতে পারছেন?
জার্মানির ট্রেন স্টেশনগুলোতে প্রায়ই লাউডস্পিকারে নানা ঘোষণা দেয়া হয়৷ তবে, সেগুলো ট্রেন স্টেশনের অন্যান্য শব্দের কারণে অনেকসময়ই বোধগম্য হয়না৷ তাই, সেসব ঘোষণা নিয়ে বেশি ভাবার দরকার নেই৷ বরং এক্ষেত্রে একটি জনপ্রিয় জার্মান বাগধারা মনে রাখবেন, ‘‘ইস্ ফার্স্টেহে ন্যুর বানহফ’’ অর্থাৎ ‘‘আমি শুধু ট্রেন স্টেশন বুঝতে পারছি৷’’ একথার অর্থ হচ্ছে আপনি ঘোষণার অন্য কোন তথ্যই বুঝতে পারেননি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ট্রেনের নানা ধরন
জার্মানির অধিকাংশ শিশুও এটা জানে: ‘দ্য ইন্টারসিটি-এক্সপ্রেস (আইসিই)’ হচ্ছে ডয়চে বানের সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন৷ এসব ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে৷ আইসিই’র পরেই অবস্থান ‘দ্য ইন্টারসিটি’ ট্রেনের৷ ঘণ্টায় দু’শো কিলোমিটার অবধি গতিতে চলা এসব ট্রেন দেখতে আইসিই’র মতো সাদা এবং লাল রংয়ের হলেও এগুলো আসলে একটু পুরনো৷ এই দুই ধরনের ট্রেন ছাড়াও রয়েছে লালরংয়ের ‘রিজিওনাল বান (আরবি)’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Woitas
সব ট্রেন সময়মত আসে না
সময়ানুবর্তিতার জন্য জার্মানদের সুখ্যাতি থাকলেও সময়মত ট্রেন আসার বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে৷ বরং ইদানিংকালে ট্রেন দেরিতে আসার বিষয়টি নিয়ে অনেককে আলোচনা করতে দেখা যায়৷ ডয়চে বান অবশ্য দাবি করেছে, ২০১৮ সালে প্রায় ৭৫ শতাংশ ইন্টারসিটি ট্রেন সময়মত বা নির্ধারিত সময় অতিক্রম করার পাঁচ মিনিটের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Tschauner
টিকিট অপরিহার্য
জার্মানিতে ট্রেনে ওঠার আগে টিকিট কাটা হচ্ছে সাধারণ নিয়ম৷ তবে, যদি কোন কারণে আপনার স্টেশনের টিকিট ভেন্ডিং মেশিনটি কাজ না করে কিংবা টিকিট কাটার পর্যাপ্ত সময় না পান, তাহলে আইসিই বা ইন্টারসিটি ট্রেনে উঠে সঙ্গে সঙ্গে কন্ডাক্টরের কাছ থেকে টিকিট কিনতে পারেন৷ আরবিতে অবশ্য এই সুবিধা নেই৷ সেটিতে বরং টিকিট না কেটে ওঠায় জরিমানা গুনতে হতে পারে৷
ছবি: Deutsche Bahn AG/P. Castagnola
টাকা বাঁচাতে দলবদ্ধ ভ্রমণ
আঞ্চলিক ট্রেনের ক্ষেত্রে অনেক সময় পাঁচজন মিলে এক টিকিট কেটে সস্তায় ভ্রমণ করা যায়৷ একসঙ্গে কোথাও বেড়াতে গেলে এ ধরনের টিকিট লাভজনক হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Kalaene
সাইকেল নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ কঠিন
আপনার বাইসাইকেলটি যদি ভাঁজ করা না যায়, তাহলে আইসিইতে সেটি নিয়ে চড়া বারণ৷ তবে ইন্টারসিটি এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ট্রেনে একটি বিশেষ কামরা রয়েছে, যেখানে সাইকেলসহ ওঠা যায়৷ বলাবাহুল্য, জার্মানিতে গ্রীষ্মের সময় অনেকেই সাইকেল চালাতে পছন্দ করেন৷ তাই সেসময় ট্রেনে সাইকেলসহ উঠতে চাইলে একটু আগেভাগে স্টেশনে গেলে ভালো৷
ছবি: DW/Elizabeth Grenier
সিট রিজার্ভ করাও জরুরি
জার্মানিতে ট্রেনের টিকিটের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিট দেয়া থাকে না৷ দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট কাটার পর নির্দিষ্ট সিট রিজার্ভ করতে বাড়তি টাকা গুনতে হয়৷ ট্রেনের সিটের সঙ্গে থাকা ট্যাগে সেটি রিজার্ভ করা কিনা, সে তথ্য থাকে৷ তাই সিট রিজার্ভ না করে শুধু টিকিট কেটে ট্রেনে উঠলে এমন সিটে বসাই উত্তম যেটি অন্য কেউ রিজার্ভ করেননি৷
ছবি: Deutsche Bahn AG/O. Lang
সঠিক স্থানে দাঁড়ান
ডয়চে বানের আইসিই ট্রেন ঠিক কোথায় দাঁড়াবে এবং সেটির কোন বগির অবস্থান কোথায় হবে - তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে৷ তাই আপনি টিকিটে উল্লেখিত বগি এবং সিট নম্বর অনুসারে প্লাটফর্মে দাঁড়ালে ট্রেন আসার পর বেশি দৌঁড়ঝাপ করতে হবে না৷
ছবি: DW/Elizabeth Grenier
ট্রেনের নানা জায়গা
আপনি কি টেবিলসহ একটি সিট চান নাকি করিডোরে সিট চান - তা সিট রিজার্ভ করার সময় ঠিক করে দিতে পারেন৷ এমনকি ট্রেনের মধ্যে এমন স্থানও আছে যেখানে বসে জোরে কিংবা ফোনে কথা বলা নিষেধ৷ তাই, সিট রিজার্ভ করার সময় এসব বিষয় খেয়াল রাখলে পরবর্তীতে সুবিধা হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/N. Schmidt
শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
শিশুদের নিয়ে ভ্রমণ করা অভিভাবকদের জন্য ডয়চে বানের আইসিই ট্রেনে রয়েছে বিশেষ কামরা৷ সেখানে শিশুরা শব্দ করলেও কোন সমস্যা নেই৷ তবে, এক্ষেত্রেও সেই কামরা আগে থেকে বুক করে রাখলে ভালো৷ পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুরা ট্রেনে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতে পারে৷ তবে, পনেরো বছর অবধিও এই সুবিধা পাওয়া যেতে পারে যদি তাদের সঙ্গে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছেন এমন কোন অভিভাবক থাকেন৷