রাশিয়ার মিসাইল একটি রেস্তোরাঁয় আঘাত করেছে বলে ইউক্রেনের অভিযোগ। ক্রেমলিনের অস্বীকার।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার পূর্ব ইউক্রেনের ক্র্যামাতোর্স্কে মিসাইল আক্রমণ করেছিল রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ওই রাতেই দৈনিক ভিডিও বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, বেসামরিক কাঠামোয় আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। প্রচুর প্রাণহানির আশঙ্কা আছে। বুধবার তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার মিসাইল একটি রেস্তোঁরা ধ্বংস করে দিয়েছে। ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংখ্যাটি আরো বাড়তে পারে।
বস্তুত, বুধবার রাতে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে একের পর এক মৃতদেহ বার করে আনা হচ্ছে। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। যে সময় মিসাইলটি আঘাত করে, তখন রেস্তোঁরার ভিতরে অনেকে বসেছিলেন। ঘটনায় ১১ বছরের দুই যমজ বোন নিহত হয়েছে। আরো এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা গেছে।
রাশিয়ার লাগাতার মিসাইল আক্রমণ
জেলেনস্কির শহরের পর এবার ওডেসায় মিসাইল আক্রমণ রাশিয়ার। নিহত বেসামরিক মানুষ। ধ্বংস হয়েছে দোকান, বাড়ি, গুদাম।
ছবি: Oleksandr Ratushniak/REUTERS
মিসাইল আক্রমণ
যুদ্ধের কৌশল বদলেছে রাশিয়া। আগে তারা সেনা পাঠিয়ে সম্মুখ সমরে নেমেছিল। এবার তারা মিসাইল এবং ড্রোনের সাহায্যে ইউক্রেনে আক্রমণ চালাচ্ছে। একের পর এক শহর লক্ষ্য করে মিসাইল ছোঁড়া হচ্ছে।
ছবি: State Emergency Service of Ukraine/REUTERS
ধ্বংস ওডেসা
বুধবার দিনভর ইউক্রেনের বন্দর শহর ওডেসায় আক্রমণ চালানো হয়েছে। কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ থেকে মিসাইল হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্তত তিনজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
ছবি: Lyashonok Nina/Ukrinform/ABACA/IMAGO
বেসামরিক কাঠামোয় হামলা
ওডেসার গুদাম, দোকান, বাড়ি এবং স্কুলে আক্রমণ চালানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, প্রতিটি ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরো মানুষ আটকে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ওডেসার পাশাপাশি দনেৎস্ক অঞ্চলেও বুধবার লাগাতার মিসাইল আক্রমণ করেছে রাশিয়া। সেখানেও অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ছবি: Oleksandr Ratushniak/REUTERS
জেলেনস্কির শহরে আক্রমণ
এর আগে মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ছোটবেলার শহর ক্রিভি রিহে মিসাইল হামলা চালানো হয়।
ছবি: Oleksandr Ratushniak/REUTERS
আক্রান্ত কিয়েভ
কিয়েভেও প্রতিদিন ড্রোন এবং মিসাইলের সাহায্যে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে কিয়েভে মিসাইল এবং ড্রোন আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে।
ছবি: AFP
বেলারুশে পরমাণু অস্ত্র
এদিকে বেলারুশে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেনকো। রাশিয়ার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে একথা জানিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ফের রাশিয়াকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলে অভিহিত করেছেন। তবে ক্রেমলিন এই হামলার কথা অস্বীকার করেছে। ক্রেমলিনের বক্তব্য, তারা ইউক্রেনের কোথাও বেসামরিক কাঠামোয় হামলা চালায়নি। কেবলমাত্র সামরিক কাঠামো লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবের ছবি তেমনটা নয়। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, রেস্তোঁরাটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে।
শলৎসের বক্তব্য
ভাগনার সেনা বিদ্রোহ নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস। তিনি বলেছেন, ভাগনার বিদ্রোহ রাশিয়ার শক্তি কমিয়ে দিয়েছে। যে শক্তি নিয়ে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল, সেই শক্তি এখন আর তাদের নেই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন বিষয়টি ভালোই বুঝতে পারছেন বলে অভিমত শলৎসের। শুধু তাই নয়, শলৎস বলেছেন, রাশিয়া একটি শক্তিশালী বড় রাষ্ট্র। পুটিন কার্যত একনায়কের মতো সেখানে শাসন করেন। ভাগনার বিদ্রোহ প্রমাণ করে দিল, পুটিনকেও চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব। এই বিষয়টি পুটিনকে নাড়িয়ে দিয়েছে। পুটিনের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করেন শলৎস।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার বন্দি বিনিময় অব্যাহত
এবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের শহর বাখমুতে বন্দি বিনিময় করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন৷ ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা তাদের ১০৬ সেনা সদস্যকে ছাড়িয়ে এনেছে৷ রাশিয়া বলছে, বাখমুত এখনো তাদের দখলে৷
ছবি: Yevhenii Zavhorodnii/REUTERS
বন্দি বিনিময়
ইউক্রেনে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর দুই দেশের যুদ্ধে অনেক সৈন্য দু’পক্ষের হাতে ধরা পড়েছে৷ এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বন্দি বিনিময় হয়েছে৷ সবশেষ হল ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের শহর বাখমুতে৷
ছবি: Yevhenii Zavhorodnii/REUTERS
বাখমুত
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বাখমুত হল ডোনেৎস্ক ওব্লাস্ট অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর৷ এটি বাখমুতকা নদীর তীরে অবস্থিত৷
ছবি: Yevhenii Zavhorodnii/REUTERS
ইউক্রেনের ১০৬
বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দপ্তর থেকে বলা হয়, বাখমুত থেকে ১০৬ জন সেনা সদস্য ফিরে এসেছেন৷ তাদের আটজন অফিসার৷ বন্দি বিনিময়ের কথা রাশিয়া স্বীকার করলেও কতজন তারা ফেরত পেয়েছে তা পরিষ্কার করেনি ক্রেমলিন৷
ছবি: Yevhenii Zavhorodnii/REUTERS
রাশিয়ার দখলে
এদিকে, ক্রেমলিন বলছে, বন্দি বিনিময় হলেও বাখমুত এখনো তাদের দখলে রয়েছে৷
ছবি: Yevhenii Zavhorodnii/REUTERS
বন্দি বিনিময় অব্যাহত
ইউক্রেনের ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর এ পর্যন্ত দুই হাজার ৪৩০ জন বন্দি ফেরত পেয়েছে তারা৷ এর মধ্যে ১৩৯ জন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন৷
ছবি: Yevhenii Zavhorodnii/REUTERS
5 ছবি1 | 5
ওয়াশিংটনে বৈঠক
এদিকে ওয়াশিংটনে পৌঁছে গেছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস। বৃহস্পতিবার তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন। ইউক্রেন সমস্যা নিয়ে দুই মন্ত্রীর কথা হওয়ার কথা। কয়েকদিনের মধ্যেই লিথুয়ানিয়ায় ন্যাটোর সম্মেলন হওয়ার কথা। তার প্রস্তুতি বৈঠক হিসেবেই দেখা হচ্ছে পিস্টোরিয়ার অ্যামেরিকা সফর।
জেলেনস্কির বক্তব্য
জেলেনস্কির দাবি, যুদ্ধ শেষ হলেই ইউক্রেনকে ন্যাটোর অংশ করে নিতে হবে। এবিষয়ে ন্যাটোর আসন্ন বৈঠকে যাতে আলোচনা হয়, তার দাবি তুলেছেন তিনি। অন্যদিকে, দেশের জাতীয় অস্ত্র কারখানার প্রধানকে বরখাস্ত করার পর জেলেনস্কির নির্দেশ-- সমস্ত অস্ত্র যাতে ইউক্রেনে তৈরি হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।