1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্লাবের অনুদান বন্ধ, পুজোর অনুদান চলবে?

৫ অক্টোবর ২০২৩

ক্লাবের জন্য আর অনুদান দেবে না রাজ্য সরকার। খরচের হিসেব না দেয়ায় এমন সিদ্ধান্ত বলে নবান্ন সূত্রের খবর।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ডাকা দুর্গাপুজো নিয়ে সমন্বয় বৈঠক।
ক্লাবগুলোর অনুদান বন্ধ হলো, পুজো কমিটিরও কি বন্ধ হবে?ছবি: Payel Samanta/DW

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের দায়িত্ব নেয়ার পর ক্লাবগুলির জন্য প্রকল্প ঘোষণা করেন। চার দফায় পাঁচ লক্ষ টাকা ক্লাবপিছু অনুদান দিয়েছিল রাজ্য। এবার সেই প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া হল।

২০১২ সালে এই প্রকল্প চালু হয়। ৭৮১টি ক্লাবকে বেছে নিয়ে প্রথম বছর এককালীন দুই লাখ টাকা দেয়া হয়। পরের তিন বছর এক লাখ করে মোট পাঁচ লাখ টাকা অনুদান পায় প্রতিটি ক্লাব। 

ওই বছরই আরো দেড় হাজার ক্লাবকে তালিকায় জোড়া হয়। এ জন্য প্রথম দফায় ১৫ কোটি ও পরে আরো ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হয়েছিল। 

অনুদান বন্ধ

এই প্রকল্পের অধীনে শেষবার ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে ক্লাবগুলির নাম তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই বছর নতুন করে রাজ্যের প্রায় তিন হাজার ক্লাব আবেদন করে। 

নতুন ক্লাবকে প্রথম কিস্তির দুই লাখ এবং পুরনো ক্লাবগুলিকে পরের কিস্তির টাকা দেয় রাজ্য। এ জন্য প্রায় ১০০ কোটির কাছাকাছি খরচ হয়।

২০১৯ সালের পর থেকে এই খাতে ক্লাবগুলিকে অনুদান দেয়া হয়নি। নবান্ন সূত্রের দাবি, প্রশাসনের শীর্ষ মহলের নির্দেশে ক্লাবগুলিকে আর এই প্রকল্পে টাকা দেয়া হবে না।

দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে অনুদান দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। ছবি: Payel Samanta/DW

রাজনীতিকরণের অভিযোগ

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ১৮টি আসনে জয়ী হয় বিজেপি। ঘটনাচক্রে এরপর আর ক্লাবগুলিকে অনুদান দেয়া হয়নি।

এই প্রকল্প ঘিরে সরকারি টাকায় ক্লাবগুলির রাজনীতিকরণের অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। শাসক দল সেই অভিযোগ নাকচ করে দেয়।

সরকারি টাকার ব্যবহার সংক্রান্ত ব্যয়ের শংসাপত্র (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) দেয়া বাধ্যতামূলক করেছিল রাজ্য। নবান্ন সূত্রে খবর, শংসাপত্র অধিকাংশ ক্লাব না দেয়ায় অনুদান বন্ধ করা হচ্ছে।

প্রবীণ সাংবাদিক দেবাশিস দাশগুপ্ত অনুদান প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, ''বহু ক্লাব হিসাব দিতে পারেনি, কী কী খাতে খরচ করেছে। এমনকী ক্লাব বলে কিছু নেই, তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলেই সাইনবোর্ড টাঙিয়ে অনুদান পেয়েছে। এমনটা হচ্ছে যখন আর্থিক সঙ্কটে সরকার ভুগছে। এটা মানুষকে ভোলানোর সিদ্ধান্ত যে আমরা অনুদান বন্ধ করে দিলাম।'

বহু ক্লাব হিসাব দিতে পারেনি: দেবাশিস দাশগুপ্ত

This browser does not support the audio element.

প্রশ্নে পুজো অনুদান

এর পরিপ্রেক্ষিতে আবার প্রশ্ন উঠছে, ''পুজো অনুদানের ক্ষেত্রেও কি সরকারি অর্থের অপব্যবহার হচ্ছে? স্রেফ রাজনীতির জন্যই কাজে লাগানো হচ্ছে পুজো কমিটিগুলিকে?'''

চলতি বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্লাবগুলির জন্য পুজো অনুদান ১০ হাজার টাকা করে বাড়িয়েছেন। প্রতিটি পুজো কমিটি ৭০ হাজার টাকা পাচ্ছে। ক্লাবের মতো পুজো উদ্যোক্তাদেরও এর হিসেব দিতে হয়।

কলকাতার অন্যতম বড় পুজো কমিটি হাতিবাগান সর্বজনীন-এর কর্তা শাশ্বত বসু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''থানা থেকে আমাদের সরকারি অনুদানের টাকা দেয়। এই টাকায় প্রতিমা, মণ্ডপ, আলোকশিল্পীদের পারিশ্রমিক দেয়া হয়। পুজোর এক-দেড়মাসের মধ্যে হিসেব দিতে হয় আমাদের।''

অনুদান ঘিরে বিতর্ক

পুরোহিত ও ইমামদের ভাতা দেয়ার মতো পুজোর অনুদান ঘিরে বিতর্ক চলতে থাকে। প্রতি বছর এ নিয়ে মামলাও হয়। সপ্তাহখানেক আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা অনুদান নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন।

বিচারপতি বলেন, ''আমি অনেক মামলা শুনেছি, যেখানে মানুষ বেতন পাচ্ছেন না, চাকরি পাচ্ছেন না, পেনশন পাচ্ছেন না। আর পুজো কমিটিকে টাকা দেওয়া হচ্ছে!''

উদ্যোক্তাদের মঞ্চ 'ফোরাম ফর দুর্গোৎসব'-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বলেন, "৪০ হাজারের বেশি কমিটি পুজোর অনুদান পায়। এমন অনেক উদ্যোক্তার কথা জানি যারা এই অনুদানের উপর নির্ভর করেই পুজো চালান।''

এ ভাবেই ক্লাবগুলিকে 'হাতে রাখা' হয় বলে বারবার দাবি করেছে বিরোধীরা। এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইনডোরে এ বারের শারদীয় সভায় বলেন, ''টাকাটা দেয়া হয় রাজ্যের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলি প্রচার করার জন্য, যাতে ওই টাকা দিয়ে মানুষকে সজাগ করে। এমন নয় যে আমরা ক্লাবকে কিনছি টাকা দিয়ে।''

ক্লাবের মতো পুজো অনুদানও কি ভবিষ্যতে বন্ধ হতে পারে? দেবাশিসের মতে, ''উদ্যোক্তাদের খরচের খতিয়ান দিতে হয়। থানা নজরদারি করে। কমিটি হিসেব দিতে না পারলে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আর অনুদান দেবে কি না।''

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ