1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্লাবের খরচে উদারতা, শিশুদের খাবারের বেলায় এত কার্পণ্য!

১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বেড়েছে৷ কিন্তু স্কুল পড়ুয়াদের মিড ডে মিলে অর্থ বরাদ্দ সেই নামমাত্রই৷

Westbengalen Schule Preiserhöhung
ছবি: Payel Samanta/DW

শিক্ষক মহল থেকে এই খাতে টাকা বাড়ানোর দাবি উঠছে৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কবে বাড়াবে বরাদ্দ?

স্কুলে পুষ্টিতে বরাদ্দ

শিক্ষার সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান- এই লক্ষ্যে স্কুলে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়৷ এজন্য প্রাথমিক স্তরে ছাত্রপিছু বরাদ্দ ৪ টাকা ৯৭ পয়সা৷ উচ্চ প্রাথমিকে ৭ টাকা ৪৫ পয়সা৷ মাসে ২০ দিনের হিসেবে প্রাথমিকের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে বরাদ্দ ৯৯ টাকা ৪০ পয়সা৷ ২০ দিনের জন্য উচ্চ প্রাথমিকে বরাদ্দ ১৪৯ টাকা৷ এই টাকা চাল ছাড়া অন্যান্য খাবারের জন্য নির্দিষ্ট৷ প্রাথমিকে মাথাপিছু ১০০ গ্রাম ও উচ্চ প্রাথমিকে ১৫০ গ্রাম চাল দেওয়া হয়৷ এ ছাড়া প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মীদের পারিশ্রমিক দিতে হয়৷ জোগাতে হয় জ্বালানির খরচ৷ রান্নার গ্যাসের দাম সিলিন্ডার প্রতি হাজার টাকা ছাড়িয়েছে৷ এর ফলে সামান্য টাকায় স্কুল শিক্ষকরা মিড ডে মিল চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন৷ তাদের বক্তব্য, এভাবে চলতে থাকলে প্রকল্প না বন্ধ হয়ে যায়!

করোনাকালের বকেয়া

করোনা ও লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল৷ এর ফলে বন্ধ ছিল মিড ডে মিলও৷ পড়ুয়াদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বা কাঁচামাল বিতরণ করা হয়েছিল৷ সেক্ষেত্রে পুরো টাকা খরচ করা হয়নি৷ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি- এই ২৩ মাসে মাথাপিছু প্রাথমিকে বরাদ্দ করার কথা ২ হাজার ২৮৬ টাকা ২০ পয়সা৷ উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে ৩ হাজার ৪২৭ টাকা৷ কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় খরচ করা হয়েছে অনেক কম৷ অর্থাৎ, বাড়তি টাকা রয়ে গিয়েছে সরকারের কোষাগারে৷

পাঁচ-সাত টাকায় খাবার কিনতে পাওয়া যায় না: শিক্ষক গৌতম মণ্ডল

This browser does not support the audio element.

উচ্চ প্রাথমিকের ছাত্রদের জন্য মাথাপিছু ১৫০ গ্রাম করে মাসে তিন কেজি চাল প্রাপ্য৷ কিন্তু দেওয়া হয়েছে দুই কেজি করে৷ ফলে অতিমারির সময়ে জনপ্রতি মোট ২৩ কেজি চাল তারা কম পেয়েছে৷ এত অভাব নিয়ে কীভাবে প্রকল্প চলবে? দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত শিবকালীনগর ঈশানচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘পাঁচ-সাত টাকায় কোনো খাবার কিনতে পাওয়া যায় না৷ ওই টাকায় ডাল, সয়াবিন, ডিম কী করে জোগানো সম্ভব? কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা বা পড়ুয়াদের পুষ্টি নিয়ে ভাবনা আছে বলে মনে হয় না৷''

দুর্দশায় প্রকল্পের কর্মীরা

শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার জোগানোর এই প্রকল্পে কেন্দ্র দেয় ৬০ শতাংশ টাকা৷ রাজ্য দেয় বাকি ৪০ শতাংশ৷ বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সম্প্রতি এ নিয়ে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দিয়েছে৷ তাদের দাবি, দ্রুত মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হোক৷ তারা এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের দুর্দশা দূর করারও দাবি তুলেছে৷ ৫০ জন ছাত্রপিছু একজন কর্মীকে নিয়োগ করা হয়৷ তাদের মাসে মাত্র দেড় হাজার টাকা পারিশ্রমিক৷ বিদ্যালয়ের অবকাশের সময় যখন কাজ থাকে না, তখন এই টাকাও কর্মীরা পান না৷ এমনকি তারা রান্নার কাজে যুক্ত থাকলেও তাদের জন্য খাবার বরাদ্দ করা হয়নি৷

কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন

রান্নার কাঁচামাল হিসেবে প্রয়োজনীয় ডাল, সয়াবিন, সবজি সীমিত অর্থে কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে৷ সার্বিকভাবে মিড ডে মিল চালিয়ে যাওয়া আগামী দিনে কঠিন হয়ে উঠবে বলে শিক্ষক মহলের একাংশ মনে করছেন৷ তাদের মতে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে৷ কৃষক সম্মান নিধি থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কিংবা পুজো কমিটিকে অনুদান, সর্বত্র বিপুল টাকার সংস্থান করছে৷ তাহলে কেন মিড ডে মিলের বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দড়ি টানাটানি? বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডার বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে অহরহ উন্নয়নের প্রতিযোগিতা চলছে৷ কেন্দ্র তার অংশ দিচ্ছে না বলে রাজ্যও দেবে না, এটা ঠিক নয়৷ পুজো কমিটিকে যে বাড়তি টাকা রাজ্য দিচ্ছে, তাতে শিশুদের এক মাসের খাবার হয়ে যেতো৷’’

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে উন্নয়নের প্রতিযোগিতা চলছে: আনন্দ হাণ্ডার

This browser does not support the audio element.

বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি

প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের দাবি, ছাত্রপিছু বরাদ্দ বাড়িয়ে অন্তত ২০ টাকা করতে হবে৷ অতিমারির সময় যে অর্থ খরচ হয়নি, তা অবিলম্বে ব্যবহার করতে হবে৷ আলাদাভাবে গ্যাস বা জ্বালানির খরচ দিতে হবে সরকারকে৷

আর সপ্তাহ দুয়েক পরেই উৎসবের আলোয় ভেসে যাবে বাংলা৷ প্রান্তিক পরিবারের শিশুরা কি খিদের অন্ধকারে থেকে যাবে?

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ