1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্লাব চলে জুয়ার টাকায় এটা সবাই জানে: ওসি মতিঝিল

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হঠাৎ করেই জানা গেল ঢাকায় ৬০টির মতো ক্যাসিনো আছে৷ আর তার নিয়ন্ত্রণ করেন যুবলীগ নেতারা৷ অভিযানও হলো৷ এই ক্যাসিনোগুলো তো আর রাতারাতি গজিয়ে ওঠেনি৷ তাই প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ আর সাংবাদিকরা তাহলে কি করেছেন?

Bangladesch Aktion gegen illegale Casinos in Dhaka
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin

ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে বুধবার রাতভর অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব, পুলিশ নয়৷ তারা অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবসহ চারটি ক্লাব সিল করে দিয়েছে৷ আর খালেদকে আটক করেছে অভিযান শুরুর আগে তার গুলশানের বাসা থেকে৷ চারটি ক্লাবের মধ্যে একটি বনানীর ‘গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ'৷ আর বাকিগুলো মতিঝিল থানা এলাকায় এবং থানার কয়েকশ' গজের মধ্যে৷  ফকিরেরপুলের- ‘ইয়ংমেন্স ক্লাব', গুলিস্তানের ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র' এবং আরামবাগের ‘ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব' ৷
র‌্যাব অভিযান চালালো পুলিশ কেন ব্যবস্থা নেয়নি জানতে চাইলে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর ফারুক ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘মতিঝিল এলাকা ক্লাব পাড়া, এখানে জুয়া খেলা হয় আমরা জানি৷ এটা সবাই জানে ৷ ক্লাব চলে জুয়ার টাকায়৷ ক্যাসিনো-ম্যাসিনো কী আমি বুঝি না৷ ক্যাসিনোর খবর আমাদের জানা নেই৷''
জুয়া বৈধ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘‘জুয়া অবৈধ৷ তারপরওতো চলে৷''
তবে তিনি দাবী করেন, ‘‘পুলিশও মাঝে মধ্যে অভিযান চালায় ৷ আবার কয়েকদিন পর শুরু হয়৷''

ওমর ফারুক

This browser does not support the audio element.

অভিযান চালালে কোনো চাপ আসে কিনা? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘‘না চাপ নাই৷''
আর বনানীর ‘গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ' প্রসঙ্গে ওই জোনের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন,‘‘এই এলাকায় একটিই ক্যাসিনো ছিলো৷ আমরা এটাকে ১৬ অক্টোবরই অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিই৷ র‌্যাব বুধবার রাতে গিয়ে সিল করে দিয়েছে৷ আমরাই আগে বন্ধ করেছি৷''এই ক্যাসিনো ক্লাবটি দুই বছর ধরে চলে আসছিলো৷
নান সূত্রে কথা বলে জানা গেছে আগে ঢাকায় এই ক্যাসিনো জুয়ার মূল নিয়ন্ত্রক ছিলো ধানমন্ডি এলকার একটি ক্লাব৷ আর গুলশানে একটি বাণিজ্যিক এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাবেও ক্যাসিনো চালু হয় কয়েক বছর আগে৷ যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ধানমন্ডির ওই ক্লাবটিতে জুয়া খেলতে গিয়ে ক্যাসিনো ব্যবসার প্রতি আকৃষ্ট হন৷ তিনি এবং খালেদ মাহমুদ সিংগাপুরের ক্যাসিনোতে গিয়েও জুয়া খেলতেন৷ তিন বছর আগে তারাই ঢাকায় এই ক্যাসিনোর বিস্তৃতি ঘটায়৷ এর প্রধান কেন্দ্র হয় মতিঝিল, গুলশান ও বনানী এলাকা৷ ওইসব এলাকার ক্লাবগুলোতে তারা প্রভাব বিস্তার করে ক্যাসিনো ব্যবসা চালু করে৷ তবে এর উপরে আরো প্রভাবশালী নেতা আছেন যারা নেপথ্যের নিয়ন্ত্রক৷ এই ক্যাসিনো ব্যবসার টাকা ঠিকমত ভাগ করার জন্য যুবলীগে একজন ক্যাশিয়ারও আছেন৷ এই ক্যাসিনো ব্যবসা যুবলীগের একটি চেইনের মাধ্যমে চলে৷ এটাই যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা থেকে শুরু করে অনেকের আয়ের উৎস৷ এটার জন্য তারা থানা পুলিশ থেকে শুরু করে সব সেক্টরকেই ম্যানেজ করে চলেন৷
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে এইসব ক্যাসিনো নিয়ে সংবাদ মাধ্যম কি পর্যাপ্ত প্রতিবেদন করেছে৷ খোজঁ নিয়ে জানাগেছে কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা এবং অনলাইন ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে ছবিসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন হয়েছে৷ কিন্তু সেটা খুব বেশি নয়৷ ঢাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের একজন সাংবাদিক জানান,‘‘২০১৭ সালে আমি এই ক্যাসিনো নিয়ে ফুটেজ এবং বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম৷ কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠান তা প্রচার করতে দেয়নি৷''
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদ দীপু সারোয়ার বলেন, ‘‘অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো নিয়ে প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া আগেই অনেক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে৷ সে তুলনায় ব্রডকাস্ট মিডিয়ায় রিপোর্ট কম হয়েছে ৷ জুয়ার আসরগুলো নিয়ে ব্রডকাস্ট মিডিয়ায় আরও অনেক কিছু করার ছিলো৷''
আর বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন,‘‘২০১৬ সাল থেকেই এই ক্যাসিনো নিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছে৷ তিনি নিজের পত্রিকাসহ আরো কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদনের তারিখ উল্লেখ করে বলেন পুলিশের দায়িত্ব ছিলো ব্যবস্থা নেয়ার৷ কিন্তু তারা নেয়নি৷ ক্যাসিনোর নানা সরঞ্জামতো আমদানি করা হয়েছে৷ এগুলো কিভাবে আমদানি করা হলো?''

নঈম নিজাম

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ