ব্ল্যাকবোর্ড, চক, বইখাতা – ক্লাসরুমে এককালে শুধু এ সবই দেখা যেত৷ এখন কম্পিউটার সহ আরও হাইটেক সাজ-সরঞ্জাম ঢুকে পড়েছে৷ ভবিষ্যতে থ্রিডি মডিউল এমনকি অঙ্ক ও বিজ্ঞানের মতো জটিল বিষয়ও অত্যন্ত সহজ ও মজার করে তুলতে পারে৷
বিজ্ঞাপন
অত্যন্ত দ্রুত গতির কম্পিউটার, থ্রিডি মনিটর ও ইন্টারনেটে ব্রডব্যান্ড সংযোগ৷ ‘সাইবার ক্লাসরুম' নামের থ্রিডি সফটওয়্যার চালাতে গেলে এই তিনটি জিনিস আবশ্যক৷ ছাত্রছাত্রীরা থ্রিডি চশমা পরে মনিটরের দিকে তাকিয়ে অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা বা রসায়নের মতো শুকনো বিষয়কেও জীবন্ত করে তুলতে পারে৷ এমনভাবে শেখার মজাই আলাদা৷ সবকিছু সহজে মনে রাখা যায়৷ ফ্যুরস্টেনব্যার্গ হাই স্কুলের পড়ুয়া ফিলিপ ব্যুর্ক বলে, ‘‘রসায়নের ক্ষেত্রে পরমাণু তো আর চোখে দেখা যায় না৷ কিন্তু চারিদিকে নানা ধরনের ইলেকট্রন ভেসে বেড়ালে সেটা একেবারে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা৷ কারণ একঝাঁক পরমাণুর মাঝে দাঁড়িয়ে বিস্ময় জাগে৷''
মস্তিষ্ক যাতে নিজে থেকেই শিখতে পারে, তার জন্য মজা ও মোটিভেশন বা প্রেরণার প্রয়োজন৷ বিশেষ করে যে সব শিক্ষার্থী সহজে মনের মধ্যে কোনো বিষয়ের ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করতে পারে না, থ্রিডি পদ্ধতিতে শিক্ষা তাদের সাহায্য করতে পারে৷ তাছাড়া এক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে শুধু পড়া মুখস্ত করতে হয় না, নিজস্ব ছন্দ অনুযায়ী সরাসরি ইন্টারঅ্যাকটিভ পদ্ধতিতে শেখা সম্ভব৷ ফলে সহজেই বোঝা যায়, পারফরমেন্সও বেড়ে যায়৷ ফ্যুরস্টেনব্যার্গ হাই স্কুলের হেড মাস্টার মারিও মোসবাখার বলেন, ‘‘অঙ্কের ক্ষেত্রে প্রায়ই সমস্যা হয়, বিশেষ করে জ্যামিতি শেখার সময়৷ রেখা, কোণ, স্পেস – এ সব বইখাতায় শুধু দ্বিমাত্রিক অবস্থায় দেখা যায়৷ থ্রিডি অবস্থায় দেখতে পেলে আমি রদবদল করতে পারি, ছুঁয়ে দেখতে পারি, সব দিক থেকে দেখতে পারি৷ অঙ্কের জগতে ডুব দিয়ে সেখানে বিচরণ করতে পারি৷''
জাদুঘর: শিশুরা যেখানে খেলে আর শেখে
অস্ট্রেলিয়ায় উদ্বোধন হয়েছে শিশুদের দারুণ এক জাদুঘর৷ শিশুরা সেখানে যাবে, মজার মজার জিনিস দেখবে, বড়দের মতো কাজ করবে, খেলবে আর শিখবে – এই হচ্ছে জাদুঘর নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য৷ খুব সাড়া জাগিয়েছে জাদুঘরটি৷
ছবি: DW/J.Macey
খেলো, করো, শেখো...
সিডনির ইউনিভার্সিটি অফ ওলংগং-এর ভেতরে ৩০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে তৈরি করা হয়েছে এই জাদুঘর৷ আর্লি স্টার্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর ভাবনার ফসল এই জাদুঘরে শিশুরা মন মতো খেলতে পারে, কাজও করতে পারে৷ খেলতে খেলতে, কাজ করতে করতেই শিখে নেয় অনেক কিছু৷ ছবির এই দুই শিশু খেলাচ্ছলেই ঘর বানাতে শিখছে৷
ছবি: DW/J.Macey
জলদস্যুর জাহাজ
সিডনির এই জাদুঘর শুধু ১ থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছরের শিশুদের জন্য৷ শিশুদের সঙ্গে তাদের বাবা-মা-ও আসতে পারেন৷ জাদুঘরে ঢোকার মুখেই রয়েছে একটি জলদস্যুদের জাহাজ৷ সেই জাহাজে গিয়েও শিশুরা খেলতে খেলতেই শেখে৷ পুঁচকেরা হামাগুড়ি দিতে দিতেই এক সময় হাঁটতে শেখে, যারা হাঁটতে জানে, কথা বলতে পারে তারা সেই জাহাজে ঘুরে ঘুরেই নেয় সাহিত্য, সংস্কৃতির সহজ পাঠ৷
ছবি: DW/J.Macey
বিশ্বের প্রথম...
কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শিশুদের জন্য বিশ্বের প্রথম জাদুঘর এটি৷ সেখানে খেলাচ্ছলে প্রত্নতত্ত্বের মতো কঠিন বিষয়ের সঙ্গেও পরিচিত হয় শিশুরা৷ প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতো কাজ করার জন্য বিশেষ কিছু স্থানও সেখানে তৈরি করা হয়েছে৷ স্থানগুলোর কিছু অংশ পাথুরে, কিছু অংশ আবার গর্তে ভরা৷ মাটি খনন করার সরঞ্জামও আছে শিশুদের এই জাদুঘরে৷
ছবি: DW/J.Macey
জীবন্ত যন্ত্র
অদ্ভুত আর বিশাল এক যন্ত্রের হা করা মুখের ভেতরে মাথা ঢুকিয়ে খেলছে দু’টি শিশু৷ যন্ত্রটি জীবন্ত প্রাণীর মতো৷ প্রাণী যেমন শ্বাস নিয়ে শ্বাস ছাড়ে, এই যন্ত্রও সেভাবে বাতাস বের করে মুখ দিয়ে৷
ছবি: University of Wollongong
কেনাকাটা শেখা
জাদুঘরের এই অংশটির নাম ‘মার্কেট প্লেস’৷ এখানে শিশুরা কেনাকাটা সম্পর্কে ধারণা নেয়৷ বড় হয়ে এই কাজগুলো তো করতেই হবে, ভালো কাজ কম বয়সে শিখলে তো ক্ষতি নেই! ২০১৫ সালের মে মাসে উদ্বোধন হয়েছে সিডনির এই জাদুঘরটির৷ এ পর্যন্ত ১০ হাজার শিশু গিয়েছে সেখানে৷ অনেকের আবার দু-তিনবার গিয়েও সাধ মেটেনি৷
ছবি: DW/J.Macey
5 ছবি1 | 5
এই ‘ভিশুয়াল' শিক্ষা পদ্ধতি জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট এলাকার এক স্কুলে তৈরি করা হচ্ছে৷ সেখানে উৎসাহী শিক্ষক, পড়ুয়া, ইঞ্জিনিয়ার ও প্রোগ্রামার-দের এক দল বিশেষ ত্রিমাত্রিক শিক্ষার মডিউল তৈরির কাজ করছে৷ এই কাজে পড়ুয়াদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ৷ ক্লাসে প্রয়োগ করার আগে তারা প্রত্যেকটি মডিউল পরীক্ষা করে দেখে৷ ইমসিমিটি কোম্পানির প্রধান মার্টিন সিমারমান বলেন, স্কুল পড়ুয়ারা সেই সব প্রযুক্তি সম্পর্কে তাদের জ্ঞান বাড়াতে পারছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ৷ গ্রাফিক কম্পিউটার, তার সঙ্গে মানানসই মনিটর, গেম কনসোলার-এর মতো ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিভাইস এবার আর শুধু গেম খেলার জন্য নয়, জটিল বিষয় বুঝতেও কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে৷''
প্রত্যেক লার্নিং মডিউল-এর জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও কনটেন্ট স্থির করা হয়েছে৷ বিষয়বস্তু স্পষ্ট হলে তার মডেল তৈরি, প্রোগ্রামিং ও রূপায়ন করা হয়৷ সাইবার ক্লাসরুমের পাঠক্রমে সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান নিশ্চিত করতে মার্টিন সিমারমান বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতায় কাজ করেন৷ যেমন হান-শিকার্ড সোসাইটি-র বিজ্ঞানীরা ঘরের মধ্যে ন্যাভিগেশনের বিশেষ জুতোর গুণাগুণ দেখাচ্ছেন৷ সেটি পরের থ্রিডি মডিউলে কাজে লাগতে পারে৷ তবে সবসময়ে পড়ুয়াদের আইডিয়া ও ফিডব্যাক নেওয়া হয়৷ মার্টিন সিমারমান বলেন, ‘‘উচ্চ পর্যায়ের গবেষণা যাতে স্কুলেও প্রয়োগ করা হয়, সেটা আমার কাছে অত্যন্ত জরুরি৷ সাইবার ক্লাসরুম সে ক্ষেত্রে এক প্ল্যাটফর্ম হতে পারে৷ আমরা স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের ভাবের আদান-প্রদানে উৎসাহ দিই৷ গবেষণার সর্বশেষ ফলাফল যাতে থ্রিডি মডিউলের মাধ্যমে বিজ্ঞানের ক্লাসে কাজে লাগানো যায়, সেই চেষ্টাও করি৷''
শিশুদের নানা রকমের ক্লাসরুম
বর্ণমালার সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে শুরু হয় শিক্ষাজীবন৷ সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য শিশুদের শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই৷ চলুন দেখা যাক, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রেণিকক্ষে শিশুদের কীভাবে লেখাপড়া শেখানো হয়৷
ছবি: picture-alliance/landov
বেশির ভাগ দেশের শ্রেণিকক্ষে যা থাকে...
বিশ্বের প্রায় সব দেশের শ্রেণিকক্ষেই চক আর ব্ল্যাক বোর্ড থাকে৷ শিক্ষক বা শিক্ষিকা সেই ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে শিক্ষার্থীদের বোঝান৷ শিক্ষার্থীরা বেঞ্চে বসে বসে শোনে৷ তবে অনেক দেশই এই সাবেকি ব্ল্যাকবোর্ড এবং চক ছেড়ে দিয়েছে৷ আবার এমন দেশও আছে, যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের মাথার ওপরে কোনো ছাদ নেই৷ মাটিতে বসেই লেখাপড়া করতে হয় তাদের৷
ছবি: AP
দক্ষিণ কোরিয়ায় ডিজিটাল বই...
দক্ষিণ কোরিয়ার স্কুলে এসে গেছে কম্পিউটার৷ ইন্টারনেট সংযোগও দেয়া হয়েছে প্রতিটি ক্লাসরুমে৷ অর্থাৎ ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের হাতে কোনো বই-খাতা থাকবে না৷ বইয়ের পরিবর্তে ‘ই-বুক’ দেয়া হবে তাদের৷ সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার৷ সবাইকে ডিজিটাল শিক্ষাদান পদ্ধতির আওতায় নিতে দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিনামূল্যে ‘ট্যাবলেট পিসি’ দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে৷
ছবি: AP
ঘানার শিশুদের অবস্থা
অনেক দেশের স্কুলে আবার কম্পিউটার তো দূরের কথা, ক্লাসরুমই নেই৷ আফ্রিকার দেশ ঘানার এই স্কুলটি দেখুন৷ ভবনই নেই! তাই গাছের ছায়াতেই নেয়া হচ্ছে ক্লাস৷ শিক্ষিকা পড়াচ্ছেন আর ছোটমনিরা বেঞ্চে বসে মন দিয়ে শুনছে তাঁর কথা৷
ছবি: Fotolia/Living Legend
জার্মানির অত্যাধুনিক ক্লাসরুম
জার্মানিতে কিন্তু ছোট ছোট বাচ্চারাও ক্লাসে পেন্সিল ব্যবহার করে না৷ নোট লেখার বইও নয়৷ টাচ প্যাড, স্মার্টবোর্ড, নেটবুক – এই সমস্ত আধুনিক জিনিসপত্র এ বয়সেই এসে গেছে তাদের হাতে৷
ছবি: AP
যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল
শিল্পোন্নত দেশগুলোতে শিশুদের শিক্ষা যেন বাড়তি চাপ৷ ছবির এই চার বছর বয়সি শিশুগুলোর মতো সব শিশুকেই বলতে গেলে মায়ের কোল থেকে নেমে ঢুকে পড়তে হয় স্কুলে৷ চাপ যে তখন থেকেই শুরু!
ছবি: AP
কেনিয়ার স্কুল এবং ক্লাসরুম
কেনিয়ায় শিক্ষাজীবনের প্রথম আট বছর শিক্ষার্থীদের কোনো বেতন দিতে হয় না৷ তারপরও লেখাপড়া করা সবার জন্য খুব সহজসাধ্য নয়৷ দরিদ্র পরিবারের বাবা-মায়েরা বই-খাতা, পেন্সিল, পোশাক, জুতো ইত্যাদির খরচ জোগাতে পারেন না বলে অনেক শিশুকেই লেখাপড়া ছেড়ে দিতে হয়৷
ছবি: DW/J.Bruck
ব্রিটেনের স্কুলে ‘ইউনিফর্ম’ বাধ্যতামূলক
ইংল্যান্ডের প্রায় সব স্কুলেই শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত পোশাক পরতে হয়৷ সবাই এক রকম পোশাক পরলে শিক্ষার্থীদের চিনতে সুবিধা হয় এবং তাদের পড়াশোনাতেও মন বসে – এমন কিছু যুক্তিতেই শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট পোশাক পরার নিয়ম মানছে স্কুলগুলো৷ তবে ব্রিটেনে একটা সুবিধা আছে৷ দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ হিসেবে অনুদান দেয়া হয়৷ ফলে দরিদ্ররা চাইলেই ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
পাকিস্তিনে অবহেলিত শিক্ষাখাত
পাকিস্তানে গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমিয়ে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে৷ ফলে শিক্ষার হার আরো কমছে, কমছে স্কুলও৷ ওপরের ছবিতে একটি পার্কে লেখাপড়া করতে দেখা যাচ্ছে শিশুদের৷ পাকিস্তানে এমন দৃশ্য অপরিচিত নয়৷
ছবি: AP
দক্ষিণ সুদানে মেয়েরা বিপদে...
দক্ষিণ সুদানেও প্রায় একই অবস্থা৷ গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে রীতিমতো সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হচ্ছে৷ সে দেশের মাত্র ১৬ ভাগ নারী এখন কোনো রকমে পড়তে এবং লিখতে পারে৷ যুদ্ধের ধ্বংসলীলা থেকে হাতে গোনা যে কয়েকটি স্কুল রক্ষা পেয়েছে, তার মধ্যে অনেকগুলোতে চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ নেই৷ বই-পত্রও নেই কিছু স্কুলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
উন্নতিশীল ব্রাজিলেরও করুণ অবস্থা
দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে ব্রাজিলে৷ কিন্তু তাতে দরিদ্রদের ভাগ্যের খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না৷ গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোতে তাই খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করতে হয় শিশুদের৷
ছবি: dapd
উন্নতিশীল ব্রাজিলেরও করুণ অবস্থা
দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে ব্রাজিলে৷ কিন্তু তাতে দরিদ্রদের ভাগ্যের খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না৷ গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোতে তাই খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করতে হয় শিশুদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এবং বাংলাদেশ...
২০১৩ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের সময় অসংখ্য স্কুলের ক্ষতি সাধন করা হয় বাংলাদেশ৷ এ বছর দীর্ঘদিন হরতাল, অবরোধ চলায় স্কুলগুলোও অনেক দিন বন্ধ ছিল৷ এক পর্যায়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্লাস নিতে শুরু করে কিছু স্কুল৷ হরতাল-অবরোধের কারণে সপ্তাহের ৫-৬ দিন গৃহবন্দী, তারপর ছুটির দিনে স্কুলবন্দী৷ বাংলাদেশের শিশুদের অসহায়ত্ব ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন৷
ছবি: picture-alliance/landov
12 ছবি1 | 12
থ্রিডি পদ্ধতিতে শিক্ষার ক্ষেত্রে অগমেন্টেড রিয়ালিটি-ও পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ ভবিষ্যতে শুধু হাত-পা নেড়েই এই থ্রিডি মডিইউলের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকশন করা যাবে৷ এভাবে শেখার ব্যবস্থার আরও উন্নতি করা যাবে৷
মার্টিন সিমারমান বলেন, ‘‘কার্লসরুয়ে শহরে শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমরা এক বড় সমীক্ষা শেষ করেছি৷ তাতে দেখা গেছে, যে সাইবার ক্লাসরুম প্রয়োগ করে পড়ুয়াদের কগনিটিভ বোঝার ক্ষমতা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে৷''
নতুন থ্রিডি মডিইউলের মাধ্যমে শিক্ষা স্কুল-পড়ুয়াদের প্রেরণা, বোঝার ক্ষমতা ও পরীক্ষায় নম্বরও বাড়িয়ে দিতে পারে৷ তবে সেইসঙ্গে চাই উপযুক্ত শিক্ষাপদ্ধতি৷
শিশুদের আইকিউ বাড়ানোর সহজ উপায়
আইকিউ, অর্থাৎ বুদ্ধি বেশি শানানো না হলে এখন প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় টেকা দায়৷ কিন্তু শিশুদের আইকিউ কীভাবে বাড়ানো যায়? খুব সহজ কিছু উপায় দেখিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ক্যারেন কুইন৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/beyond/Vladimir Godnik
সব বিষয়ে কথা বলুন
আপনার সন্তানের সঙ্গে সম্ভব হলে সব বিষয়েই কথা বলবেন৷ এতে অল্প অল্প করে জ্ঞান তো বাড়বেই, পাশাপাশি ভাষায় দক্ষতাও বাড়বে৷ শিশু বেশি কথা বললেই ভালো৷ কথা বলায় নিরুৎসাহিত করা তাদের বিকাশের জন্য ক্ষতিকর৷ এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু খুব কম কথা বলে, তাদের তুলনায় বেশি কথা বলতে অভ্যস্ত শিশুদের বুদ্ধি অন্তত ২৮ পয়েন্ট বেশি৷
ছবি: Fotolia/athomass
ভাবনা আর দেখার জগতটা বড় করুন
নানা ধরনের রং, বিভিন্ন আকৃতির বস্তু, নানা রকমের ফল এবং প্রাণী দেখাতে হবে শিশুদের৷ স্কুলে যদি সে ব্যবস্থা থাকে তাহলে তো কথাই নেই৷ তবে নিজেও এমন কিছু বই কিনে দিন, যা পড়ে বা যেসব বইয়ের ছবি দেখে শিশু এ সব সম্পর্কে জানতে পারে৷
ছবি: Fotolia/Eisenhans
গুনতে শেখান
বাচ্চাদের খুব সহজেই গুনতে শেখানো যায়৷ এই যেমন যদি বলেন, ‘‘পাঁচ মিনিটের মধ্যে খাবার তৈরি হয়ে যাবে’’ – তাহলে কিন্তু শিশু ৫ সংখ্যাটার সঙ্গে পরিচিত হলো৷ যদি বলেন, ‘‘তোমার তিনটা চকলেট আছে, আমার আছে দুটো’’ – তাহলে আপনি ওকে ২ আর ৩ শিখতে সহায়তা করলেন৷ চকলেট যদি হাতে নিয়ে দেখান – তাহলে ওরা আরো উৎসাহ নিয়ে সংখ্যাগুলো শেখার সঙ্গে সঙ্গে গুণতেও শিখবে৷
ছবি: Colourbox/Abbyasov Alexey
স্মৃতি পরীক্ষা
কোনো বই পড়া শেষ হলে আপনার সন্তানকে বইয়ের গল্পটা নিজের মতো করে বলতে বলুন৷ এভাবে শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়ানো যায়৷ স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর আরো সহজ উপায়ও আছে৷ টেবিলের ওপর কিছু ক্যান্ডি রেখে সন্তানকে দেখান৷ দেখা হয়ে গেলে ক্যান্ডিগুলো কাগজ বা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন৷ তারপর ওকে বলুন টেবিলের ফাঁকা জায়গায় সমান সংখ্যক চকলেট ক্যান্ডির মতো সাজিয়ে রাখতে৷ এভাবেও শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়ানো যায়৷
ছবি: Fotolia/Tatyana Gladskih
খেলনা
পাজল, লেগো কাঠের তৈরি নানা ধরণের ব্লক – এ সব বাচ্চাদের জন্য স্রেফ খেলনা হলেও, ওদের বুদ্ধাঙ্ক বা আইকিউ বৃদ্ধিতে খুব ভালো ভূমিকা রাখে৷
ছবি: picture alliance/landov
সমস্যার সমাধান
নিজের কাপড় নিজেকেই পরতে দিন৷ খুব বেশি সময় লাগছে? বিরক্ত হবেন না৷ ওকে সময় দিন, ওর মতো করে কম সময়ে কাজটা শেষ করার সুযোগ দিন৷ ধীরে ধীরে ও সমস্যাটার একটা সমাধান ঠিকই বের করবে৷ এভাবে রাতের খাবারে কী কী খাওয়া যায়, ও কোথায় বেড়াতে যেতে চায় – এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগও দিন বাচ্চাদের৷ এর ফলে ওদের চিন্তা করা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়বে৷
ছবি: picture-alliance/Beyond
সৃষ্টিশীল কাজ
বাসায় ছবি আঁকার কাগজ, রং, তুলি, কাঁচি, আঠা, ব্রাশ – এ সব রাখতে ভুলবেন না৷ এ ধরনের জিনিস নিয়ে খেলতে খেলতেও অনেক শিশু সৃষ্টিশীল কাজে আগ্রহী হয়ে ওঠে৷ পরবর্তী জীবনে এই আগ্রহটাই হয়ত ওকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে৷