ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায় দিলেন শেখ হাসিনা
১১ আগস্ট ২০২৪![শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন](https://static.dw.com/image/69858784_800.webp)
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ হস্তান্তর না করার জন্য তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শনিবার দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছেন। এই বার্তায় তিনি এমন অভিযোগ করেন। বার্তাটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট দেখতে পেয়েছে।
তার কথায়, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সার্বভৌমত্ব ছেড়ে দিলে যুক্তরাষ্ট্র 'বঙ্গোপসাগরের উপর কর্তৃত্ব' করতে সক্ষম হতো। তিনি নাগরিকদের সতর্ক করেছেন, তারা যেন কট্টরপন্থিদের দ্বারা চালিত না হন।বার্তায় তিনি বলেছেন, "আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সেন্টমার্টিন ও বঙ্গোপসাগর ছেড়ে দিতাম, তাহলে আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।”তিনি একটি বার্তায় জানান, "অনেক নেতাদের হত্যা করা হয়েছে, কর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। অনেক বাড়িঘর ভাঙচুর করা হচ্ছে। অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। এসব শুনে আমি মর্মাহত। ইনশাআল্লাহ্, আমি দ্রুত দেশে ফিরে আসব। আওয়ামী লীগ বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমি সব সময়ই বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য প্রার্থনা করি। যে দেশের মঙ্গলের জন্য আমার মহান পিতা সারা জীবন কাজ করে গেছেন। যে দেশের জন্য আমার পিতা ও পরিবারের সদস্যরা জীবন দিয়েছেন।”
কোটা সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে হাসিনা বলেন, "আমি আবারো দেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই। আমি কখনোই তোমাদেরকে রাজাকার বলে অভিহিত করিনি। আমার মুখের কথাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি সেদিনের পুরো ভিডিওটা আবারো দেখার অনুরোধ করছি। ষড়যন্ত্রকারীরা সরলমনের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।”
ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, শেখ হাসিনা বলেছেন, "আমি পদত্যাগ করেছি যাতে আমাকে মৃত্যুমিছিল দেখতে না হয়। তারা ছাত্রদের মরদেহের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আমি অনুমতি দিইনি। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।”
হাসিনা সরকারের বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল। চলতি বছরের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে, তিনি বলেছিলেন, "একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি" তাকে একটি বিমানঘাঁটির বিনিময়ে ক্ষমতায় মসৃণ প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিল।
তার সর্বশেষ বিবৃতিতে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে এই ধরনের বিদেশি শক্তি হাতে "ব্যবহৃত" না হওয়ার জন্য সতর্ক করেছেন।ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে।আগামী সপ্তাহে ভারতের সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সপ্তাহব্যাপী ছাত্র বিক্ষোভে ৩০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা এবং অন্যান্য দেশ শিক্ষার্থীদের এই মৃত্যুর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। ঢাকায় নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে ওয়াশিংটন বলেছে, তাদের আশা বাংলাদেশে এই সরকার "একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নির্ধারণকরবে।"
আরকেসি/টিএম (টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ইকোনমিকস টাইমস, দ্য প্রিন্ট)