1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কয়লার ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন দেশের পরিকল্পনা

৭ ডিসেম্বর ২০২৩

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কয়লার ব্যবহার থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে৷ এক্ষেত্রে দেশগুলো বিভিন্ন কৌশল ও সময়সীমা অনুসরণ করছে৷

ইন্দোনেশিয়ায় নদী দিয়ে কয়লা পরিবহন করা হচ্ছে৷ পেছনে একটি মসজিদ৷
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়লা রপ্তানিকারক৷ছবি: Getty Images/E. Wray

সৌর ও বায়ুশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে ভারতের অনেক বড় লক্ষ্য রয়েছে৷ ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বনমুক্ত হতে সরকার অনেক বিনিয়োগ করছে৷ কিন্তু বিষয়টি কঠিন, কারণ কয়লাখাতে অনেক মানুষ চাকরি করছেন৷ চাহিদা মেটাতে ভারত এখনও বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করছে৷ বিশ্লেষকরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে আমদানি কমবে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ উৎপাদন চলতে থাকবে৷

টেকসই এনার্জি ট্রানজিশন বিশেষজ্ঞ পাও-ইয়ু-ওই বলছেন, কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্গমন ধরে মাটির নীচে জমা করছে ভারত৷ ‘‘আমি মনে করি না, এটা বাস্তবসম্মত৷ কারণ, আমরা দেখছি, ফটোভল্টেয়েক বিদ্যুৎকেন্দ্র, নবায়নযোগ্য জ্বালানি আসলে, কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে সস্তার হতে পারে,'' বলেন তিনি৷

নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা

04:27

This browser does not support the video element.

ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়লা রপ্তানিকারক৷ তারপরও দেশটি তার ১৭ হাজারের বেশি দ্বীপকে ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিউট্রাল করতে চায়৷ কিন্তু দেশটির নীতি পরস্পরবিরোধী৷ ‘‘তারা বলছে, তারা হয়ত কয়লার ব্যবহার বন্ধ করবে, কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলোতে কয়লা রপ্তানি করবে৷ সেক্ষেত্রে কার্বন নিগর্মনের দায়টা সেই সব দেশের উপর বর্তাবে৷ ইন্দোনেশিয়ায় জিওথার্মাল এনার্জি ও ফটোভল্টেয়েকের অনেক সম্ভাবনা আছে৷ কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা এসবের খুব বেশি বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি না- এমনকি ফটোভল্টেয়েকের ক্ষেত্রেও, কারণ বাজারে প্রবেশের সম্ভাবনা সীমিত,’’ বলেন পাও-ইয়ু-ওই৷

যুক্তরাষ্ট্রও কয়লার ব্যবহার বন্ধের পরিকল্পনা করছে৷ ২০৩৬ সালের মধ্যে সব কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করতে চায় দেশটি৷ কিন্তু কিছু রাজ্য কর্তৃপক্ষ এর বিরোধিতা করছে, কারণ এই খাতে অনেক মানুষ কাজ করছেন৷ তবে এটি এখন ভালোভাবেই প্রমাণিত যে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিও এখন একটি লাভজনক উৎস, এবং এটি বাড়ছে৷ পাও-ইয়ু-ওই বলেন, ‘‘টেক্সাসের মতো কিছু রাজ্যের কথা ভাবলে মনে হবে যেন, তারা জীবাশ্ম জ্বালানি পছন্দ করে৷ তবে এমন অনেক কোম্পানিও আছে যারা বুঝতে পেরেছে যে, বায়ুশক্তি, ফটোভল্টেয়েক ইত্যাদি করেও লাভবান হওয়া সম্ভব, কেননা টেক্সাসে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো আছে, অনেক বাতাস আছে৷ এছাড়া এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে আপনি কী বানাবেন, তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার মতো অনেক মানুষ নেই৷’’

জার্মানিও আগামী ১৫ বছরের মধ্যে কয়লা থেকে বের হইতে চাইছে৷ দেশটিতে এখনও কয়লার প্রয়োজন আছে৷ কারণ এখনও ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের জন্য জার্মানি কয়লার উপর নির্ভরশীল৷ দেশটি দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চলে যেতে পারে, কিন্তু সেক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে৷ টেকসই এনার্জি ট্রানজিশন বিশেষজ্ঞ পাও-ইয়ু-ওই বলেন, ‘‘মানসম্মত পদ্ধতি বের করা, পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগের কথা ভাবা, মানুষের ভালোমন্দ বিষয়ে যত্নশীল হওয়া, অর্থাৎ গ্রামের খুব কাছে স্থাপনা নির্মাণ না করা, পশুপাখির যত্ন নেওয়া এবং শুধু সাগরের বুকে নয়, উপকূলীয় এলাকাতেও বায়ু শক্তি উৎপাদনের সম্ভাবনা কাজে লাগানো- ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি৷’’

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্বন নির্গমনকারী দেশ চীন৷ গত কয়েক দশকে দেশটির অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব করতে বিশাল পরিমাণ কয়লার ব্যবহার ভূমিকা রেখেছে৷ কিন্তু দেশটিতে এখন আর কয়লার ব্যবহার বাড়ছে না৷ কারণ চীন বুঝতে পেরেছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিও লাভজনক হতে পারে এবং সে কারণে দেশটি এখন এই খাতে বিশ্বের অন্যতম বড় শক্তি৷ ‘‘তারা ২০৬০ সালের মধ্যে পুরো দেশকে কার্বন নিউট্রাল করতে চাইছে৷ আমার মতে, এটি একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা৷ তবে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চীন দেখিয়েছে যে, যদি তারা কিছু চায়, তাহলে এ ধরনের লক্ষ্য অর্জন করতে তারা সক্ষম,’’ বলেন পাও-ইয়ু-ওই৷

সাউথ আফ্রিকা এখনও কয়লা দিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করছে৷ তবে এতে পরিবর্তন আসছে৷ সাত বছর আগে সে দেশের জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় কয়লা থেকে সরে আসার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ তবে এটি বাস্তবায়নে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় ৫৫০ বিলিয়ন ইউরো খরচ হবে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে৷ তাই বিনিয়োগ অংশীদার বা দাতাদের সহায়তা ছাড়া এই পরিকল্পনা সফল হবে না৷

মোনা ভেস্টহল্ট, টাবেয়া ম্যার্গেনটালার/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ