1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এক সাথে বসবাস

আনা পেটার্স / আরবি২৮ জুলাই ২০১৩

‘‘আমার যদি কারো সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছা করে, তাহলে বারান্দায় গিয়ে বসলেই হলো, কেউ না কেউ এসে যায় গল্প করার জন্য৷’’ কথাগুলি ৭২ বছর বয়সি টিনা আর্নটের৷ একা হলেও নিঃসঙ্গ নন তিনি৷

Wohnprojekt Amaryllis eG f?r mehrere Generationen in Bonn-Beuel, Vilich-M?ldorf. Projektziel ist es, gemeinsam mit Alt und Jung, ?kologisch nachhaltig und sozial engagiert zusammen zu bauen, zu wohnen und zu leben. Die Wohngenossenschaft Amaryllis eG umfasst zurzeit 46 erwachsene Mitglieder zwischen 26 und 85 Jahren sowie 20 Kinder und Jugendliche unter 18 Jahren. Die Genossenschaft versteht sich als eine Haus- und Nachbarschaftsgemeinschaft, in der neben dem Erhalt der Selbstst?ndigkeit und Eigenverantwortung der Gedanke einer Solidargemeinschaft verwirklicht werden soll. Bonn, Nordrhein-Westfalen, Deutschland, 10.08.2008
ছবি: picture-alliance/dpa/JOKER

টিনা আর্নট কোনো বৃদ্ধাশ্রমে বাস করেন না৷ থাকেন না কোনো ভাড়া বাড়িতেও৷ আর্নট বাস করেন বন শহরের একটি বিশেষ ধরনের আবাসিক প্রকল্প ‘আমারিলিস'-এর একটি বাড়িতে৷ এই প্রকল্পের বাড়িগুলি যৌথ পরিবারের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ পার্থক্য হলো, এখানে প্রত্যেক ভাড়াটের আলাদা আলাদা বাসা আছে৷ তিন প্রজন্মের মানুষ একই কমপ্লেক্সে বসবাস করেন৷ একে অপরকে সহায়তা করেন৷ এমনকি গাড়িও ভাগাভাগি করে ব্যবহার করেন তাঁরা৷

‘‘আমি মানুষের মধ্য থাকতে ভালোবাসি৷ আরো কম বয়সেই আমি এ ধরনের প্রকল্পের কথা চিন্তা করেছিলাম, গড়ে তোলার উদ্যোগও নিয়েছিলাম৷ কিন্তু সফল হইনি৷ তারপর ইন্টারনেটে দেখা শুরু করলাম৷ ‘বৃদ্ধদের জন্য বসবাসের সুযোগ-সুবিধা' – এই বিষয়টি উল্লেখ করতেই আমারিলিস-এর নামটি বের হয়ে এল'', বলেন টিনা আর্নট৷

গ্যার্ড হ্যোনশাইড গ্রস এই প্রকল্পের উদ্যোক্তাদের একজন৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই বাড়িটি নিজেরাই বানিয়েছি৷ আমরা নিজেরাই মালিক৷ কোনো ম্যানেজার বা বিনিয়োগকারী নেই আমাদের৷ সব কিছু আমরা নিজেরাই দেখাশোনা করেছি৷''

রয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ

শুধু বাড়িটি নির্মাণই নয়, দৈনন্দিন কাজও একসাথে মিলে সম্পন্ন করেন বাসিন্দারা৷ এ জন্য রয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ৷ বয়স্করাও এই সব গ্রুপে সক্রিয়৷ মিডিয়ার আগ্রহ দেখে এমন একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গড়ে তোলা হয়েছে, যেটা শুধু মিডিয়ার প্রশ্নোত্তর নিয়েই ব্যতিব্যস্ত থাকে৷ গ্যার্ড হ্যোনশাইড গ্রস ও তাঁর স্ত্রীও যুক্ত এই গ্রুপে৷

আমারিলিস আবাসিক কমপ্লেক্সে ৫০ জন বয়স্ক আর ২০ জন তরুণ ছেলে-মেয়ে বসবাস করেন৷ বয়স্করা বাচ্চাদের সাহায্য করেন, বাচ্চারা করে বয়স্কদের সাহায্য৷ ‘‘এটা আমার কাছে চমত্কার মনে হয়৷ আনন্দও লাগে৷ মানুষকে তরুণ ও সজীব রাখে এখানে'', এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন টিনা আর্নট৷

শহরের কোনো এক প্রান্তে এক ইউনিটের বাড়িতে বার্ধ্যকের দিনগুলি যাপন করার কথা চিন্তাই করতে পারেন না গ্যার্ড হ্যোনশাইড গ্রস৷ ‘‘আমার স্ত্রীও এই রকম চিন্তা-ভাবনা করতেন৷ তাই আমরা সমমনাদের খুঁজতে লাগলাম, পেয়েও গেলাম৷'' সন্তানরা বড় হয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, স্বামী স্ত্রী বহু প্রজন্মের এই আবাসিক কমপ্লেক্সে বসবাস করতে শুরু করেন৷

যৌথ পরিবার প্রায় দেখাই যায় না

জার্মানিতে যৌথ পরিবার প্রায় দেখাই যায় না, যেখানে নানা-নানি, মা-বাবা, নাতি-নাতনি এক সাথে বসবাস করে৷ তাই বৃদ্ধ বয়সে হয় একা বাস করা, নয়ত কোনো বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়া ছাড়া গতি থাকে না অনেকের৷ এ কারণে অনেক প্রবীণই এখন বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজছেন, যেখানে নিঃসঙ্গতাও থাকবে না আবার স্বাধীনতা বজায় রেখেও চলা যাবে৷ এক্ষেত্রে বনের আমারিলিস প্রকল্প কিংবা ফ্রাইবুর্গের আলবার্ট-রিয়া-বৃদ্ধনিবাসের মতো প্রকল্পগুলি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হতে পারে৷ ফ্রাইবুর্গের বৃদ্ধাশ্রমে ছাত্র-ছাত্রীরা কম ভাড়ায় এক রুমের অ্যাপার্টমেন্ট পেতে পারেন৷ এর বদলে সপ্তাহে একদিন বর্ষীয়ান বাসিন্দাদের দেখাশোনা করতে হয় তাঁদের৷ এইভাবে তরতাজা বায়ু বয়ে যায় বাড়িটিতে৷ বৃদ্ধ ও তরুণরা পরস্পরের কাছ থেকে লাভবান হন৷

জন্মের হার কমে যাচ্ছে

জার্মানিতে জন্মের হার কমে যাচ্ছে৷ অন্যদিকে বেড়ে যাচ্ছে প্রবীণদের সংখ্যা৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির মধ্যে জার্মানিতে বয়স্কের হার সবচেয়ে বেশি৷ ইইউ-র ২০১৩ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জার্মানির ২০.৬ শতাংশ বাসিন্দার বয়স ৬৫ বছরের বেশি, আর ১৩.২ শতাংশের বয়স ১৪ বছরের কম৷

জার্মানিতে জন্মের হার কমে যাচ্ছে, বেড়ে যাচ্ছে প্রবীণদের সংখ্যা (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/ dpa

কিন্তু এই অবস্থার জন্য সেরকম প্রস্তুতি নেই৷ প্রবীণদের উপযোগী কম ভাড়ার বাসাও তেমন নেই৷ এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে আমারিলিস-এর মতো প্রকল্পগুলি গুরুত্ব পাবে বলে মনে করেন হ্যোনশাইড গ্রস৷ এর জন্য সরকারি সহযোগিতাও প্রয়োজন৷ তবে বাস্তবায়ন করতে হবে উদ্যোগী মানুষদেরই৷

সংঘাত যে নেই তা নয়

বনের বহু প্রজন্মের আবাসনটিতে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত যে নেই, তা নয়৷ যেখানে অনেকে এক সঙ্গে বসবাস করেন, সেখানে এটা থাকবেই৷ ‘‘আমাদের এখানেও মতবিরোধ আছে৷ তবে কীভাবে এর সমাধান করা যায়, সেটাই আসল বিষয়'', বলেন হ্যোনশাইড গ্রস৷ এক্ষেত্রে আলোচনা করে সমঝোতায় পৌঁছানোটা বিশেষ জরুরি৷ টিনা আর্নটও স্বীকার করলেন যে, কোনো কোনো দিন ‘আলোচনা' কথাটাই তাঁর আর শুনতে ইচ্ছা করে না৷ তখন তিনি দরজা বন্ধ করে রাখেন৷ টেলিফোন ও কলিং বেলও থাকে বন্ধ৷ কেউ অবশ্য বিরক্ত হয় না তাতে৷

ভাগাভাগি করার অভ্যাস

প্রথম দিকে গাড়িটা তাঁর একার নয়, এটা ভাবতে খারাপ লাগতো টিনা আর্নট-এর৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমার গাড়িটা অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার অভ্যাসটা গড়ে তুলতে কিছুটা সময় লেগেছিল৷ আজ আমার কাছে এটা সঠিক বলেই মনে হয়৷ তাই গাড়ির কোথাও আঁচড় বা গুঁতোর দাগ দেখলে সেটা নিয়ে তেমন মাথা ঘামাই না৷ আসল কথা হলো গাড়িটা চলে কিনা৷''

মাঝে মাঝে ছোটখাট দ্বন্দ্ব ও বিবাদ থাকলেও অন্য কোনোভাবে বসবাস করার কথা চিন্তা করতে পারেন না টিনা আর্নট ও হ্যোনশাইড গ্রস৷ ‘‘একঘেয়েমি নেই আমাদের এখানে৷ নিজেকে বাহুল্য মনে হয় না৷ আর সেটাই তো অর্থবহ করে তোলে জীবনকে৷'' হেসে জানান টিনা আর্নট৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ