1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কিশোরী ধর্ষণের পর কার গুলিতে ৩ আদিবাসীর মৃত্যু?

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আদিবাসী কিশোরী ধর্ষণের বিচার দাবিতে আন্দোলন চলার সময়ই খাগড়াছড়ির গুইমারাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে৷ মানবাধিকার কর্মীদের দাবি- প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা হোক৷

ওই এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ওসির আরো দাবি, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। নতুন কোনো সংঘর্ষ বা সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি।
ওই এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ওসির আরো দাবি, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। নতুন কোনো সংঘর্ষ বা সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি।ছবি: DW

খাগড়াছড়ির গুইমারায় তিন জন নিহত হওয়ার পর থেকে তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধ চলছে। তবে সোমবার দুপুরের পর মহাসড়কে অবরোধ শিথিল করা হয়। জুম্ম ছাত্র-জনতা এই অবরোধের ডাক দিয়েছে। তাদের মুখপাত্র কৃপায়ন ত্রিপুরা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, অবরোধ অব্যাহত থাকবে। তারা গুলিতে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি আছে।

আদিবাসী কিশোরী ধর্ষণের বিচার দাবিতে আন্দোলন চলার সময়ই খাগড়াছড়ির গুইমারাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে৷ ‘কর্তৃপক্ষ' এ বিষয়ে বিবৃতি, বক্তব্য দিয়েছে৷ তবে মানবাধিকার কর্মীদের দাবি- প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা হোক৷ছবি: Belal Shah/DW

আন্তঃ বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর পক্ষ থেকে তিনজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে রবিবার। বেশ কিছু এলাকাবাসীর আহত হওয়ার কথাও জানায় তারা, তবে আহতের প্রকৃত সংখ্যা জানায়নি।

গুইমারা উপজেলার রামসু বাজারে নিহত হওয়া তিন জনের পরিচয় জানানো হয়েছে। তারা হলেন, গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের দেবলছড়ি হেডম্যান পাড়ার আথুই মারমা (২১), হাফছড়ি ইউনিয়নের সাং চেং গুলিপাড়ার আথ্রাউ মারমা (২২) ও রামসু বাজার বটতলার তৈইচিং মারমা (২০)।

গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, "তাদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবাবের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। মামলা এখনো হয়নি।”

ওই এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ওসির আরো দাবি, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।নতুন কোনো সংঘর্ষ বা সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি।

গুইমারা উপজেলার রামসু বাজারে নিহত হওয়া তিন জনের পরিচয় জানানো হয়েছে। তারা হলেন, গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের দেবলছড়ি হেডম্যান পাড়ার আথুই মারমা (২১), হাফছড়ি ইউনিয়নের সাং চেং গুলিপাড়ার আথ্রাউ মারমা (২২) ও রামসু বাজার বটতলার তৈইচিং মারমা (২০)।ছবি: DW

গত মঙ্গলবার রাতে খাগড়াছড়ি সদরে এক আদিবাসী কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। রাত ৯টার দিকে প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে ওই কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে তার বাবা ডয়চে ভেলেকে জানান। রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার অবরোধ কর্মসূটি পালন করে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা'। তাদের অভিযোগ, তিনজনকে দায়ী করা হলেও পুলিশ মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অবরোধের মধ্যে রাতে খাগড়াছড়ির মহাজন পাড়ায় হামলা হলে তারা তিন জেলায় অবরোধ ডাকে। জেলা প্রশাসন থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। রবিবার গুইমারাতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

যা জানা গেল

জুম্ম ছাত্র জনতার মুখপাত্র কৃপায়ন ত্রিপুরা ডয়চে ভেলেকে অভিযোগ করেন," ধর্ষণের বিচার দাবিতে তো আমাদের অবরোধ চলামান ছিল। এর মধ্যে খাঘড়াছড়ির মহাজন পাড়াসহ আরো কয়েকটি পাড়ায় হামলা হয়। মাইকে গুজব ছড়ানো হয় যে, মসজিদে হামলা হয়েছে। এইভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা হয়। তার মধ্যেই রবিবার গুইমারাতে অতর্কিতে হামলা চালানো হয়।

আমার ছেলে কোনো দলের সঙ্গে জড়িত ছিলোনা: হ্লাচাই মারমা

This browser does not support the audio element.

 সেনাবাহিনীর হামলায় যারা নিহত ও আহত হয়েছেন তারা নিরীহ। বাবার কোলো থাকা একটি মেয়েও আহত হয়েছেন। ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের ওপর এই হামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।”

তিনি অভিযোগ করেন, " হামলায় তিন জন নিহত এবং অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।আহতদের খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ জন নিখোঁজ আছেন। হামলার সময় ১৫টি বাড়ি, ৬০টি দোকানপাটে হামলা ও আগুন দেয়া হয়েছে। সাতটি দোকানে লুটপাট করা হয়েছে।”

তিনি জানান, তাদের অবরোধ পূজার কারণে সীমিতভাবে চলবে। তিন পার্বত্য জেলায় অবেরোধ অব্যাহত থাকলে মহাসড়ক এর বাইরে থাকবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের খাগড়াছড়ি জেলার সভাপতি ওয়াইবাই মারমা বলেন, " অবরোধ এবং ১৪৪ ধারা একই সঙ্গে চলছিল। এর মধ্যে সকাল ১১টার দিকে গুইমারায় ধর্ষণের বিচার দাবিতে মিছিল বের করা হলে অবরোধকারীদের ওপর হামলা হয়। হামলায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সেটলাররাও ছিল। ৬০টির মতো দোকানে হামলা ও আগুন দেয়া হয়।লুটপাট করা হয়। ১৩-১৪টি মোটর সাইকেলে আগুন দেয়া হয়। আশপাশের আরো বাড়ি-ঘরে হামলা ও আগুন দেয়া হয়। আমাদের কাছে সব ভিডিও ফুটেজ আছে।”

ওই এলাকার হেডম্যান পাড়ার সাহ্লাপ্রু মারমা অভিযোগ করেন, " ১১৫-১২০টি বাড়ি, দোকানপাটে হামলা ও আগুন দেয়া হয়েছে। আমরা ৬-৭ জন আহতকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আরো অনেক আহত হয়েছেন। তারা কেউ হাসপাতালে গেছে, আবার কেউ ভয়ে পালিয়ে গেছেন। তারা হয়তো হাসপাতালে যাননি।”

"পুরো এলাকায় এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই বাড়ি-ঘর ছেড়ে গেছেন। কারণ, এখন মিছিলের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ধরে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হবে বলে শোনা যাচ্ছে। আমরা এখনো পাড়ার মধ্যে অবস্থান করছি,” দাবি করেন তিনি।

 তিনি জানান, " সকাল ১১টা থেকে রামসু বাজারে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে বিকাল চারটা পর্যন্ত। সংঘর্ষের সময় অনেক নিরীহ মানুষ হামলার শিকার হন। সংঘর্ষ চলাকালেই বাজারের দোকানপাট ও আশপাশের বাড়ি-ঘরে হামলা ও আগুন দেয়া হয়।”

তবে ওই এলাকার আরেক বাঙালি অধিবাসী উজ্জ্বল হোসেন দাবি করেন," চার-পাঁচটি দোকানে আগুন দেয়া হয়েছ। দুই-একটি বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়া হয়।পাহাড়িরা আহত হয়েছে, সেনাবাহিনীও আহত হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কতজন মারা গেছে তা আমি জানি না।”

সংথর্ষের কারণ জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, "এখানে পাহাড়ি যারা আছে, তারা আমরা যারা বঙালি আছি, তাদের সহ্য করতে পারে না। তারা সব কিছু দখল করে খায়, আমরাও তাদের ভয়ে থাকি। তাদের এইসব কাজে বাধা দেয়ায় সংঘর্ষ হয়েছে।” 

ওই এলাকার হেডম্যান পাড়ার সাহ্লাপ্রু মারমা অভিযোগ করেন, " ১১৫-১২০টি বাড়ি, দোকানপাটে হামলা ও আগুন দেয়া হয়েছে। আমরা ৬-৭ জন আহতকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আরো অনেক আহত হয়েছেন। তারা কেউ হাসপাতালে গেছে, আবার কেউ ভয়ে পালিয়ে গেছেন। তারা হয়তো হাসপাতালে যাননি।”ছবি: DW

সন্তান হারানো বাবার কথা

হেডম্যান পাড়ার নিহত আথুই মারমার- বাবার নাম হ্লাচাই মারমা। সোমবার বিকাল ৫টার দিকে যখন তার সঙ্গে ডয়চে ভেলের টেলিফোনে কথা হয়, তার কিছুক্ষণ আগে তিনি খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে তার ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন। তার দুই ছেলের মধ্যে আথুই মারমা ছিল ছোট। দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা। আগামী ৯ অক্টোবর সন্তান প্রসবের সাম্ভাব্য তারিখ বলে জানান আথুইর বাবা। তিনি জানান, তার পরিবারের কয়েকটি জিপ গাড়ি আছে। তারা সেই গাড়ি ভাড়ায় চালিয়ে সংসার চালান। আথুই নিজেও গাড়ি চালাতো। হ্লাচাই মারমা বলেন, " আমার ছেলে কোনো দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না।সকাল ১১টার দিকেও সে বাড়িতে ছিল। এরপর গাড়ির হেলপার গাড়িতে তেল নাই বলে ফোন করলে দুপুর একটার কিছু আগে সে বাজারে যায়। প্রেট্রোল পাম্পের কাছে গাড়ির তেল নিতে গিয়ে আমার ছেলে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়।”

"এরপর আমি আমার ছেলের কোনো খোঁজ পাইনি। আমাকে কয়েকজন জনিয়েছে, তাকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার ফোনও বন্ধ পাই। অনেক জায়গায় ফোন করেও তার কোনো খোঁজ না পেয়ে রাত ৮টার দিকে আবারো আমার ছেলের ফোনে ফোন দিলে রিং হয় এবং গুইমারা থানার একজন অফিসার ধরেন। তিনি জানান, ফোনটি তারা রাস্তায় পেয়েছেন, প্রমাণ দিয়ে নিয়ে যেতে বলেন। তারা আমার ছেলের কোনো খোঁজ দিতে পারেননি । কিন্তু তখনই বুঝতে পারি আমার ছেলে আর নেই।”

"সোমবার দুপুর ১২টার দিকে আমি খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে যাই। সেখানে পরে মর্গে আমার ছেলের লাশ শনাক্ত করি। আমার ছেলের মাথা, মুখ ঝলসে গেছে। মুখণ্ডলেরও একই অবস্থা। পায়ে গুলির দাগ। আমি তার পোশাক দেখে শনাক্ত করি,” বলেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন," লাশ কখন দেবে জানি না। মনে হয় আজ (সোমবার) দিতে পারবে না। সময় লাগবে। আমি কোনো মামলা করিনি।”

গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানান, "ময়না তদন্ত শেষ হলে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর হবে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। একাধিক মামলা হবে।”

"তিনজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত, তবে কত জন আহত হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। আর কতগুলো দোকানপাট ও ঘর-বাড়িতে হামলা হয়েছে, আগুন দেয়া হয়েছে তার হিসাব আমরা এখনো করিনি,” বলেন তিনি।

একই ধরনের কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইরিন আক্তার। তার কথা, "তিনজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে আহত কতজন তা জানি না। আমি ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। কিছু দোকানপাট ও বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কতটি -সেই হিসাব এখনো করা হয়নি। আর কোনো ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইএসপিআর-এর বক্তব্য

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, "একটি মহল খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। ভারত বা ফ্যাসিস্টদের ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটছে।” সোমবার রাজধানীর পুরাতন রমনা থানা চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরে বলেন, "কিছু সন্ত্রাসী পাহাড়ের ওপর থেকে গুলি চালাচ্ছে। এসব অস্ত্র প্রায়ই দেশের বাইরে থেকে আসে।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, "একটি মহল খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। ভারত বা ফ্যাসিস্টদের ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটছে।”ছবি: DW

আর আইএসপিআর রবিবার ঘটনার পর রাতে এক  বিৃবতিতে জানায়, "ইউপিডিএফ ও এর অঙ্গসংগঠন সমূহ ২৮ সেপ্টেম্বর  সকাল থেকে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাধারণ জনগণকে উসকে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে গুইমারা-খাগড়াছড়ি রাস্তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। সকাল সাড়ে ১টার দিকে ইউপিডিএফ কর্মীএবং সন্ত্রাসীরা এলাকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াতে লিপ্ত হয়। এই পর্যায়ে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, ইট-পাটকেল, গুলতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালায়। এতে সেনাবাহিনীর ৩ জন অফিসারসহ ১০ জন সদস্য আহত হয়।

সাড়ে ১১টার দিকে দিকে রামসু বাজারের পশ্চিম দিকে অবস্থিত উঁচু পাহাড় থেকে ইউপিডিএফ (মূল) সশস্ত্র দলের সদস্যরা চার-পাঁচ বার অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত পাহাড়ি বাঙালি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে আনুমানিক ১০০-১৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলে সংঘর্ষে লিপ্ত এলাকাবাসীদের মধ্যে অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়। বিবৃতিতে তিনজন নিহত হওয়ার কথা বলা হয়।

সরকারের দ্রত প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা উচিত: নূর খান

This browser does not support the audio element.

প্রকৃত ঘটনা প্রকাশের দাবি

মানবাধিকার কর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, " পাহাড়ে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে সেই তথ্য আমরা পাচ্ছি না। এইরকম সময়ে তথ্য আটকে দেয়া হয়। সরকারের দ্রুত প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা উচিত। ওখানে তিনজনই নিহত হয়েছেন, না সংখ্যা আরো বেশি তা নিয়ে সংশয় আছে। কী ঘটেছে, কেন ঘটেছে, কেন সেখানে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, ধর্ষণের আসামীদের কেন গ্রেপ্তার করা হলো না- এই সব কিছু প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।”

তার কথা, "আর এজন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা দরকার। সরকার এখনো তা করেনি। পাহাড়ে যা ঘটেছে, কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

"আমরা আর অতীতের মতো বয়ান শুনতে চাই না। উসকানির কথা বললেই হবে না। প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করতে হবে। আর উসকানির পরিবেশ তৈরি হলে তো মানুষ উসকানি দেবেই,” বলেন তিনি।

আর মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এক বিবৃতিতে খাগড়াছড়ির ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশথন গঠনের দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপুরণ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ