ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ সহায়তা ব্যবস্থা নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, ‘‘এটি মানুষ মারছে''৷ জাতিসংঘকে বাইরে রেখে চালানো এই কার্যক্রমে ত্রাণ নিতে গিয়ে কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷
গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ সংগ্রহ করছেন ফিলিস্তিনিরা৷ ছবি: Hatem Khaled/REUTERS
গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) পরিচালিত নতুন ব্যবস্থায় খাবারের আশায় প্রায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ লাইন ধরছেন৷ মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত জিএইচএফ-এর কার্যক্রম চালু হয়৷ এর পর থেকেই কার্যক্রমটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে৷ জাতিসংঘ অভিযোগ করেছে, খাবারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য ইসরায়েলের একটি পন্থা এটি৷
জিএইচএফ-এর বিতরণকৃত খাবার নিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত চার শতাধিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন৷ ত্রাণ যাতে হামাসের দখলে না যায় এমন অজুহাত দেখিয়ে ইসরায়েলের এই কার্যক্রমে জাতিসংঘ বা অন্য এনজিওগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷
যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ আরো কিছু দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত হামাস তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে৷ বেশিরভাগ ত্রাণ তারা সরিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ জাতিসংঘও উড়িয়ে দিয়েছে৷
এদিকে হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংসের আগ পর্যন্ত গাজা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং তাদেরকে পুরোপুরি ধ্বংসের আগ পর্যন্ত হামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে ইসরায়েল৷ সেই সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর হামাসের হাতে জিম্মি বাকি ৫০ জনকে উদ্ধারের লক্ষ্যের কথাও বলছে তারা৷
খাদ্যের সন্ধান কখনো মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না: গুতেরেস
গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেছেন, গাজায় জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে ‘শ্বাসরোধ করে হত্যা' করা হয়েছে৷ এমনকি ত্রাণকর্মীরাও অনাহারে রয়েছেন৷ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ত্রাণ সরবরাহ সহজতর করতে ইসরায়েল বাধ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷
গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘মানুষ নিজের এবং তাদের পরিবারের খাবার জোগাড় করতে গিয়ে হত্যার শিকার হচ্ছেন৷ খাবারের সন্ধান কখনোই মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘গাজায় অস্ত্রবিরতির জন্য রাজনৈতিক সাহস খুঁজে বের করার সময় এসেছে৷''
আগের বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যায় ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে মাঝে মধ্যে সতর্কতা হিসেবে তারা মানুষের মাথার উপর দিয়ে গুলে ছুঁড়েছে, যাতে তারা সরে যায়৷ বিভিন্ন অভিযোগের পর্যালোচনার কথা বললেও এখন পর্যন্ত তারা এ নিয়ে কিছু প্রকাশ করেনি৷
ইসরায়েলের গণমাধ্যম হারেৎজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ বিতরণস্থলে ইচ্ছাকৃত গুলি ছোঁড়ার অভিযোগে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তে ইসরায়েলের সামরিক অ্যাডভোকেট জেনারেল নির্দেশ দিয়েছেন৷
যেভাবে ‘বন্ধু’ থেকে পরস্পরের ‘শত্রু’ হলো ইসরায়েল ও ইরান
মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইসরায়েল ও ইরানের সাম্প্রতিক যুদ্ধ বৈরি সম্পর্কেরই পরিষ্কার বহিঃপ্রকাশ৷ কিন্তু দেশ দুটোর সম্পর্ক কি সবসময় এমন ছিল? জেনে নিন ছবিঘরে...
ছবি: MENAHEM KAHANA/AFP/Getty Images
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৪৮ সালের ১৪ মে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ইসরায়েল৷ নতুন রাষ্ট্রটির প্রতিবেশী হয়ে ওঠে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড, মিশর, জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবানন৷ বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নতুন রাষ্ট্র ইসরায়েলের বিষয়ে আরব বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে ছিল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব৷ ৭ দশক পরেও অনেক আরব রাষ্ট্রের মধ্যে ইসরায়েলের বিষয়ে সেই ‘সংকট’ রয়ে গেছে৷
ছবি: Ahmad Gharabli/AFP
তখনকার ইরান
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময়ে ইরানের মসনদে ছিলেন দেশটির শাহ বংশের সবশেষ শাসক মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি৷ বাবা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময়, ১৯৪১ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে ক্ষমতায় আসেন পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত রেজা শাহ৷ সেই থেকে ইরানের ইসলামি বিপ্লব পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি৷
ছবি: PA Wire/picture alliance
ইসরায়েলকে স্বীকৃতি
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন গঠিত সার্বভৌম রাষ্ট্র ইসলায়েলের তখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রয়োজন৷ সেই সময়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় ইরান৷ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় ইরানের শাহ সরকার৷
ছবি: Juergen Schwenkenbecher/picture-alliance
বন্ধুত্বের শুরু
স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে পার্সিয়ান সভ্যতার দেশ ইরান আর নতুন জন্ম নেওয়া ইসরায়েলের হাতে হাত রেখে পথচলা শুরু হয়৷ এমন সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে দুই রাষ্ট্রই নিজ নিজ সুবিধা আদায় করে নিতে চেয়েছে৷ ইসরায়েল চেয়েছে, এই অঞ্চলে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে আর ইরান চেয়েছে এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করতে৷
ছবি: Bildagentur-online/Schöning/picture alliance
পারস্পরিক সহযোগিতা
নতুন জন্ম নেওয়া ইসরায়েলের তখন জ্বালানি নিরাপত্তাও প্রয়োজন৷ তেলসমৃদ্ধ ইরান নতুন দেশটিকে জ্বালানি সরবরাহে এগিয়ে আসে৷ বিনিময়ে ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী গঠন এবং এর আধুনিকায়নে সহযোগিতা করে ইসরায়েল৷ বলা হয়ে থাকে, রেজা শাহ পাহলভির আমলে ইরানের আর্মড ফোর্সেস তৈরিতে সহযোগিতা করে ইসরায়েল৷ তাছাড়া দুদেশের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্যও বাড়তে থাকে৷
ছবি: Fars/Dehdari
ইরানে ইহুদি সম্প্রদায়
পরিসংখ্যান বলছে, এক সময় ইরানে ইসরায়েলের পর সবচেয়ে বেশি ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করতেন৷ ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর এই সংখ্যা কমতে থাকে৷ তবে এখনো দেশটিতে প্রায় ২০ হাজার ইহুদি বাস করেন৷
ছবি: dapd
ইরানের ইসলামি বিপ্লব এবং সম্পর্কে ভিন্ন মোড়
১৯৭৯ সালে ইরানের বিল্পবের মাধ্যমে মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি ক্ষমতাচ্যুত হলে ইরানের দায়িত্বে আসেন আয়াতুল্লাহ রুহোল্লাহ খোমেনি৷ এরপর থেকেই ইসরায়েলের সাথে ইরানের সম্পর্ক ভিন্ন দিকে মোড় নিতে থাকে৷ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে এই অঞ্চলের জন্য হুমকি মনে করে ইরানের নতুন নেতৃত্ব৷ এমনকি ইসরায়েলকে মুছে ফেলার হুমকিও দেয় তারা৷ সেইসাথে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের বিষয়ে ইসরায়েলের অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করে ইরান৷
ছবি: FY/AP Photo/picture alliance
ইরানের প্রক্সি গ্রুপ
এরমধ্যে নিজেদের ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান শক্তিশালী করতে থাকে ইরানের নতুন নেতৃ্ত্ব৷ অভিযোগ আছে, ইসরায়েলের প্রভাব ঠেকাতে আশির দশকের পর প্রতিবেশী দেশগুলোতে বেশকিছু জঙ্গিগোষ্ঠি তৈরি করে ইরান৷ এরমধ্যে রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের হামাস এবং ইয়েমেনে হুতি গোষ্ঠী৷ এই গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করে ইরান৷ এমন অভিযোগের পর ইসরাযেল-ইরান সম্পর্ক চরম অবনতির দিকে যায়৷
ছবি: AP Photo/picture alliance
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
১৯৬৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে সাক্ষর করলেও ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে গোপনে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এই পরমাণু কর্মসূচি ইসরায়েলের অস্তিত্ব সংকটের মুখে ফেলতে পারে- এই আশঙ্কা থেকে এর বিরোধিতা করে আসছে ইসরায়েল৷ ১৩ জুন ইরানে হামলা চালানো তারই চূড়ান্ত পরিণতি৷ ইসরায়েলের দাবি, পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে মাত্র কয়েক সপ্তাহ দূরে অবস্থান করছে ইরান৷
ছবি: UGC/AFP
ইরানের আঞ্চলিক সহযোগীদের ওপর হামলা
দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে করে আসছে ইসরায়েল৷ প্রতিবেশী দেশগুলোতে থাকা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে মদদ দেওয়ার অভিযোগেও ইরানের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক ইসরায়েলর৷ এর প্রতিক্রিয়ায় ২০১৯ সালে সিরিয়া, লেবানন এবং ইরাকে হামলা করে ইসরায়েল৷ ইসরায়েলের দাবি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর কাছে ইরানের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে এই হামলা চালানো হয়েছে৷
ছবি: Ayal Margolinc/ JINIPIX/AP/picture alliance
সেনাপ্রধান, বিজ্ঞানী হত্যা
২০১৯ সালে ইরাক সফরকালে গুপ্ত হামলায় নিহত হন ইরানের সেইসময়ের সেনাপ্রধান কাসেম সোলাইমানি৷ এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলেকে দায়ী করে ইরান৷ ২০২২ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ ছাড়াও ইরানের এক প্রকৌশলী এবং এক ভূতত্ত্ববিদ হত্যার পেছনেও ইসরায়েল দায়ী বলে ইরানের অভিযোগ৷ এসকল হত্যাকাণ্ডের কোনো কোনোটিতে নিজেদের ভূমিকার কথা পরবর্তীতে স্বীকার করে ইসরায়েল৷
ছবি: Vahid Salemi/AP Photo/picture alliance
সাগরে ছায়াযুদ্ধ
সাগরেও পরোক্ষভাবে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইরান এবং ইসরায়েল৷ ২০২১ সালে ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েল উপকূল থেকে ৫০ মাইল দূরে থাকা এক ইরানি জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটে৷ এ ঘটনার পেছনে ইসরায়েলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনে ইরান৷ পরবর্তীতে ওমান উপকূল থেকে রওয়ানা দিয়ে আরব সাগরে আসা এক জাহাজে বিস্ফোরণের জন্য ইরানকে দায়ী করে ইসরায়েল৷ ২০১৯ সাল থেকেই লোহিত সাগর এবং ভূমধ্যসাগরে ইরানের তেল ও অস্ত্রবাহী জাহাজে হামলা করে আসছিল ইসরায়েল৷
ছবি: Katsumi Yamamoto/AP Photo/picture alliance
৭ অক্টোবর, ২০২৪ হামাসের হামলা
২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার পেছনেও ইরানের উসকানি রয়েছে বলে অভিযোগ করে ইসরায়েল৷ এই অভিযোগ অবশ্য বরাবরাই অস্বীকার করে আসছে ইরান৷ হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১২শ মানুষ নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল৷ ইসরায়েলে এই অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৫ হাজারের ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন৷
ছবি: MENAHEM KAHANA/AFP
13 ছবি1 | 13
জিএইচএফ-এর দাবি
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জিএইচএফ-এর একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, তাদের ত্রাণ বিতরণস্থল বা তার কাছাকাছি কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি৷ তিনি বলেন, ‘‘ইউএন অব্যাহতভাবে আমাদের কার্যক্রমের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে যাচ্ছে এটি দুর্ভাগ্যজনক৷ ...মোদ্দা কথা হলো, আমরা নিরাপদে ত্রাণ সরবরাহ করছি৷ ঝগড়া-বিবাদ এবং কাদা ছোঁড়ার পরিবর্তে ইউএনসহ অন্যান্য মানবিক সংস্থাগুলো যাতে আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়ে এবং গাজার মানুষকে খাবার দেয় তার আহ্বান জানাই আমরা৷''
গাজায় যুদ্ধবিরতি দ্বারপ্রান্তে: ট্রাম্প
গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘এটি দ্বারপ্রান্তে৷''
ওভাল কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা মনে করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আমরা একটি অস্ত্রবিরতি পেতে যাচ্ছি৷'' তিনি যোগ করেন, ‘‘আমরা গাজা নিয়ে কাজ করছি এবং এর দেখভালের চেষ্টা করছি৷''
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী কাতারও জানিয়েছে আলোচনা চলমান রয়েছে৷